কাজকর্মের ক্ষেত্রে দিনটি বিশেষ শুভ। নতুন যোগাযোগ ও উপার্জন বৃদ্ধির ক্ষেত্র প্রস্তুত হতে পারে। বিদ্যায় ... বিশদ
ঘটনার সূত্রপাত ৪সেপ্টেম্বর। ওইদিন ভুবন মঙ্গলপুর গ্রামের খুকুরানি শীটকে(৪৬) বাড়ি থেকে টেনে বের করে এনে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। অভিযোগ, গ্রামের ৬০বছর বয়সি শুকচাঁদ মাইতি নির্মমভাবে ওই মহিলার উপর হামলা চালায়। তাঁর শরীর থেকে গয়না খুলে নেওয়া হয়। পরকীয়ার সম্পর্কের কথা ফাঁস করার অভিযোগে শুকচাঁদ খুকুরানিকে মারধর করে। সঙ্কটজনক অবস্থায় তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে তমলুক শহরে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। রবিবার ভোর ৪টে নাগাদ তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছতেই এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এদিন সকাল ৭টা নাগাদ স্থানীয় পুরুষ ও মহিলারা লাঠি, বাঁশ নিয়ে খুকুরানি খুনে অভিযুক্ত শুকচাঁদ ও তার প্রণয়ীকে বাড়ি থেকে বের করে মাঠে আনে। গ্রামের লোকজন শুকচাঁদকে বাঁশ দিয়ে পেটায়। মহিলারাও তার প্রণয়ীকে চরম হেনস্তা করে। প্রচণ্ড মারের চোটে শুকচাঁদের মাথা ফেটে রক্ত বেরলেও উত্তেজিত জনতা তাকে ছাড়েনি। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিস এলাকায় পৌঁছলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভ চলে। উত্তেজিত জনতার কবল থেকে কোনওরকমে দু’জনকে উদ্ধার করে পুলিস। তারপর একটি গাড়িতে চাপিয়ে তাদের এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতলে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক শুকচাঁদকে মৃত ঘোষণা করেন।
গ্রামে ব্যাপক উত্তেজনা থাকায় অতিরিক্ত পুলিস সুপার(গ্রামীণ) শুভেন্দ্র কুমার, এগরার এসডিপিও দেবীদয়াল কুণ্ডু প্রমুখ ঘটনাস্থলে যান। এলাকায় পুলিসক্যাম্প বসানো হয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার ভুবন মঙ্গলপুর গ্রামে গিয়ে এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। স্থানীয় বাসিন্দা কাকলি মাইতি, রেবতী মাইতি বলেন, ৬০বছর বয়সি শুকচাঁদ গ্রামেরই এক বিবাহিত মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছিল। গ্রামের লোকজন ওই ঘটনা জানত। কয়েকদিন আগে শুকচাঁদের বাড়ি থেকে ওদের দু’জনকে একসঙ্গে বেরতে দেখেন খুকুমণি। এরপরই বিষয়টি নিয়ে ফিসফাস হতেই তাঁকে খুন করার পরিকল্পনা করে শুকচাঁদ। খুকুরানির স্বামী ভিনরাজ্যে থাকেন। ছেলে বাপি শীট বাড়ির বাইরে ছিল। সেই সুযোগে ৪সেপ্টেম্বর তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে প্রচণ্ড মারধর করে মুখে কীটনাশক ঢেলে দিয়েছিল শুকচাঁদ। এনিয়ে গ্রামের মানুষজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। রবিবার সকালে খুকুরানির মৃত্যুর খবর আসতেই জনরোষ আছড়ে পড়ে শুকচাঁদ ও তার প্রণয়ীর উপর।
নিহত খুকুরানির জামাই ছেলে বাপী শীট বলেন, শুকচাঁদ গ্রামের প্রভাবশালী লোক। তার কেচ্ছা ফাঁস হওয়ার ভয় থেকেই মায়ের উপর অত্যাচার চালায়। খুন করে ওই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। মায়ের মৃত্যুর খবরে লোকজন উত্তেজিত হয়ে পড়ে। গণপিটুনির জেরে শুকচাঁদও মারা গিয়েছে।