বিদ্যায় অগ্রগতি ও নামী প্রতিষ্ঠানে বিদ্যা লাভের সুযোগ পেতে পারেন। ব্যবসায় শুভ ও আয় বৃদ্ধি। ... বিশদ
রবিবার বেলা ১২টা ২৪ মিনিট। শিল্পশহরের ব্যস্ত এলাকা তারাবাংলা মোড়ে সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডস সংস্থার শোরুমের সামনে হুড়মুড়িয়ে এসে থামে তিনটি বাইক। আরোহী সাতজন। একজনের ব্যাগে কার্বাইন মেশিনগান (সিএমজি)। বাকি ছ’জনের হাতে রিভলবার। তাদের দেখে হতভম্ব হয়ে যান নিরাপত্তারক্ষী। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁর বন্দুক ছিনিয়ে দোকানের ভিতর ঢুকে পড়ে সকলেই। হুড়োহুড়ি পড়ে যায় গোটা শোরুমে। তার মধ্যেই চলে দেদার লুটপাট। ততক্ষণে বাইরে ‘পজিশন’ নিয়ে ফেলেছে পুলিস। দুষ্কৃতীরা অপারেশন শেষ করে বেরতেই শুরু হয়ে যায় তুমুল গুলির লড়াই। মুহূর্তেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। প্রায় ২২ রাউন্ড গুলি চলে বলে সূত্রের খবর। বেগতিক বুঝে একটি বাইক ফেলে বাকি দু’টিতে চড়ে চম্পট দেয় ডাকাতদল। পুলিসের দাবি, গুলিতে জখম হয়েছে এক দুষ্কৃতী। তাকে কোনওরকমে বাইকে তুলে এলাকা ছাড়ে দুষ্কতীদলটি। ভয়াবহ এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে শিল্পাঞ্চলবাসী।
যদিও আতঙ্ক এখানেই শেষ হয়নি। জখম সঙ্গীকে নিয়ে পালানোর পথে আসানসোল দক্ষিণ থানার মহিশীলা এলাকা থেকে একটি গাড়িও ছিনতাই করে দুষ্কৃতীরা। সেখানেও এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ হন গাড়ির মালিক ও স্থানীয় এক ব্যক্তি। রাতেই অবশ্য অভিযানে গাড়িটি উদ্ধার করে পুলিস। ধরা পড়েছে এক দুষ্কৃতীও। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিস কমিশনারেটের ডিসি ধ্রুব দাস জানিয়েছেন, ঝাড়খণ্ডের গিরিডিতে গাড়িটি পাওয়া গিয়েছে। সেখানেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে একজনকে। সে এই ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, এক দুষ্কৃতী দোকানের কাচের দরজা খুলে ঢুকে ব্যাগ থেকে কার্বাইন মেশিনগান বের করছে। বাকিদের হাতে ছিল রিভলবার। ঘটনাচক্রে ঠিক সেই সময় ঘটনাস্থলে চলে আসেন শ্রীপুর ফাঁড়ির আইসি মেঘনাদ মণ্ডল। ডাকাতির ঘটনা বুঝতে পেরেই তিনি শোরুমের পাশে একটি বিদ্যুতের খুটির আড়ালে ‘পজিশন’ নেন। দুষ্কৃতীরা বেরতেই তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকেন। তাতে জখম হয় এক দুষ্কৃতী। তার সঙ্গীরা পাল্টা এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। আহত সদস্যকে নিয়ে গুলি ছুড়তে ছুড়তেই মহাবীর কোলিয়ারির রাস্তা ধরে চম্পট দেয় ডাকাতরা। নিরাপত্তারক্ষীর বন্দুকটি ফেলে যায় একটি খোলামুখ খনির কাছে। পরে সেটি উদ্ধার করে পুলিস।
শোরুমের কর্ণধার সুদীপ রায়ের দাবি, ‘ভিতরে তখন অনেক ক্রেতাই ছিলেন। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দুষ্কৃতীদের ঢুকতে দেখে কেউ মেঝেতে বসে পড়েন, কউে শৌচালয়ে আশ্রয় নেন। আমরা বাধা দেওয়ার সাহস পাইনি। কত সোনা ও অলঙ্কার লুট করেছে, তা স্টকের হিসেব মিলিয়ে দেখা হচ্ছে।’ এপ্রসঙ্গে সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের এমডি ও সিইও শুভঙ্কর সেন বলেন, ‘রানাঘাট ও পুরুলিয়ায় যে কায়দায় ডাকাতি হয়েছিল, এখানেও সেই কায়দায় হয়েছে। প্রশাসনের কাছে আর্জি, ব্যবসায়ীদের উপযুক্ত নিরাপত্তা দেওয়া হোক।’