প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
জেতার জন্য চতুর্থ ইনিংসে দরকার ছিল ৩৫৯। কিন্তু আড়াইশোও পেরনো যায়নি। প্রথম ইনিংসে কেঁদে-কঁকিয়ে ১৫৬ তোলার পর দ্বিতীয় ইনিংসের যবনিকা ২৪৫ রানে। মহাতারকায় ভর্তি ব্যাটিং লাইন-আপকে দেখাল নিষ্প্রাণ মিছিলের মতো। মিচেল স্যান্টনারের ম্যাজিক স্পেলে রীতিমতো দমবন্ধকর পরিণতি সুপারস্টারদের। ১৩ উইকেট নিয়ে বাঁ হাতি স্পিনারই ভাঙলেন গৌতম গম্ভীরের ছাত্রদের যাবতীয় গরিমা। মজার ব্যাপার হল, স্যান্টনারের উইকেট সংখ্যার চেয়েও দুই ইনিংস মিলিয়ে রোহিতের রান কম!
একই রকম দশা বিরাট কোহলির। প্রচারে, বিজ্ঞাপনে, স্পনসরে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই ব্যাট থেকে উধাও রান। একদা একসঙ্গে উচ্চারিত হওয়া জো রুট আলোকবর্ষ দূরে এগিয়ে গিয়েছেন। এখন শচীন তেন্ডুলকরের টেস্ট রান টপকে যাওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি করেছেন। আর ভিকে কত কুৎসিতভাবে আউট হওয়া যায়, তার প্রদর্শনী মেলে ধরছেন একের পর এক ইনিংসে। এদিন তো মাঠ থেকে ফিরে ড্রেসিং রুমের সামনে ব্যাট দিয়ে সজোরে আইসপ্যাকে মারতে দেখা গেল বিরাটকে। ব্যর্থতা, হতাশা, যন্ত্রণা মিলেমিশে একাকার হয়ে যাওয়া সেই মুহূর্ত যথার্থই প্রতীকী। কে ভেবেছিল শ্রীলঙ্কার কাছে ০-২ দুরমুশ হওয়া কিউয়িরা এদেশে এসে মহাপরাক্রমশালী ভারতকে এমন নাকের জলে, চোখের জলে করবে!
একমাত্র যশস্বী জয়সওয়ালকে দেখে মনে হচ্ছিল ঘূর্ণি পিচেও বিপক্ষকে চাপে রাখার ক্ষমতা রাখেন। ছাড়ার বল ছাড়ব আর মারার বল মারব, এই ছিল তাঁর মন্ত্র। কিন্তু তিনি আউট হতেই তাসের ঘরের মতো হুড়মুড় করে ধসে গেল ইনিংস। ঋষভ পন্থের রান আউট বাদ দিলে সবাই স্পিনের ফাঁদে খতম। কোন বলটা ঘুরবে, কতটা ঘুরবে কিংবা কোনটা স্ট্রেটার, কোনটা আর্মার বোঝার আগেই ফেরার টিকিট কনফার্মড হয়ে গেল একের পর এক ব্যাটারের। নিজের দেশেই যদি স্পিন খেলার স্কিল না থাকে তাহলে অস্ট্রেলিয়ায় পেস-বাউন্স সামলানো যাবে কোন মন্ত্রে? এখন যা পরিস্থিতি তাতে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠতে বাকি ছয় টেস্টের মধ্যে চারটিতেই জিততে হবে। অর্থাৎ, ওয়াংখেড়েতে নিয়মরক্ষার শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারাতে পারলে ব্র্যাডম্যানের দেশে তিনটি টেস্ট জিতলেই চলবে। কিন্তু বেঙ্গালুরু টেস্টে ৪৬ রানে অল আউটের কলঙ্কে তো সিম-সুইংয়ের বিরুদ্ধে অক্ষমতাই বিজ্ঞাপিত। আবার পুনেতে ঘুর্ণি পিচেও ফুটে উঠল অসহায়তা। ফলে রোহিতদের ঘিরে স্বপ্ন দেখার সাহস কোথায়!
টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে লম্বাচওড়া অনেক ভাষণই দিয়েছিলেন কোচ গৌতম গম্ভীর। আগ্রাসী ক্রিকেটের পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ টিকে থেকে ম্যাচ বাঁচানো, সবটাই নাকি পারে এই দল। পর পর দুই টেস্টে মুখ থুবড়ে পড়ার দায় এড়াতে পারেন না তিনিও। নিজের পছন্দের সাপোর্ট স্টাফ সহ যা চেয়েছেন তাই পেয়েছেন। তারপরও শ্রীলঙ্কায় ২৭ বছর পর ওডিআই সিরিজে হারতে হয়েছে। এবার ভারতে এসে টেস্ট সিরিজে ঘোল খাওয়াল নিউজিল্যান্ড। পতন ঘটল এক যুগের অক্ষত কেল্লার। তাৎপর্যের হল, ২০১২ সালে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে যাওয়া টেস্ট সিরিজের ভারতীয় ওপেনার ছিলেন গম্ভীর। আর এবার তিনি কোচ। আশ্চর্য সমাপতনই বটে!