বিদ্যায় অস্থির মানসিকতা থাকবে। কর্মপ্রার্থীদের কোনও শুভ যোগাযোগ হতে পারে। রাগ বা জেদের বশে কারও ... বিশদ
গাড়ির চালকদের জন্য এমনকিছু বাধ্যবাধকতা থাকা প্রয়োজন যেটা তাঁরা মেনে চলতে বাধ্য। কারণ তাঁদের তরফে সামান্য ত্রুটি বা অসতর্কতার জন্য যে-কোনও মানুষের জীবনহানির সম্ভাবনাটি থেকে যায়। শুধু তাই নয় চালকের নিজের নিরাপত্তা, পথচারীর নিরাপত্তা এমনকী গাড়ির অন্য সওয়ারদের নিরাপত্তার প্রশ্নটি তাঁর সঙ্গেই যুক্ত। তাই এমন কোনও ব্যক্তির হাতে ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকা উচিত নয় যিনি যথেষ্ট প্রশিক্ষিত বা দায়িত্বশীল নন। এমন ঘটনাও ঘটে যে বাড়িতে গাড়ি থাকলে কখনও অভিভাবকের জ্ঞাতসারে বা তাঁদের না-জানিয়ে তাঁদের সন্তানটি গাড়ি নিয়ে চালিয়ে বেরিয়ে পড়ে। অনেক সময় পিছু পিছু ধাওয়া করে দুর্ঘটনা। আর মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর ঘটনা তো আকছার। মোবাইল ফোন কানে গাড়ি চালানোর ঘটনাটি নয়া সংযোজন। হেলমেট ছাড়া একাধিক সওয়ার নিয়ে বাইক বা স্কুটার চালানোর দৃশ্যটি তো নিত্য নৈমিত্তিক। শত প্রচারেও টনক নড়ছে না। আশঙ্কার কথা জাল ড্রাইভিং লাইসেন্সের বিষয়টি। বিভিন্ন স্তরে রয়েছে ঘুঘুর বাসা। ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে যাতে কোনওরকম দুর্নীতি না-থাকে সেদিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া দরকার। লোকসভায় সংশোধনী বিলটি পেশ করে সড়ক ও পরিকাঠামো মন্ত্রী নীতিন গাদকারি একটি অতি বাস্তব সত্য তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, দেশের ৩০ শতাংশ ড্রাইভিং লাইসেন্সই জাল! এনিয়ে একটি অসাধু চক্র কাজ করছে সর্বত্র। দুর্নীতি প্রতিরোধের কথাও শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। বিপজ্জনকাবে গাড়ি চালানো হলে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে—আধার কার্ড ছাড়া আর ড্রাউভিং লাইসেন্স পাওয়া যাবে না। গাড়ি চালানোর সময় মোবাইলে কথা বললে ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং হেলমেট ছাড়া টু-হুইলার চালালে ১ হাজার টাকা জরিমানা ও তিন মাসের জন্য লাইসেন্স সাসপেন্ড করা হবে। ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদও ২০ বছর থেকে কমিয়ে ১০ বছর করার কথা বলা হয়েছে সংশোধনী বিলে। লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানোর জরিমানা ৫ হাজার টাকা। মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালালে জরিমানা দিতে হবে ১০ হাজার টাকা। যদি কোনও নাবালক গাড়ি চালাতে গিয়ে ধরা পড়ে বা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে বসে তাহলে তার বিরুদ্ধে ছাড়াও তার অভিভাবকের বিরুদ্ধেও মামলা করার প্রস্তাব আছে। পথদুর্ঘটনা এড়াতে হলে মানুষকে সতর্ক করার পাশাপাশি কঠোর নিয়ম কার্যকর করাটাও নিঃসন্দেহে দরকার। তাই, কেন্দ্রের তরফে বিলটিতে যেসব প্রস্তাব রয়েছে তা নিয়ে হয়তো দ্বিমত হবে না কেউ। তবে, সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারগুলির মতামত গ্রহণটাও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সড়ক নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হলে এর সঙ্গে সঙ্গেই রাস্তাঘাটের উন্নতি দিকেও নজর দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, একটা কথা বলতেই হয়, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়—বিল পেশ হয়, তা অনুমোদিত হয়ে আইনও হয়ে যায়, যা অনেক সময়ই শুধু কাগজে-কলমে থেকে যায়, অর্থাৎ প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে থেকে যায় ঘাটতি। তাই মানুষের জীবন সংশয় হতে পারে এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি যেখানে যুক্ত সেখানে যাতে প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোনওরকম ঘাটতি না-থাকে তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। পথদুর্ঘনা এড়াতে হলে তাই শুধুমাত্র কড়া আইন করলেই হবে না, তা কার্যকরও করতে হবে। এক্ষেত্রে পুলিস, প্রশাসন, মোটর ভেহিকেলস দপ্তর প্রত্যেকেরই বিশেষ বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। দায়িত্ব আছে সচেতন নাগরিকদেরও। প্রত্যেকের দায়িত্বশীল ভূমিকাই পারে পথদুর্ঘটনা কমাতে।