প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
উল্লেখযোগ্য তথ্য হল, মস্তিষ্কের মৃত্যুর পর এই অঙ্গদানের সুবাদে ইতিহাস গড়ল রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্র। আরও নির্দিষ্টভাবে বললে রাজ্যের এক নম্বর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল পিজি ইতিহাস তৈরি করল। এই প্রথমবার হার্ট ও ফুসফুস একইসঙ্গে প্রতিস্থাপিত হল পিজিতে। গ্রহীতা দক্ষিণ ২৪ পরগনার ধূলাহাট থানা এলাকার বাসিন্দা ১৮ বছরের শৈবাল নস্কর (নাম পরিবর্তিত)। তিনি জন্মগত জটিল অসুখে (টিজিএ বা ট্রান্সপোজিশন অব গ্রেট আর্টারিস-গুরুত্বপূর্ণ ধমনিগুলি স্বাভাবিকের বদলে অন্যত্র অবস্থান করা) ভুগছিলেন। অরুণবাবুর পরিবারের সম্মতিক্রমে সোমবার বিকেল সাড়ে চারটে থেকে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের প্রস্তুতি শুরু হয়। রাত ন’টা নাগাদ শুরু হয় মূল প্রতিস্থাপন পর্ব। চলে সকাল সাড়ে সাতটা পর্যন্ত। এর মধ্যে মূল অপারেশন পর্ব ছিল সাড়ে তিন ঘণ্টার। পিজি সূত্রে খবর, শৈবালের অবস্থা স্থিতিশীল। এছাড়া অরুণবাবুর শরীরের বাদবাকি অঙ্গগুলির মধ্যে একটি কিডনি বাদে সবগুলিই পেয়েছেন পিজি’র রোগীরা। দু’টি কিডনির একটি পেয়েছেন পিজিতে চিকিৎসাধীন ২৮ বছর বয়সি এক মহিলা। অন্যটি পেয়েছেন আলিপুরের কমান্ড হাসপাতালের ৩২ বছরের এক মহিলা। লিভার পেয়েছেন পিজি’র ৫১ বছর বয়সি এক প্রৌঢ়া। অরুণবাবুর ত্বক দান করা হয়েছে একটি স্কিন ব্যাঙ্কে। অগ্নিদগ্ধ রোগীদের স্কিন গ্রাফটিং-এ তা কাজে আসবে। আর চোখের দু’টি কর্নিয়া দিয়ে দু’জনের দৃষ্টি ফিরবে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অরুণবাবুর জামাই সত্যজিৎ মণ্ডল বলেন, ১০ মে রাতে একটি বিয়েবাড়িতে যাচ্ছিলাম। রাস্তায় শ্বশুরমশাইকে হঠাৎ একটি স্কুটি ধাক্কা মারে। তিনি মাথার পিছনে চোট পান। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় স্থানীয় একটি সরকারি হাসপাতালে ও পরে টালিগঞ্জের এমআর বাঙুরে নিয়ে যাই। ওরা সিটি স্ক্যান করে বাঙ্গুর ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস’এ নিয়ে যেতে বলে। ওরা পিজি’র ট্রমা সেন্টারে পাঠায়। অপারেশন হয়। বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু ১২ তারিখ রাতে ব্রেন ডেথ হয় শ্বশুরমশাইয়ের। ওঁর ছেলে (হরিদাস কুলে), মেয়ে (মামনি কুলে), স্ত্রী ও পরিবারের বাকিরা মিলে অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গ্রহীতাদের শরীরে বেঁচে থাকবেন উনি।
প্রতিস্থাপন টিমের সদস্য কার্ডিওথোরাসিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ শিল্পা বসু রায় বলেন, ‘হার্ট ও ফুসফুসের একযোগে প্রতিস্থাপন হয়েছে। অপারেশন সফল। কিন্তু এতগুলি বছর ধরে জন্মগত ত্রুটির সঙ্গে যুবকটির শরীর অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল। এখন স্বাভাবিক করার চেষ্টা হতেই শরীর বাধ সাধছে। আমরা লড়ে যাচ্ছি।’