বিদ্যায় অগ্রগতি ও নামী প্রতিষ্ঠানে বিদ্যা লাভের সুযোগ পেতে পারেন। ব্যবসায় শুভ ও আয় বৃদ্ধি। ... বিশদ
প্রতারণা কাণ্ডের সূত্রপাত কীভাবে? তদন্তে জানা গিয়েছে, তাহেরপুর থানা এলাকার মহিষডাঙার বাসিন্দা প্রশান্ত মল্লিক প্রতারিতদের মধ্যে অন্যতম। পেশায় তিনি একজন চাষি। বেশ কয়েক মাস আগে তিনি জানতে পারেন, তাঁরই এক প্রতিবেশীর বিশেষ ‘হাত’ রয়েছে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে। তার চেনা জানা এমন একজন ব্যক্তি রয়েছে, যার মাধ্যমে মিলতে পারে পোস্ট অফিসে চাকরি। বিষয়টি জানার পরেই প্রতিবেশীর দ্বারস্থ হন প্রশান্তবাবু। চাকরির জন্য তাঁর আগ্রহ দেখে প্রতিবেশী তাঁকে নিয়ে যায় বহিরগাছির বাসিন্দা তথা এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত অসিত বিশ্বাসের কাছে। চাকরি পাইয়ে দেওয়ার ‘ক্ষমতা’ নাকি এই অসিতের আছে বলে চাকরিপ্রার্থী প্রশান্তকে জানায় ‘মিডলম্যান’ প্রতিবেশী। একইভাবে তার হাত ধরে চাকরি পাওয়ার আশায় অসিতের খপ্পরে পড়েন তাহেরপুরের অয়ন মণ্ডল, বাপন বিশ্বাস ও তনু পটারি। অভিযোগ, পোস্টাল ডিপার্টমেন্টে কেন্দ্রীয় সরকারের পাকা চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে এই চারজন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে মোটা টাকা হাতিয়ে নেয় অভিযুক্ত। কারও থেকে চার লক্ষ আবার কারও থেকে সাত লক্ষ টাকা করে নেওয়া হয়। এরপর তাদের দিয়ে ফর্ম ফিলআপও করানো হয়। এমনকী ট্রেনিং এবং পোস্টিং দেওয়া হয় রাজ্যের অন্য জেলায়।
রবিবার সাংবাদিক সম্মেলনে রানাঘাট পুলিস জেলার অতিরিক্ত সুপার লাল্টু হালদার বলেন, আমরা তদন্তে আপাতত ৩৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত প্রতারণার হদিশ পেয়েছি। চারজন চাকরিপ্রার্থীকে বিশ্বাস জোগানোর জন্য ট্রেনিংয়ের নাম করে প্রথমে পুরুলিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আগে থেকেই একটি ঘর ভাড়া করে পোস্ট অফিসের মতো সমস্ত কিছু সাজিয়ে তৈরি রাখা হয়েছিল। যাতে কোনওভাবেই সন্দেহ না হয়। সেই ভুয়ো অফিসে শুরু হয় চারজনের ট্রেনিং। এমনকী রানিগঞ্জে চাকরির পোস্টিং দেওয়া হয়। কিন্তু, মাস শেষের পরেও তাঁদের বেতন হয়নি। তখনই তাঁদের সন্দেহ হয়। এই অবস্থায় তাঁরা বুঝতে পারেন, চাকরি পাওয়ার আশায় প্রতারিত হয়েছেন। প্রথমে অভিযুক্তের কাছে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে তাঁরা সোচ্চার হন। কিন্তু, অভিযুক্ত তাঁদের সটান জানিয়ে দেয়, যা করার আছে করে নাও। এরপরই প্রতারিতরা ধানতলা থানার দ্বারস্থ হন। ২০সেপ্টেম্বর তাঁরা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই ঘটনার তদন্তে নেমেই আমরা অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি। তবে প্রতারণার অঙ্ক আপাতত ৩৪ লক্ষ টাকা পাওয়া গেলেও আমাদের বিশ্বাস, আরও অনেকের সঙ্গেই এধরনের ঘটনা ঘটেছে। ফলে প্রতারণার অঙ্ক বাড়তে পারে। আমরা ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।
(বাঁদিকে), প্রতারক অসিত বিশ্বাস। (ডানদিকে), সাংবাদিক বৈঠকে রানাঘাট পুলিস জেলার অতিরিক্ত সুপার লাল্টু হালদার। -নিজস্ব চিত্র