অত্যধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। আধ্যাত্মিক ... বিশদ
মানুষ বিনা বাধায় শান্তিপূর্ণভাবে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন—এইটুকুই তো ভোটারদের চাহিদা। ভোট গণতন্ত্রেরই উৎসব। ভারতের গণতন্ত্রের সুরক্ষায় স্বশাসিত সাংবিধানিক সংস্থা নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানেই লোকসভা ও বিধানসভার ভোট অনুষ্ঠিত হয়। পশ্চিমবঙ্গে ২০২১-এর বিধানসভার প্রথম দফার ভোটে বিক্ষিপ্ত অশান্তির পর বৃহস্পতিবার ছিল দ্বিতীয় দফার ভোট। নির্বাচন কমিশনের যাবতীয় ব্যবস্থাপনা থাকা সত্ত্বেও দ্বিতীয় দফার ভোটও কিন্তু নির্বিঘ্ন হল না। বিক্ষিপ্ত গণ্ডগোল হল। উত্তেজনা পারদ চড়ল, যা বাঞ্ছনীয় নয়। এই অনভিপ্রেত অশান্তি এড়ানো সম্ভব হলে সবচেয়ে খুশি হতেন ভোটাররা। অশান্তি ঠেকানোর ব্যর্থতার অভিযোগও উঠত না। বাকি রয়েছে পরবর্তী ছয় দফার ভোট। তাই আগামী দফার ভোটগুলিতে মানুষ যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের অনেকটাই বেড়ে গেল। দ্বিতীয় দফার ভোটে সরকার পক্ষ এবং বিরোধীদের তরফে জমা করা অভিযোগগুলির সত্যতা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনমতো ব্যবস্থা নেওয়ার গুরুদায়িত্বটিও বর্তেছে তাঁদেরই উপর। কারণ কমিশনই পারে ভোটারদের যাবতীয় দুশ্চিন্তা সংশয় দূর করে নির্ভয়ে ভোটদানের নিশ্চয়তা দিতে। ভোটারদের নিরাপত্তার দিকটি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে রাজ্য পুলিস এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। সেখানে পক্ষপাতিত্ব ও নিরপেক্ষতার অভিযোগ উঠলে গণতন্ত্রের পক্ষে তা মঙ্গলজনক নয়। অথচ, সেই প্রশ্নটিই উঠেছে দ্বিতীয় দফার ভোটে। কোথাও কোথাও বাহিনীর বাড়াবাড়ি, পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ বা নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে যেভাবে অভিযোগ উঠল তা আশঙ্কারই কথা। দুর্ভাগ্যজনকও। এই অভিযোগে বিজেপি ছাড়া সরব হয়েছে তৃণমূল, সংযুক্ত মোর্চাও।
বাংলার মানুষ শান্তিপ্রিয়। কোনওরকম অশান্তি চান না। ভোটদান নিয়ে তাঁদের প্রবল উৎসাহ উদ্দীপনার অভাব নেই। বাংলার গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নির্ণায়ক শক্তি তাঁরাই। গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের ব্যবস্থাটিকে তাঁরা উৎসবের মেজাজে দেখতে চান। তাই আগামী দফার ভোটগুলিতে যাতে ‘গণতন্ত্র’ নিয়ে কারও কপালে চিন্তার ভাঁজ না পড়ে তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। দ্বিতীয় দফার ভোটে যে আশঙ্কার কথা প্রকাশ করেছেন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তেমন কোনও আশঙ্কা আর যেন না থাকে কোনও ভোটারের মনে। এই কঠিন কাজটি যোগ্যতার সঙ্গে কমিশন সামলাতে পারলে তাঁদের সাধুবাদ জানাবেন বঙ্গবাসী। ভরসা বাড়বে কমিশনের প্রতি। কিন্তু নজিরবিহীন ব্যবস্থা সত্ত্বেও দ্বিতীয় দফার ভোটে যে বিক্ষিপ্ত অশান্তি দেখল বঙ্গবাসী তাতে আগামীতে একটা আশঙ্কা রয়েই যাচ্ছে, যা দূর করতে হবে কমিশনকে।