গৃহে শুভকর্মের আয়োজনে ব্যস্ততা। বন্ধুসঙ্গ ও সাহিত্যচর্চায় মানসিক প্রফুল্লতা। উপার্জন বাড়বে। ... বিশদ
খেজুরিতে রয়েছে প্রাচীন সমৃদ্ধ বন্দরের ধ্বংসাবশেষ। রয়েছে বন্দরের অঙ্গ হিসেবে গড়ে ওঠা দেশের প্রথম ডাকঘর। ঝোপজঙ্গলের মধ্যে মাথা তুলে আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে ভগ্নপ্রায় সেই নিদর্শন। সংরক্ষণের অভাবে তা ক্রমশ ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বছর দেড়েক আগে ডাকঘরটি অবশ্য হেরিটেজের স্বীকৃতি লাভ করেছে। পাশেই রয়েছে ইউরোপীয় সমাধিক্ষেত্র এবং প্রাচীন সেচবাংলো। অদূরেই রয়েছে হুগলি নদীর মোহনা এবং বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল। এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ চোখে পড়ার মতো। খেজুরিতেই রয়েছে অনুকূল ঠাকুরের আশ্রম। বনদপ্তরের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে পরিবেশ-বান্ধব সুসজ্জিত পার্ক। রয়েছে রাজা রামমোহন রায় ও প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের পূর্ণাবয়ব মূর্তি। তাঁরা খেজুরি থেকেই নদীপথে পালতোলা নৌকায় ইংল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। এলাকাটিকে ঘিরে ইতিহাস আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রয়েছে। প্রতিদিনই ইতিহাসবিদ এবং ভ্রমণপিপাসু মানুষজন এলাকায় ঘুরতে আসেন। তাঁদের অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার সম্পূর্ণ করে যান। অন্যদিকে, খেজুরির নিজকসবার হিজলি মসনদ-ই-আলা একটি ঐতিহাসিক তীর্থক্ষেত্র এবং পর্যটন কেন্দ্র। পাঁচ শতাধিক বছরের প্রাচীন মসনদ-ই-আলার মাজার দর্শন এবং তীর্থ করার জন্য প্রতিদিন বহু ধর্মপ্রাণ মুসলিম ভিড় জমান। মসনদ-ই-আলা খেজুরির একমাত্র স্বীকৃত পর্যটন কেন্দ্র। তাই পরিকল্পিত পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি সঙ্গত, এটাই অভিমত এলাকার বাসিন্দাদের।
এদিকে অনেক প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও রসুলপুর নদীর উপর সেতু আজও গড়ে ওঠেনি। খেজুরি-২ ব্লকের একটি বড় অংশের বাসিন্দাদের কাঁথি আসতে কিংবা কাঁথি থেকে বিভিন্ন প্রান্তের লোকজনকে ওই এলাকায় যেতে হলে ভরসা সেই ফেরি সার্ভিস। যদিও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আজ দু’মাস ধরে বোগা-রসুলপুর রুটে পন্টুন জেটি বন্ধ। তাছাড়া খেজুরি এলাকায় আজও সরকারি বাস পরিষেবা চালু হয়নি। কলকাতা কিংবা অন্যান্য জেলায় যেতে হলে লোকাল বাসে চেপে গিয়ে হেঁড়িয়ায় পৌঁছে বাস ধরতে হয়। খেজুরির জনকার বাসিন্দা সুমননারায়ণ বাকরা, হেঁড়িয়ার বাসিন্দা সমরেশ পড়িয়া বলেন, খেজুরিতে অনেক ঐতিহাসিক নির্দশন রয়েছে। সরকারি উদ্যোগে সেগুলি সংরক্ষণ এবং পর্যটনের পরিকল্পনা নেওয়া হলে খুবই ভালো হয়। তবে রসুলপুর নদীর উপর সেতু গড়ে তোলার উদ্যোগ আগে নেওয়া হোক।
খেজুরির বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক বলেন, খেজুরি যাতে পর্যটন সার্কিটের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং এলাকাবাসীর প্রতিটি দাবি পূরণ হয়, তারজন্য আমি সবসময় সচেষ্ট। খেজুরিকে ঘিরে পর্যটন সার্কিট গড়ে তোলা এবং রসুলপুর নদীর উপর সেতুর বিষয়টি ইতিপূর্বে আমি বিধানসভায় উত্থাপন করেছি। আসলে তৃণমূল সরকার এলাকাবাসীর দাবি পূরণ নিয়ে উদাসীন। এলাকায় প্রচারে গিয়ে বিজেপি প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারী বলছেন, রসুলপুর নদীর উপর রাজ্য নয়, কেন্দ্রীয় সরকারই সেতু গড়বে। তৃণমূল সরকার খেজুরিতে কোনও উন্নয়ন করেনি। খেজুরির মানুষকে উন্নয়নের স্বাদ থেকে বঞ্চিত করেছে। এলাকার বিধায়ক আমাদের দলের। এবার সাংসদ একই দলের হলে উন্নয়ন সহজতর হবে।
তৃণমূল প্রার্থী উত্তম বারিক বলেন, আজ পর্যন্ত খেজুরিতে যেটুকু উন্নয়ন হয়েছে, তা তৃণমূল সরকারের আমলে হয়েছে। বিজেপি শুধু ফাঁকা আওয়াজ করছে। খেজুরির জনগণ তৃণমূলকে বেছে নিলে নিশ্চয়ই আমরা দাবি পূরণে সচেষ্ট হব। বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী উর্বশী ভট্টাচার্য বলেন, প্রচারে এলাকার সামগ্রিক উন্নয়নের উপরে জোর দিচ্ছি।