বিদ্যায় অস্থির মানসিকতা থাকবে। কর্মপ্রার্থীদের কোনও শুভ যোগাযোগ হতে পারে। রাগ বা জেদের বশে কারও ... বিশদ
অজানাকে জানার আগ্রহ ভারতের চিরদিনের। তাই, মহাকাশ চর্চার গুরুত্ব দিনে দিনে বেড়েছে। এ-ব্যাপারে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পাল্লা দিতে সক্ষম আমাদের দেশ। বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে যখন সর্বত্র সোরগোল চলছে তখন স্বাভাবিক কারণেই বিজ্ঞানীরা হাত পা গুটিয়ে বসে থাকতে নারাজ। ইসরোর আদিত্য-১ নামক মিশনের পরিকল্পনাটিও অনেক দিনের। সূর্যের বহিরাংশে (করোনা) নিত্যদিন পরিবর্তন ঘটে চলেছে। বিশ্ব উষ্ণায়নসহ সূর্য সম্পর্কিত বহু অজানা তথ্যের সন্ধান করতে গবেষণা চলছে ভারতে। এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা সূর্যের সবচেয়ে কাছে পৌঁছেছিল। ভারতেরও লক্ষ্য সূর্য। প্রস্তুতি চলছে। একথা ঠিক, তার আগেই চন্দ্রযান-২-এর সফল উৎক্ষেপণ ভারতের মহাকাশ গবেষণায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল। এই ভারতই একদিন বিশ্বের দরবারে প্রমাণ করে দিয়েছিল চাঁদে একসময় জল ছিল। এবার আর শুধু জল খোঁজা নয়, চাঁদের অন্ধকারাচ্ছন্ন দিকে জলের সরাসরি অস্তিত্ব থাকারও প্রমাণ পেতে চাইছেন বিজ্ঞানীরা। চাঁদের খনিজ ভাণ্ডারেরও সন্ধান করবে বিশেষ যন্ত্র। সমস্ত ভারতবাসী কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করছে, বিজ্ঞানীদের উদ্দেশ্য ও প্রচেষ্টা সফল হোক। মহাকাশ বিজ্ঞান গবেষণায় প্রথম স্থানটি দখল করুক আমাদের গর্বের ভারত।
এ দেশে দারিদ্র আছে। অশিক্ষা, কুশিক্ষা, কুসংস্কার থেকেও এ দেশ মুক্ত নয়, আবার এ-দেশেই জন্মগ্রহণ করেছেন বহু স্মরণীয় মনীষী। বহু প্রতিভান মানুষ, বিজ্ঞানী, গবেষক, প্রযুক্তিবিদের জন্মও এ দেশের মাটিতেই, যাঁদের অবদানের জন্য দেশবাসী গর্ব বোধ করেন। এ দেশে মেধার কোনও অভাব নেই। সেই মেধাবীরাই দেশকে বিশ্বের দরবারে সেরা প্রমাণ করতে প্রস্তুত। তাই শুধু ধন্যবাদ বা অভিনন্দনজ্ঞাপনই ইসরোর বিজ্ঞানীদের এই সাফল্যের জন্য যথেষ্ট নয়। তাঁরা আগামী দিনের বিজ্ঞানীদেরও উৎসাহিত করছেন। নতুন নতুন আবিষ্কারের পথ দেখাচ্ছেন। তাঁরাই ভারতীয়দের জ্ঞানের পরিধিকে সমৃদ্ধ করছেন। গোটা দেশ আজ তাঁদের জন্য গর্বিত। বিশ্বও তাকিয়ে আছে এ দেশের দিকে। কিন্তু, চন্দ্রযান-২ উৎক্ষেপণের সাফল্যের পিছনে কার কতটা অবদান তা নিয়ে রাজনৈতিক কূটকচালি হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। দুর্ভাগ্যজনক যে দেশের তাবড় রাজনীতিকদের অনেকেই এ বিষয়টি স্মরণে রাখেন না। তাই, চন্দ্রযান-২ উৎক্ষেপণের সাফল্যের জন্য কার অবদান কতটা তা নিয়ে রাজনৈতিক তরজায় মেতে উঠছেন তাঁদেরই কেউ কেউ। এই সাফল্য জওহরলাল নেহরুর দূরদর্শিতার ফসল, না কি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের অর্থ বরাদ্দের অবদান অথবা এই সাফল্য প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বেই এসেছে—এ নিয়ে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব মতবিরোধ যতই থাকুক না কেন অস্বীকার করার উপায় নেই ভারতীয় বিজ্ঞানীরাই সমস্তরকম চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম হয়েই দেশের নামটি উজ্জ্বল করেছেন বিশ্বের দরবারে। তাই, রাজনীতির আঙিনায় তাঁদের এই সাফল্যকে টেনে আনা অনুচিত। বরং পরবর্তী সাফল্যের লক্ষ্যে দেশ যাতে আরও এগিয়ে যেতে পারে সেটাই হোক প্রতিটি দেশবাসীর সঙ্কল্প ও প্রত্যাশা।