বিদ্যায় অস্থির মানসিকতা থাকবে। কর্মপ্রার্থীদের কোনও শুভ যোগাযোগ হতে পারে। রাগ বা জেদের বশে কারও ... বিশদ
তিন তালাকের ঘোর বিরোধী হলেও তা উচ্চারণ করে দাম্পত্য সম্পর্ক বিচ্ছেদের চেষ্টার দায়ে স্বামীকে তিন বছরের জন্য জেলে পাঠানোর যে আইন চাইছে সরকার, তা তারা সমর্থন করে না বলেই জানিয়ে দিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। প্রতিবাদে ‘ওয়াক আউট’ও করেন তৃণমূল এমপিরা। প্রায় একই আপত্তি কংগ্রেস, ডিএমকে, এনসিপির মতো বিরোধী দলগুলিরও। এনডিএ সরকারের শরিক নীতীশকুমারের দল জেডিইউ‘ও বিলের বিরোধিতা করেছে। ভোটাভুটির পর ওয়াক আউট করেছে কংগ্রেস।
তাছাড়া সুপ্রিম কোর্টের ফলে যে বিষয়টির (তালাক-এ-বিদ্দাৎ) কোনও অস্তিত্বই নেই, তা নিয়ে কেন সরকার বিল আনছে, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। বিলটিকে বিজেপির রাজনৈতিক এজেন্ডা বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। যদিও কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের বক্তব্য, ২০১৭ সালের পর থেকে এখনও পর্যন্ত ৫৭৪ টি তিন তালাকের ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেওয়ার পরেও ঘটেছে ৩৪৫ টি তালাক-এ-বিদ্দাতের ঘটনা। তাই মুসলিম নারীদের পাশে দাঁড়াতেই সরকার এই বিল এনেছে বলে যুক্তি দেন তিনি।
উল্লেখ্য, তাৎক্ষণিক তিন তালাক (তালাক-এ-বিদ্দাৎ) বেআইনি ও অসংবিধানিক বলে সুপ্রিম কোর্ট রায় শোনানোর পরেই ২০১৭ সালেই বিল এনেছিল মোদি সরকার। ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর লোকসভায় বিলটি পাশও হয়। কিন্তু আটকে যায় রাজ্যসভায়। সেখানে সংখ্যালঘু সরকার বিলটি পাশ করাতে পারেনি। অথচ সরকার বিলটি আনতে বদ্ধপরিকর। তাই আনা হয় অর্ডিন্যান্স। সেটি সরিয়ে বিলটি নতুন করে ফের ২০১৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর প্রায় একই বিল পাশ হয়। ফের আটকে যায় রাজ্যসভায়। ফের জারি হয় অর্ডিন্যান্স। এবং দু’বার লোকসভায় বিলটি পাশ এবং দু’বার অর্ডিন্যান্স শেষে ফের আজ তৃতীয়বারের মতো সংসদের নিম্নকক্ষে বিলটি ভোটাভুটিতে পাশ হল।
এদিকে, সরকার যেভাবে দিনের পর দিন বিল পেশ করছে, সংখ্যার জেরে লোকসভায় পাশও করিয়ে নিচ্ছে তা নিয়ে ব্যাপক ক্ষুব্ধ বিরোধীরা। স্রেফ বিল আনাই নয়, দিনের দিন তড়িঘড়ি বিল আনায় তা ঠিক মতো পড়ারই সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না বলেও এদিন সোচ্চার হয়েছেন তৃণমূলের সৌগত রায় এবং কংগ্রেসের অধীররঞ্জন চৌধুরি। তবে বিরোধীরা যাই করুক, সরকারের কাছে আরও বেশ কিছু বিল পাশ করানোর আছে। তাই আগামীকাল ২৬ জুলাই সংসদের অধিবেশন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তার মেয়াদ আগামী ৭ আগস্ট পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। গত ১৭ জুন থেকে শুরু হয়েছে এই অধিবেশন।
তবে এভাবে সরকার একেবারে শেষ মুহূর্তে একপ্রকার নজিরবিহীনভাবে বিরোধীদের সহমতে না নিয়েই সরকার অধিবেশন বাড়ানোর পরিকল্পনা করায় তা বয়কট করতে চাইছে কংগ্রেস। তবে কংগ্রেসের এই স্ট্র্যাটেজিতে রাজি নয় তৃণমূল। কংগ্রেসের রাজ্যসভার নেতা গুলাম নবি আজাদের বক্তব্য, সরকার সংসদকে কেন্দ্রীয় সরকারের অফিসে পরিণত করার চেষ্টা করছে। মোদি সরকার ভাবছে ওরা যা সিদ্ধান্ত নেবে, সংসদ তাতেই সিলমোহর লাগিয়ে দেবে। এটা হতে পারে না। বিষয়টি নিয়ে গুলাম নবি আজাদ তৃণমূলের সংসদীয় দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু আজাদকে হতাশ করে সুদীপবাবু জানিয়ে দেন, সভার দিন বাড়ানো নিয়ে আমাদের তীব্র আপত্তি আছে ঠিকই, তবে বয়কটে সায় নেই। কারণ, বিজেপি সরকার তাহলে ফাঁকা মাঠে গোল দিয়ে ইচ্ছেমতো বিল পাশ করিয়ে নেবে। আমরা তা হবে দেব না।