বিদ্যায় অস্থির মানসিকতা থাকবে। কর্মপ্রার্থীদের কোনও শুভ যোগাযোগ হতে পারে। রাগ বা জেদের বশে কারও ... বিশদ
ভারতবাসীর কষ্ট হয় পাকিস্তানের নিরপরাধ নাগরিকদের জন্য। কী স্বপ্ন দেখিয়ে তাঁদের একটি পৃথক দেশ দিয়েছিলেন জিন্না সাহেব আর বাস্তবে কী পেলেন তাঁরা! ভারতের পশ্চিম সীমান্তের ওপারে একটি ভূখণ্ড ‘ইসলামিক রিপাবলিক অফ পাকিস্তান’ নামে স্বাধীনসত্তা ভোগ করলেও সে-দেশের মানুষ সাত দশকেও সাধারণতন্ত্র এবং গণতন্ত্রের স্বাদ পাননি। সাধারণতন্ত্র, গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতা নামক পবিত্র শব্দগুলির অর্থ শিখতে তাঁদের উঁকি দিতে হয় ভারতভূমিতে। দীর্ঘ সাত দশকে পাকিস্তানের মানুষের প্রাপ্তির ভাঁড়ার উপছে পড়েছে কেবল উগ্র মৌলবাদ আর তীব্র দারিদ্র্যে, সীমাহীন দুর্নীতি আর অহরহ অপমানে। পাকিস্তানের জন্মান্ধ মুরুব্বিরা দেশটা বিক্রি করে দিয়েছেন কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই আর সেনাবাহিনীকে। জিন্না সাহেবের ‘উপহার’ তিলে তিলে মোচনের অসাধ্য এক ‘অভিশাপ’ হয়ে উঠবে তা হয়তো অনেকে দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি। ব্যাপারটা, এখানেই থেমে থাকলে পাকিস্তান প্রশাসন হয়তো উদ্বিগ্ন হতো না। তাদের উদ্বেগে ফেলেছে একাধিক আন্তর্জাতিক আর্থিক সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। যে দানখয়রাতি না-পেলে পাকিস্তানের পক্ষে একটি দিনও শ্বাস নেওয়া দুঃসাধ্য হতে পারে। পাকিস্তান একাত্তরের যুদ্ধে এবং পরবর্তীকালে দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্ধ সমর্থন লাভ করে গিয়েছে। সেই যুক্তরাষ্ট্র এখন ভারতের ঘনিষ্ঠতা বেশি লাভজনক মনে করছে। চীনের মতো দেশও বুঝে গিয়েছে পাকিস্তানের দেওয়ার আর কিছু নেই। তার চেয়ে অনেক বেশি লাভজনক হল ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন, পাক-ঘনিষ্ঠতা বজায় রেখে যা অসম্ভব। সুতরাং চীনও কৌশলে পাকিস্তানের থেকে দূরত্ব বাড়াচ্ছে। অতএব নিরুপায় ইমরানের প্রশাসন। তাঁর পূর্বসূরিদের সীমাহীন পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার দায় কাঁধে নিয়েছেন ইমরান। তিনি পাকিস্তানের এ-যাবৎকালের অপকর্মগুলি কবুল করে নিতে কুণ্ঠিত হচ্ছেন না। নামার আগে পথটাও পরিষ্কার করেছেন। ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশে পা রাখার আগে তাঁর প্রশাসন সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করারও ‘প্রয়াস’ নিয়েছে। তৃতীয়বারের জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে মুম্বই বিস্ফোরণের মাস্টারমাইন্ড হাফিজ সইদকে। শুধু তাই নয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্যও উশখুশ করছেন ইমরান, নানাভাবে বারবার বার্তাও দিচ্ছেন।
ইমরান খান এবং পাকিস্তান রাষ্ট্রের নতুন আচরণের জন্য নরেন্দ্র মোদি প্রশাসনেরও ধন্যবাদ প্রাপ্য। কারণ ভারতের পক্ষে এ এক বিরাট কূটনৈতিক জয়লাভ এবং অভূতপূর্ব। এর পিছনে মোদি সরকারের লাগাতার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তবে, ভারত নিশ্চয় বারবার বেলতলায় যাওয়ার ন্যাড়াটি আর হবে না। ভারতের অবস্থান খুব স্পষ্ট। শুধু মুখের কথায় আর পাকিস্তানকে বিশ্বাস নয়। যাদের জবান বিশ্বাসযোগ্য, পাকিস্তান সেই গোত্রের রাষ্ট্র কোনোদিনই নয়। ইমরান খান মুখে যে-কথা কবুল করেছেন মুরুব্বিদের কাছে, এবার সেইমতো পদক্ষেপও করতে হবে তাঁকে। কাশ্মীরের অশান্তি থামানোর যাবতীয় উদ্যোগ পাকিস্তানকে নিতে হবে। ভারতে নাশকতার সঙ্গে যুক্ত যেসব ক্রিমিনাল পাকিস্তানে আছে তাদের অবিলম্বে ভারতের হাতে তুলে দিতেই হবে—তাদের নাম দাউদ ইব্রাহিম বা হাফিজ সইদ হলেও।