উত্তম বিদ্যালাভের যোগ আছে। কাজকর্মে উন্নতি ও কাজে আনন্দলাভ। অর্থাগমের উত্তম যোগ। ... বিশদ
আপ্লুত সৈকতবাবু বলেন, সিপিটিতে সাধারণত একজন জওয়ানকে সর্বাধিক ৬ বছর দায়িত্বে রাখা হয়। কিন্তু আমার কর্ম, দায়িত্ববোধ এবং নিষ্ঠার জন্য আধিকারিকরা প্রতি ৬ মাস অন্তর মেয়াদ বাড়িয়ে ১২ বছর রেখে দেন। সেজন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমি খুব কাছ থেকে তিনজন প্রধানমন্ত্রীকে দেখেছি। তবে সবচেয়ে বেশি ১০ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের নিরাপত্তা সামলেছি।
বিষ্ণুপুর মেলা কমিটির অন্যতম এক কর্মকর্তা আশিস রায় বলেন, সৈকতবাবু আমাদের গর্ব। একজন মানুষ তিন তিনজন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলেছেন। সেজন্য আমরা তাঁকে সংবর্ধনা দিয়েছি।
বিষ্ণুপুরের রাধানগরের বাসিন্দা সৈকত মুখোপাধ্যায় রাধানগর হাইস্কুলে মাধ্যমিক এবং বিষ্ণুপুর হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর ১৯৮৮ সালে বিএসএফে যোগ দেন। তারপর ২০০৩ সালে এসপিজির সিপিটিতে বাছাই করা কয়েকজন জওয়ানকে নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বলয়ে একাধিক স্তর রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে কাছের যে বলয়, তার নাম ক্লোজড প্রোটেকশন টিম। তাতে ১২ জন জওয়ান থাকেন। সেখানে সৈকতবাবু দায়িত্ব পান। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী। পরবর্তীতে মনমোহন সিং এবং তারপর নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হন। তবে এসপিটিতে ১২বছর সম্পূর্ণ হওয়ায় ২০১৪ সালে তাঁকে পুনরায় বিএসএফে ফিরে যেতে হয়। তিনি অটলবিহারী বাজপেয়ির আমলে দেড় বছর, মনমোহন সিংয়ের আমলে ১০ বছর এবং নরেন্দ্র মোদির আমলে ৬ মাস নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলেছেন। মনমোহন সিংহের নিরাপত্তারক্ষী হয়ে তিনবার বিদেশেও যান। ২০১০ সালে বারাক ওবামার ভারত সফরের সময় নিরাপত্তাবাহিনীর প্রথম সারিতে সৈকতবাবু ছিলেন। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় তাঁকে বিশেষ সম্মানে সম্মানিত করেছেন। সব মিলিয়ে ভারতীয় সেনায় এমন একজন আস্থাভাজন মানুষকে বিষ্ণুপুর বইমেলা কমিটি সংবর্ধনা দেওয়ায় সাধারণ নাগরিকরাও তাদের সাধুবাদ জানান।
সৈকতবাবু ২০১৮ সালে অবসর নিয়েছেন। বর্তমানে রাধানগরে গ্রামের বাড়িতেই থাকেন। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী এবং দুই মেয়ে রয়েছেন। সৈকতবাবু বলেন, বিএসএফে থাকাকালীন অধিকাংশ সময় জম্মু ও কাশ্মীরে কাটিয়েছি। সেখানে বান্দিপুরা সেক্টরে সাড়ে ১৪ হাজার ফুট উচ্চতায় এবং মাইনাস ২৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা এবং ২২ ফুট বরফের উপরে দিনের পর দিন কাটিয়েছি। কষ্ট হলেও দেশের জন্য কাজ করছি ভেবে নিজেকে গর্বিত মনে হতো। তাতে কষ্টও লাঘব হয়েছে। বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছি। • প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সৈকত মুখোপাধ্যায়। -নিজস্ব চিত্র