সংবাদদাতা, পুরুলিয়া: পানীয় জলের দাবিতে ফের পথ অবরোধ পুরুলিয়া শহরে। চার নম্বর ওয়ার্ডের পর এবার খোদ চেয়ারম্যানের ওয়ার্ডে জল না পেয়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন বাসিন্দারা। প্রায় তিন মাস ধরে তাঁরা পানীয় জল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের। বিষয়টি নিয়ে পুলিস এবং পুরসভার কর্মীদের সঙ্গে বচসা হয় আন্দোলনকারীদের। পরে পুর কর্তৃপক্ষ দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন বাসিন্দারা। চেয়ারম্যান পরে এলাকায় গেলে তাঁকেও বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহের শুরুতেই শহরের চার নম্বর ওয়ার্ডের ভাটবাঁধ এলাকায় পানীয় জলের দাবিতে অবরোধ করেন স্থানীয় মহিলারা। তার কয়েকদিনের মধ্যেই পুরুলিয়া শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে তেলকল পাড়া এলাকায় শুক্রবার অবরোধ করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ওই ওয়ার্ডেরই কাউন্সিলার তথা পুরুলিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান নব্যেন্দু মাহালী। শুক্রবার পুরুলিয়া শহরের ওভারব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় রাস্তার উপর হাড়ি, কলসি রেখে বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয় মহিলারা। বিক্ষোভকারীরা বলেন, তেলকল পাড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় পানীয় জলের পাইপলাইন রয়েছে। কিন্তু জল পাওয়া যাচ্ছে না। এরকম পাইপলাইন নিয়ে কী হবে। চেয়ারম্যানকে বারবার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। বিক্ষোভকারী মঙ্গলা লোহার বলেন, তিন মাস ধরে জল পাচ্ছি না, একথা পুরসভার প্রায় সবাই জানেন। কিন্তু সব জেনেও তাঁরা না জানার ভান করছেন। শুধু শুধু পাইপলাইন নিয়ে কী হবে। পানীয় জলের সমস্যার কথা বারবার জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুরুলিয়া সদর থানা পুলিস এবং পুলিয়া পুরসভার জল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা। তারা বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করলে তাদের সঙ্গে বচসাও হয়। পরে পুরসভা কর্তৃপক্ষ ৭ দিনের মধ্যে এই সমস্যাটি সমাধানের আশ্বাস দেন। পুরসভার আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন বাসিন্দারা।
পুরুলিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান নবেন্দু মাহালী পরে এলাকায় গিয়ে বিক্ষোভকারী এক মহিলার সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। এমনকী ওই মহিলাকে তিনি বলেন, আপনি ভালো নেত্রী হতে পারবেন। আগামী দিনে এই ওয়ার্ডটি মহিলা সংরক্ষিত হলে আপনাকে কাউন্সিলার বানানো হবে। ঘটনাস্থলেই সংবাদমাধ্যমকে চেয়ারম্যান বলেন, সব কাজ তো আর সঙ্গে সঙ্গে হয় না। একটা টেকনিক্যাল সমস্যা রয়েছে। সেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। বাড়ির সামনে হাইওয়ে রোড। তাই কোনও কিছু না পেয়ে রাস্তা অবরোধ করে দিলেন কয়েকজন। নির্দিষ্ট ধারায় তাদের বিরুদ্ধে কেস দেওয়া হলে তারা এত সাহস পেতেন না। এই এলাকায় পানীয় জলের সার্বিক কোনও সমস্যা নেই। শুধুমাত্র কিছু গলিতে কয়েকটা বাড়িতে সমস্যা রয়েছে। কারা ব্যাপারটাকে এত বড় করে ইন্ধন দিয়েছে সে নাম আমার কাছে এসেছে। ভিডিও ফুটেজ বানিয়ে রেখেছি। তিনি আরও বলেন, দ্রুত সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
নিজস্ব চিত্র