ব্যবসায় বেচাকেনা বেশ ভালো হবে। কাজকর্মে কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তির আনুকূল্য লাভ ও ভাগ্যোন্নতি। ... বিশদ
শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং ও প্রতিবেশী রাজ্য সিকিমের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের মাধ্যম ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। এটি কালিম্পং ও সিকেমের লাইফ লাইন। বর্ষার মরশুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই তিস্তা নদীর ভাঙন ও ধসে বিধ্বস্ত সংশ্লিষ্ট জাতীয় সড়ক। রবিবার সেভকে এবং ২৭ মাইলে রাস্তার উপর ধস নামে। পাহাড়ের মাটি, নুড়ি, গাছ উপর থেকে নেমে আসে। এনিয়ে এক মাসে এই সড়কে ধস ও নদী ভাঙনের ৪০টি ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। ইতিমধ্যে তিস্তা নদীর ভাঙনে বিধ্বস্ত রাস্তাটির বিরিকধারা, সেলফিধারা, লিকুভীর প্রভৃতি এলাকা। এনিয়ে টানা আট দিন ধরে জাতীয় সড়ক বন্ধ।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক রঞ্জন রায় বলেন, পাহাড়ের তলদেশে ক্রমাগত ক্ষয় করছে তিস্তা। এটা নদীর চোরা ভাঙন। যা উপর থেকে বোঝার উপায় নেই। হাঠাৎ করেই বিশাল অংশ ধসে গিয়ে রাস্তা বিপজ্জনক হচ্ছে। কিংবা রাস্তায় ফাটল ধরছে। অর্থাৎ তলদেশে নদী ভাঙনের জেরে পাহাড় কার্যত শূন্যে ঝুলছে। কাজেই সংশ্লিষ্ট জাতীয় সড়ক সহ কালিম্পংয়ের বিস্তীর্ণ অংশ রক্ষা করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। অপরিকল্পিতভাবে নদীতে বাঁধ তৈরি সহ বিভিন্ন কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। শুধু কালিম্পং নয়, চলতি বর্ষার মরশুমে দার্জিলিং পাহাড়েও একাধিক জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধসে। এদিন কার্শিয়াংয়ের নয়াবাজার, রানিকুপ, টেকবীরবস্তি, নয়াবস্তি এই চারটি এলাকায় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঁচটি বাড়ি। এনিয়ে কয়েক দিনের মধ্যে দার্জিলিং ও কার্শিয়াং পাহাড়ে প্রায় ১৫টি জায়গা ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হল। এনবিইউ’র ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক বলেন, পাহাড়ের উপরের দিকের শিলাগুলি ভঙ্গুর প্রকৃতির। কারণ কিছু জায়গায় ফিলাইড বা মাইকা জাতীয় শিলাস্তর রয়েছে। এগুলি নরম প্রকৃতির। একনাগাড়ে বেশি বৃষ্টি হলেই ওই জায়গাগুলিতে ধস নামছে। এদিন পাগলাঝোরার কাছে দার্জিলিংগামী ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কের বেশকিছু অংশ বসে গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, রাস্তাটির প্রায় ৪৫ মিটার লম্বা অংশজুড়ে ধসছে। বর্তমানে রাস্তা নেই বললেই চলে। তাই রাস্তাটি দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিংগামী টয় ট্রেন চলাচলও বন্ধ। কার্শিয়াংয়ের মহকুমা শাসক তেজা দীপক বলেন, ধসের জেরে জাতীয় সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
পূর্তদপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা বলেন, রাস্তা মেরামত করতে হলে প্রায় ১০০ মিটার নীচে নামতে হবে। পাহাড়ের তলদেশ থেকে ধাপে ধাপে ওয়াল তৈরি করতে হবে। এখন পাগলাঝোরায় জলস্তর বেশি। তাই নীচে নেমে সেই কাজ করা যাচ্ছে না। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই সংশ্লিষ্ট এলাকা সিংকিং বা ডুবন্ত জোন হিসেবে চিহ্নিত। অর্থাৎ পাহাড়ের কোনও উঁচু উপত্যকা থেকে ক্রমাগত জল চুঁইয়ে চুঁইয়ে সেই এলাকা দিয়ে নামছে। এলাকাটি বসে যাচ্ছে। চ্যানেল করে ঝোরার জল রাস্তার নীচ দিয়ে বের করা গেলে সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।