প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
যাত্রী চাপিয়ে ভাড়ায় যাচ্ছিল টোটোটি। সেটারই সিটের নীচে ব্লাডার ভর্তি চোলাই মদ লুকিয়ে পাচারের আগেই মুরারইয়ের রাজগ্রাম রেলগেটের কাছে সাদা পোশাকে থাকা আবগারি দপ্তরের আধিকারিক ও কর্মীদের হাতে ধরা পড়ে গেল কারবারি। আবগারি দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ধৃতের নাম সেলিম শেখ। বাড়ি পাইকর থানার রুদ্রনগর গ্রামে। মুরারই আবগারি দপ্তরের ওসি মইদুল হক বলেন, মুরারইয়ের ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া ঢুরিয়া গ্রাম থেকে চোলাই মদ চাতরা গ্রামে পাচারের উদ্দেশ্য ছিল। নির্দিষ্ট খবর থাকায় সেই পাচার রোখা গিয়েছে।
বুধবারও টোটোর সিটে নীচে লুকিয়ে চোলাই পাচারের সময় পাইকরে ধরা পড়ে এক পাচারকারী।। ধৃত লক্ষ্মণ মালের বাড়ি মুরারইয়ের শ্রীরামপুর গ্রামে। টোটোর সিটের নীচ থেকে প্লাস্টিক প্যাকেট ভর্তি ১০০ লিটার চোলাই মদ উদ্ধার হয়। সেক্ষেত্রেও ঢুরিয়া থেকে চোলাই নিয়ে আসা হচ্ছিল বলে জেরায় জানায় ধৃত।
উল্লেখ্য, চোলাই মদের আঁতুড় ঘর ঢুরিয়া, মোহনপুর ও লাগালাগি ঝাড়খণ্ডের রাঙামাটি গ্রাম। একাধিকবার এখানে অভিযান চালিয়েছে আবগারি দপ্তর। তারপরও চোলাই মদে রাশ টানা যায়নি। আবগারি দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, ঢুরিয়া আগে অভিযানে গেলেও লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের রাঙামাটিয়া গ্রামে চোলাই পাচার করে দেয় তাঁরা। আবার ঝাড়খণ্ডের আবগারি দপ্তর রাঙামাটি গ্রামে অভিযানে নামলে চোলাই সরিয়ে দেওয়া হয় ঢুরিয়া গ্রামে। ফলে অভিযানে খুব একটা লাভ হয় না। এরই মধ্যে ঝাড়খণ্ডে নির্বাচন রয়েছে। তাই গত ২৫ অক্টোবর বীরভূম ও ঝাড়খণ্ডের আবগারি দপ্তরের আধিকারিকরা যৌথভাবে ওই তিনটি গ্রামে সাঁড়াশি আক্রমণ চালায়। তাতে সাফল্যও এসেছে। ঢুরিয়া গ্রামে ৪০ লিটার, মোহনপুরে ৩২০ লিটার ও রাঙামাটিয়া গ্রামে ৬০ লিটার চোলাই মদ উদ্ধার করে নষ্ট করা হয়। যেগুলি কোথাও জমির ক্ষেতে, কোথাও আবার ডোবায় লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। এছাড়া তিনটি গ্রাম মিলিয়ে ৩৯৬০ লিটার চোলাই তৈরির গুড়, ১২০ কেজি উপকরণ ও ২০টি হাঁড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়। সেই সঙ্গে রাঙামাটি গ্রাম থেকে দু’জন চোলাই প্রস্তুতকারককে গ্রেপ্তার করে ঝাড়খণ্ড আবগারি দপ্তর। গত জুলাই মাসে এখানকার বরুয়া গোপালপুর গ্রামে একটি গোডাউনে অভিযান চালিয়ে ২২.৫ মেট্রিক টন চোলাই তৈরির উপকরণ চিটে গুড় উদ্ধার করে পুলিস ও আবগারি দপ্তর। কিন্তু তারপরও মুরারইয়ে চোলাইয়ের রমরমা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মদ নিষিদ্ধ থাকলেও এই এলাকার তৈরি চোলাই ঝাড়খণ্ড হয়ে বিহারে পাচার করা হচ্ছে। কখনও সাইকেলে, কখনও যাত্রীবাহী বাস, আবার কখনও টোটোয় করে তা ঝাড়খণ্ডে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখান থেকে নির্দিষ্ট এজেন্টের মাধ্যমে তা বিহারে চলে যাচ্ছে। এখানকার থেকে দামও বেশি পাচ্ছে। তাতেই রাতারাতি বড়লোক হতে ঝুঁকি নিয়ে এক শ্রেণির মানুষ চোলাইয়ের অবৈধ কারবার চালিয়ে আসছে।