মেয়াদি সঞ্চয় থেকে অর্থাগম যোগ আছে। সন্তানের আবদার মেটাতে অর্থ ব্যয়। ধর্মকর্মে মন আকৃষ্ট হবে। ... বিশদ
বিশাখাপত্তনম: এভাবে যে হুট করে ঘনিয়ে আসবে আষাঢ় সন্ধ্যা, তা ভাবাই যায়নি। ব্যর্থতার মিছিলে যেভাবে পড়ি-মরি করে পা মেলালেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা, সাধারণ ক্রিকেটবোধে তা ছিল অচিন্তনীয়। রোহিত, বিরাটদের ধুন্ধুমার ব্যাটিং দেখার টানে রবিবার অনেকেই ভিড় করেছিলেন গ্যালারিতে। কিন্তু স্বপ্নভঙ্গ হতে লাগল মাত্র কয়েকটা ওভার। অজি পেসারদের দাপটে পাওয়ার-প্লে’তেই ‘পাওয়ার-কাট’ হয়ে গেল ভারতীয় ব্যাটিংয়ের। ৪৯ রানে পড়ল ৫ উইকেট। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর প্রথম ১০ ওভারে এতটা করুণ পরিস্থিতি হয়নি টিম ইন্ডিয়ার। ২৬ ওভারে ১১৭ রানে শেষ হয় ভারতের ইনিংস। অস্ট্রেলিয়ার জয় ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা। শুধু দেখার ছিল, স্বল্প পুঁজি নিয়ে ভারতীয় বোলাররা কত ওভার পর্যন্ত লড়াই টেনে নিয়ে যেতে পারেন। এখানেও জুটল চরম লজ্জা। মিচেল মার্শ (অপরাজিত ৬৬), ট্রাভিস হেডের (অপরাজিত ৫১) আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে সামি, সিরাজরা উড়ে গেলেন খড়কুটোর মতো। ২৩৪ বল বাকি থাকতেই ১০ উইকেটে জিতে সিরিজে সমতা ফেরাল ক্যাঙারু বাহিনী, যা কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে হয়ে রইল রোহিতদের কাছে। কারণ, ওয়ান ডে ফরম্যাটে এর আগে বলের নিরিখে ভারতের সবচেয়ে বড় ব্যবধানে (২১২ বল) হার ছিল নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে হ্যামিলটনে। রবিবার তা ভেঙে গেল রোহিতদের দায়িত্বজ্ঞানহীন পারফরম্যান্সে।
তবে এই ভারতীয় ক্রিকেটারদের লজ্জা-টজ্জা বলে কিছু নেই। সবই গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে। কারণ, কাউকে কৈফিয়ত দিতে হবে না। সবাই যে ‘শাসকের’ অনুগত। এর পরেও রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা তারকা ইমেজ কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞাপনে মুখ দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করবেন। প্রদীপের নীচে অন্ধকারের মতো আইপিএলের আচ্ছাদনে ঢাকা পড়বে এই করুণ কাহিনী।
কিন্তু বিশ্বকাপের বছরে টিম ইন্ডিয়ার এমন হতশ্রী ব্যাটিং রীতমতো অশনিসংকেতই বটে। সমর্থকদের মনে প্রশ্ন একটাই, এই দলকে ঘিরে তৃতীয়বার ওয়ান ডে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন কি দেখা যায়? একা মিচেল স্টার্কে রক্ষা নেই, হ্যাজলউড, কামিন্সরা ফিরলে কী হবে!
সকাল দেখেই বোঝা যায়, দিনটা কেমন যাবে। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে স্টার্কের তৃতীয় বলেই শুভমান গিল (০) আউট হন। তবে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন। রানও উঠছিল দ্রুত গতিতে। কিন্তু হঠাৎই ঘনিয়ে এল আঁধার। পঞ্চম ওভারে স্টার্কের চতুর্থ ডেলিভারিতে স্লিপে স্মিথের হাতে ধরা পড়লেন রোহিত (১৩)। পরের বলে লেগ বিফোর হয়ে ফিরলেন সূর্যকুমার (০)। হ্যাটট্রিক মিস করলেও ৫৩ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচের নায়ক স্টার্কই।
আসলে, ঝুড়ির একটা আলুতে পচন লাগলে বাকিগুলিও খারাপ হয়ে যায়। ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের অবস্থা তাই। ব্যর্থ লোকেশ রাহুল (৯), হার্দিক পান্ডিয়াও (১)। একা কুম্ভ হয়ে রক্ষার চেষ্টা করছিলেন কোহলি। তাঁকেও থামতে হল এলিসের বলে। ৩১ রানে বিরাট এলবিডব্লু হতেই আশঙ্কা জাঁকিয়ে বসে ভারতীয় শিবিরে— তাহলে কি শতরানের গণ্ডিও টপকাবে না! অক্ষরের অপরাজিত ২৯ ও জাদেজার ১৬ রানের সুবাদে সেই অস্বস্তি ঢাকলেও, লজ্জা এড়ানো গেল না।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত ১১৭ (বিরাট ৩১, অক্ষর অপরাজিত ২৯, স্টার্ক ৫৩-৫)। অস্ট্রেলিয়া ১১ ওভারে ১২১-০ (ট্রাভিস অপরাজিত ৫১ ও মিচেল মার্শ অপরাজিত ৬৬)।