প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
যার এক ছোবলে হাতির মতো প্রাণীও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে, সর্প বিজ্ঞানীরা এতদিন সেই সাপের একটি মাত্র প্রজাতির অস্তিত্বের কথাই জানতেন। সেটি হল ‘ওফিওফেগাস হেনা’। সুন্দরবন সহ বাংলার বিভিন্ন এলাকায়া এদের দেখা মেলে। উত্তরবঙ্গের বহু জঙ্গল, দক্ষিণবঙ্গের ঝাড়গ্রাম, এমনকী দীঘা লাগোয়া একটি জঙ্গলেও সম্প্রতি দেখা মিলেছে। সামগ্রিকভাবে ভারত, ইন্দোনেশিয়া, চিন সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পাওয়া যায় কিং কোবরা। লাগামছাড়া নগরায়ন, ওষুধ তৈরির জন্য বেআইনি বাজারে ক্রমবধর্মান চাহিদা ইত্যাদি একাধিক কারণে বর্তমানে এই সাপের লুপ্তপ্রায় দশা।
দীর্ঘ ১০ বছরের যুগান্তকারী গবেষণা শেষে সদ্য যে নতুন তিন ধরনের শঙ্খচূড়ের কথা জানা গিয়েছে, সেগুলি হল ওফিওফেগাস বাঙ্গারাস (হেনার মতোই রঙ, পাওয়া গিয়েছে ইন্দোনেশিয়ায়), ওফিওফেগাস কলিঙ্গ (গাঢ় জলপাই রঙ, লেজে কালো ডোরা দাগ, পাওয়া গিয়েছে পশ্চিমঘাট পাহাড়ে) এবং ওফিওফেগাস সালভাটানা (ডোরা দাগ নেই, পাওয়া গিয়েছে ফিলিপিনসে)। এই গবেষণায় যুক্ত ছিলেন ভারত ও সুইডেনের মোট ১৩ জন বিজ্ঞানী। কিছুদিন আগে পৃথিবীবিখ্যাত গবেষণা পত্রিকা ‘ইউরোপিয়ান জার্নাল অব ট্যাক্সোনমি’তে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্রটি। কাজের সঙ্গে যুক্ত দু’-তিনটি সাড়া জাগানো নাম ইন্দ্রনীল দাস, ডঃ গৌরী শঙ্কর প্রমুখ। প্রসঙ্গত, ডঃ গৌরী শঙ্কর দীর্ঘদিন ধরে কিং কোবরা নিয়ে কাজ করে চলেছেন।
পৃথিবীর দীর্ঘতম বিষধর সাপ বলে পরিচিত কিং কোবরা। প্রাপ্তবয়স্ক পাইথন ছাড়া প্রায় সব ধরনের বিষাক্ত ও নির্বিষ সাপ এর খাদ্য। এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় যে কিং কোবরার সন্ধান মিলেছে, সেটি ১৯ ফুট দীর্ঘ। তবে সচরাচর একটি পূর্ণবয়স্ক শঙ্খচূড়ের সাইজ ১০-১২ ফুট হয়ে থাকে। বুকসমান উচ্চতায় ফণা তুলতে পারে। বিপদ বুঝলে অসম্ভব আগ্রাসীও বটে। তবে নতুন আবিষ্কৃত তিনটি প্রজাতির দৈর্ঘ্য অবশ্য সামান্য ছোট (৮-১০ ফুট)। ছোট হলেও বিষে কমতি নেই। রাজ্য সরকারের সপার্ঘাতের চিকিৎসার অন্যতম রিসোর্স পার্সন ডাঃ শুভেন্দু বাগ বলেন, ‘নিঃসন্দেহে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার। এই সাপের কামড়ের চিকিৎসায় অবশ্য এর জন্য কোনও পরিবর্তন আসবে না বলেই মনে হয়। তবে মনে রাখতে হবে, এই সাপের বিষ ধারণ করার গ্ল্যান্ড অন্যান্য সাপের থেকে বড়। একবার ছোবলে এরা এত বিষ ঢালতে পারে যে একটি পূর্ণবয়স্ক হাতিরও মৃত্যু হতে পারে। তাই কিং কোবরা কামড়ালে এক মুহূর্তও দেরি না করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত।’ প্রসঙ্গত, বছরকয়েক আগে পৃথিবীখ্যাত সর্প বিশেষজ্ঞ ডঃ রোমিউলাস হুইটেকারের ঘনিষ্ঠ এক সর্প বিশেষজ্ঞ কিং কোবরা ধরতে গিয়ে কামড় খেয়েছিলেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার মতো সময়ও মেলেনি।