অলকাভ নিয়োগী, বিধাননগর: সেনা, নৌসেনা, বায়ুসেনাসহ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনে ভারতীয় সামরিক বাহিনীতে কর্মরত রয়েছেন অসংখ্য জওয়ান। বিভিন্ন সময় তাঁদের চাপের মুখে কাজ করতে হয়। নানা কারণে তাঁদের পেয়ে বসে টেনশন বা উদ্বেগ, সঙ্গে রয়েছে পরিবারের ভাবনাও। তাই সেনা জওয়ানদের প্রয়োজন মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা, যাতে অবসাদগ্রস্ত হয়ে না পড়েন তাঁরা। তাই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের উদ্যোগে দেশের সামরিক বাহিনীর জওয়ানদের জন্য চালু হল মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তার বিশেষ হেল্পলাইন। এই ব্যাপারে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণের মন্ত্রকের একটি মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। পুনের আর্মড ফোর্সেস মেডিক্যাল কলেজে দু’বছরের জন্য একটি পাইলট প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ‘টেলি মানস’ প্রকল্পের সঙ্গেই যুক্ত করা হল সেনাকে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতীয় সামরিক বাহিনীর জওয়ানরা নানা চাপের সম্মুখীন হন। কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ, সাংস্কৃতিক চ্যালেঞ্জ এবং আঞ্চলিক সংঘাতসহ নানা কারণে মানসিক চাপে থাকেন জওয়ানরা। তার জন্য টেলি-মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রয়োজন। কারণ, প্রত্যেকেরই মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া উচিত। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের ‘টেলি মানস’ প্রকল্পটি সর্বসাধারণের জন্য চালু রয়েছে। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে এই প্রকল্পটি দেশজুড়ে চালু হয়েছে। সারা দেশে ৩৬টি রাজ্য এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল মিলিয়ে ৫১টি অপারেশনাল টেলি মানস সেল কাজ করছে, যেখানে ফোনে মানসিক স্বাস্থ্যের সহায়তা পাওয়া যায়। ২০টি ভিন্ন ভাষায় এই পরিষেবা দেওয়া হয়।
গত ২০ মাসে টেলি মানস সেলে ১০ লক্ষের বেশি ফোন কল এসেছে। গড়ে প্রতিদিন সাড়ে ৩ হাজারের বেশি। এবার এই সেলের সঙ্গেই সামরিক বাহিনীকে যুক্ত করা হল। গত ৫ জুন পুনের আর্মড ফোর্সেস মেডিক্যাল কলেজে আগামী দু’বছরের জন্য এই প্রকল্পের মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর এই আর্মড ফোর্সেস মেডিক্যাল কলেজে বিশেষ টেলি-মানস সেলের উদ্বোধন করেছিলেন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ, জেনারেল অনিল চৌহান। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, সামরিক বাহিনীর জওয়ানরা সপ্তাহের সাতদিনই যেকোনও সময় অর্থাৎ, ২৪ ঘণ্টা এই পরিষেবা পাবেন। ওইসঙ্গে এই পরিষেবা পাবেন তাঁদের পরিবারের সমস্ত সদস্যও। কারণ, তাঁরাও উদ্বেগে থাকেন। তাই এই প্রকল্পে উপকৃত হবেন সকলেই।