পারিবারিক সম্পত্তি ভাগ-বাটোয়ারার প্রচেষ্টায় সাফল্য পাবেন। ব্যবসায় লগ্নি বৃদ্ধির সম্ভাবনা । শরীর একপ্রকার থাকবে। ... বিশদ
বেলগাছিয়ার মেট্রো স্টেশনের কাছে কুণ্ডু লেন। সে রাস্তার একটু দূরে বেলগাছিয়া রেলওয়ে কলোনি। পথের শেষ প্রান্তটি রহস্যজনকভাবে নির্জন। ঝোপঝাড়ে ভরা। জংলি গাছ‑গাছালিতে ভর্তি। দিনের বেলাতেও গা ছমছমে পরিবেশ। বুনো গাছ ক্রমশ গ্রাস করে চলেছে রাস্তা। কয়েকটি কঙ্কালসার কোয়ার্টার একটু দূরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে। যখন তখন বেরয় ভাম, বেজি। সাপও দেখা গিয়েছে কোয়ার্টারে। পায়রার দল বকবকম করে চলে সর্বদা। পেল্লায় বটগাছ। তার শিকড় আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে নিয়েছে পরিত্যক্ত কোয়ার্টারের দেওয়াল। অদূরে বিশাল একটি জলাশয়। একটু এগলেই তারা মায়ের মন্দিরটি খাড়া দাঁড়িয়ে। কালীর নাম, ‘তারা শঙ্করী’। তাঁর নামেই মন্দির উৎসর্গ করা। ভিতরটি আলো আঁধারি, মিটমিট করে আলো জ্বলে। মন্দিরের মধ্যে কালীর বিগ্রহটি সেই আলোতে চোখে পড়বে। আর দেখা যাবে, চারধারে ঝুলছে নরমুণ্ড, কঙ্কাল। রয়েছে নরমুণ্ডের আসনও। যোগীরাজ পরেশচন্দ্র রায় মৌলিক এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা।
খাস কলকাতায় প্রায় লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা প্রাচীন এই কালী মন্দির ঘিরে নানা কাহিনি, অসংখ্য জনশ্রুতি। মন্দিরটির নাম ‘তারা শঙ্করী পীঠ’। মন্দিরের গাত্রে দশ মহাবিদ্যার দেবীমূর্তি। দোতলায় বিষ্ণুর (যশোমাধব) একটি পূর্ণাবয়ব প্রতিমা। তাঁকে নিরামিষ ভোগ দেওয়ার নিয়ম। তিনতলায় রয়েছেন মহাকাল ভৈরব। সে মূর্তি ভয়াল। মন্দিরে একা দাঁড়িয়ে দেখার সাহস সবার বুকে থাকে না। প্রতিদিন নিষ্ঠাভরে ভৈরবের পুজো হয়। এ মন্দিরের আগুন এক মুহূর্তের জন্যও নেভে না। ডাঁই করে রাখা রয়েছে শবদেহ পোড়ানোর কাঠ। মন্দিরের বর্তমান সেবায়েত পার্থ রায় বয়সে প্রবীণ। বললেন, ‘বিশেষ দিনগুলিতে শ্মশান থেকে সধবা মহিলার শবদেহের চিতার আগুন আনা হয়। সে আগুন এনে দিতে হয় মন্দিরের চিতায়। এটাই রীতি।’
তিনি জানান, প্রতিদিন পাঁঠার মাংস‑মাছ-ভাত ইত্যাদি ব্যঞ্জনে ভোগ নিবেদন হয়। রাতে শীতল ভোগ।’ পুরোহিত প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘দুর্গাপুজো, কালীপুজো, রথ, শিবরাত্রি ধুমধাম করে হয়। প্রতিষ্ঠাতা পরেশচন্দ্র ও তাঁর স্ত্রী অঞ্জলিদেবীর মূর্তি রয়েছে। নিত্য পুজো ও সন্ধ্যা আরতি হয়। সকাল আটটা থেকে বেলা ১২টা ও বিকেল চারটে থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা তারা শঙ্করী পীঠ।’