শরীর নিয়ে চিন্তায় থাকতে হবে। মাথা ও কোমরে সমস্যা হতে পারে। উপার্জন ভাগ্য শুভ নয়। ... বিশদ
উত্তরবঙ্গের পুরনো শহর হিসেবে পরিচিত জলপাইগুড়ি। ইংরেজ রাজত্বে তৎকালীন পূর্ববঙ্গের মানিকগঞ্জ থেকে জলপাইগুড়ি শহরে আসেন রজনীকান্ত ভৌমিক। বারোভুঁইয়ার অন্যতম হিসেবে পরিচিতি পান তিনি। ১৯৩০ সালে জলপাইগুড়ি শহরের উকিলপাড়ায় শুরু করেন দেবী পুজোর প্রচলন। তিস্তাপাড়ের শহরে তখন এই শহরে পুজো বলতে সম্বল বনেদিবাড়ির পুজোয়। রাজবাড়ির পাশাপাশি এই পুজোও ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ধীরে ধীরে বয়সের ছাপ যত বেড়েছে, পাল্লা দিয়ে বনেদিবাড়ির এই পুজোর জৌলুসও ততই বেড়েছে। এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে হাত বদল হয়েছে পুজোর। কিন্তু বদলায়নি দেবীর সুবিশাল কাঠামোটি। করোনার থাবায় এবার সেই ট্যাডিশনে বদল এসেছে। এবারই প্রথম প্রথা ভেঙে নতুন কাঠামোতে নতুন প্রতিমা সেজে উঠছে। উচ্চতা কমেছে মায়ের মূর্তির।
পরিবারের বর্তমান সদস্য পেশায় আইনজীবী সুদীপ্তকান্ত ভৌমিক বলেন, প্রতিবার আমাদের প্রতিমার উচ্চতা ১৩ ফুট হয়। করোনার জেরে এবারই প্রথম ছোট কাঠামোতে প্রতিমা নির্মাণ হচ্ছে। পুজোর পর বিসর্জনে আমরা সেই কাঠামোটিকে সম্পূর্ণ বিসর্জন দেব। এই পুজোকে ঘিরে শহরের মানুষের মধ্যে আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু সংক্রমণ রুখতে আমরা কীভাবে পুজোর বন্দোবস্ত করব তা নিয়ে পারিবারিকভাবে আলোচনা করছি। সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পুজো হবে। প্রতিদিন মণ্ডপ স্যানিটাইজ করা হবে। মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
এই পুজের বৈশিষ্ট হল, লক্ষ্মীর পাশে এখানে কার্তিক ও সরস্বতীর পাশে গণেশ থাকে। সিংহের রং সাদা। গণেশের রং লাল। একসময় এই পুজোয় পাঁঠা বলির রেওয়াজ ছিল। বলিদানের পর পাঁঠার মাথা মাটিতে পুঁতে দেওয়া হতো। কিন্তু ১৯৮২ সাল থেকে তা বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে ফল বলি দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। পরিবারের সদস্যরা বলেন, এই পুজো শুরু থেকে কোনওবার ছেদ পড়েনি। এমনকী পরিবারের কোনও সদস্য প্রয়াত হলে অন্য শরিকরা পুজোর হাল ধরে। করোনা আবহে এবার দুশ্চিন্তা গ্রাস করেছিল। কিন্তু দুশ্চিন্তার মেঘ কাটিয়ে আর ক’দিন পর এই বাড়িতে প্রবেশ করবেন উমা। ঘরের মেয়েকে বরণ করতে এখন তাই প্রস্তুতিও তুঙ্গে। পরিবারের বিশ্বাস, মায়ের আবির্ভাবেই করোনা ভয় থেকে মুক্ত হবে সমাজ। নিজস্ব চিত্র