লন্ডন: ব্রিটেনের পোস্ট অফিসে অর্থ কারচুপি মামলায় কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল ভারতীয় বংশোদ্ভূত সীমা মিশ্রাকে । ৪৭ বছরের সীমা তখন অন্তঃসত্ত্বা। শেষপর্যন্ত জানা গিয়েছে, মিথ্যে সাক্ষ্যেই সাজা ভুগতে হয়েছে তাঁকে। ২০১০ সালের ঘটনার বেশ কয়েক বছর পর অনুশোচনা মামলার সাক্ষ্যপ্রদানকারীর। একটি কোম্পানির প্রাক্তন ইঞ্জিনিয়ার গ্যারেথ জেনকিনসের পেশ করা সাক্ষ্যেই জেল হয়েছিল সীমার। এখন তিনি সীমার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। কিন্তু সেই ক্ষমাপ্রার্থনা খারিজ করে দিয়েছেন সীমা। তাঁর বক্তব্য, অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে। সারের পশ্চিম বাইফ্লিট পোস্ট অফিস শাখার সাব পোস্ট মাস্টার সীমার বিরুদ্ধে ৭০ লক্ষ পাউন্ড চুরি করার অভিযোগ এনেছিলেন গ্যারেথ। এব্যাপারে প্রামাণ্য তথ্যও তিনি আদালতে দাখিল করেছিলেন। প্রসঙ্গত, ব্রিটেনের ওই পোস্টঅফিস দুর্নীতিতে অন্তত ৭০০ জন সাব-পোস্টমাস্টার মিথ্যাভাবে ফেঁসেছিলেন। তার জেরে বহু অভিযুক্তই নিজেদের ব্যবসা থেকে শুরু করে স্বাভাবিক জীবন হারিয়েছেন। এমনকী শুনানি চলাকালীন অনেকের মৃত্যুও হয়েছে। সীমাও সেই ভুয়ো অভিযোগের গেরোয় পড়েন। সাজা ঘোষণার সময় তিনি দ্বিতীয় বারের জন্য সন্তানসম্ভবা। প্রায় সাড়ে চার বছর তাঁর সাজা হয়। জেলেই তিনি সন্তান প্রসব করেন। সম্প্রতি গ্যারেথের ক্ষমা প্রার্থনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে যা ঘটেছে তা কেউই বুঝতে পারবেন না। তিনি (গ্যারেথ) এখন যা করছেন, তা অনেকদিন আগেই উচিত ছিল।’
২০২১ সালে ওই মামলায় সীমা অব্যাহতি পেয়েছেন। কিন্তু তার আগেই তাঁকে জেলে সাজার মেয়াদ কাটাতে হয়েছে। এখন গ্যারেথই তদন্তের আওতায় পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে গ্যারেথের, ‘সাজা ঘোষণার সময় যে সীমা অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন তা আমি জানতাম না। আমি বহু বছর পর তা জেনেছি। সে কারণেই এখন ক্ষমা চাইছি।’ পুলিস সূত্রে খবর, সাব পোস্টমাস্টার দুর্নীতির বেশ কয়েকটি মামলাতেই গ্যারেথ সাক্ষী দিয়েছিলেন। বর্তমানে তাঁর সেই ভূমিকাও তদন্তকারীদের নজরে এসেছে। মিথ্যা সাক্ষী দেওয়ার জন্য তাঁর উপর কোনও চাপ ছিল কি না তা-ও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।