ব্যবসা ও পেশায় ধনাগম ভাগ্য আজ অতি উত্তম। বেকারদের কর্ম লাভ হতে পারে। শরীর স্বাস্থ্য ... বিশদ
রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন, আরজি কর কাণ্ডের ঠিক পর পরই রাজ্যে ছ’টি বিধানসভার উপ নির্বাচন হয়। তার মধ্যে একটি মেদিনীপুর। এখানেও আরজি কর আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়েছিল। বিজেপি সেই সুযোগে নারী নির্যাতন নিয়ে প্রচারে সরব হয়। কিংবা বলা ভালো, ভোট বৈতরণী পার হতে গেরুয়া শিবির মূলত আরজি কর কাণ্ডকেই হাতিয়ার করে। এক্ষেত্রে তারা মহিলা মন জয় করতে পারবেন বলে আশাবাদী বিজেপির স্থানীয় নেতারা। আর আটচল্লিশ ঘণ্টা পর ভোট গণনা। ফলাফলেই যাবতীয় ‘কিন্তু’ কেটে যাবে বলে আশা শাসক শিবিরের। অতঃপর, বৃহস্পতিবার খোশ মেজাজেই দেখা গিয়েছে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা প্রার্থী সুজয় হাজরাকে। কথায় কথায় তিনি বলছিলেন, ‘আগে সিপিএমের সরকার সাধারণ মানুষের উপর শুধুই নির্যাতন করেছে। মহিলারা কোনও সুযোগ সুবিধা পেতেন না। কিন্তু আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন মহিলারা। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে আর্থিক পরিকাঠামো বদলেছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার তাঁদের স্বনির্ভর হওয়ার দিশা দেখিয়েছে। তাই মহিলা ভোট আমাদের পক্ষেই থাকবে। এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’
রাজ্যের গত নির্বাচনগুলির ফলাফলে মহিলা ভোট বাড়তি ডেভিডেন্ট দিয়েছে তৃণমূলকে। তার অন্যতম কারণ মহিলাদের স্বার্থ সুরক্ষার একাধিক সরকারি প্রকল্প। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, রূপশ্রী, কন্যাশ্রী ছাড়াও স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে মহিলাদের প্রাধান্য দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু মেদিনীপুর বিধানসভা এলাকায় ৮০ হাজারের বেশি মহিলা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। তৃণমূলের দাবি, সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ায় মহিলারা তাঁদের পক্ষেই ভোট দিয়েছেন। অপরদিকে, বিজেপির দাবি, গোটা রাজ্যে মহিলাদের খুন, ধর্ষণ করা হচ্ছে। কিন্তু মহিলারা বিচার পাচ্ছে না। তাই মহিলাদের ভোট তাঁদের পক্ষেই যাবে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, মেদিনীপুর বিধানসভা এলাকায় মহিলা ভোট সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর। আগের নির্বাচনগুলিতে মহিলা ভোট জয়ের অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে। অর্থাৎ, মহিলা ভোট যাঁদের পক্ষে গিয়েছে, তাঁদের জয় নিশ্চিত হয়েছে।
তৃণমূল নেতৃত্বের কথায়, মহিলা ভোট নিয়ে একাধিকবার পর্যালোচনা হয়েছে। বিভিন্ন প্রচার সভায় মহিলাদের উপস্থিতি ছিল নজরকাড়া। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটেও বহু এলাকায় বিজেপি জিতেছিল। কিন্তু মহিলাদের জন্য কিছুই করেনি। এক বিজেপি নেতা বলেন, গ্রামীণ এলাকায় লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বড় ফ্যাক্টর করে দিচ্ছে। পুরসভা এলাকায় একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনার প্রভাব পড়েছে ঠিকই। কিন্তু গ্রামীণ এলাকায় সেভাবে প্রভাবই পড়েনি। বিষয়টি উচ্চ নেতৃত্বকে ভেবে দেখার পরামর্শ দেব। জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, ‘সারা রাজ্যব্যাপী নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু রাজ্য সরকার কিছুই করতে পারছে না। রাজ্যের মহিলারা খুবই ক্ষুব্ধ। মেদিনীপুর উপ নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বেই। এক হাজার টাকা দিয়ে আর ভোট পাওয়া যাবে না।’