বিদ্যায় অগ্রগতি ও নামী প্রতিষ্ঠানে বিদ্যা লাভের সুযোগ পেতে পারেন। ব্যবসায় শুভ ও আয় বৃদ্ধি। ... বিশদ
জানা গিয়েছে, রবিবার সাঁতুড়ি ব্লক দপ্তরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়। সেখানে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কারখানা কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের আধিকারিকরা বৈঠক করেন। বৈঠকে আপাতত কারখানা কর্তৃপক্ষ জগন্নাথডি গ্রামকে উন্নয়নের কাজের জন্য মাসিক কিছু টাকা দেওয়া হবে বলে চুক্তিবদ্ধ হয়। পাশাপাশি গ্রামবাসীদের তরফ থেকে কারখানা কর্তৃপক্ষকে বাইপাস করার জন্য তিন বছর সময় দেওয়া হয়েছে। সেটাই লেখা হয়েছে ওই চুক্তিপত্রে।
মধুকুণ্ডা এলাকায় দুটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানা রয়েছে। এতদিন মধুকুন্ডা বাজার থেকে জগন্নাথডি গ্রামের ভিতরের রাস্তা দিয়ে কারখানার যানবাহনগুলি যাতায়াত করত। কিন্তু দুর্ঘটনায় এড়াতে ওই গ্রামের বাসিন্দারা কারখানা কর্তৃপক্ষকে বাইপাস রাস্তা করার জন্য এক বছর সময় দিয়েছিল। সময় পেরিয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ বাইপাস করার উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ। তাই গত ৩১ আগস্ট থেকে গ্রামের বাসিন্দারা রাস্তা বন্ধ করে দেয়। দু’টি কারখানার যাতায়াতের মূল রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে কারখানায় উৎপাদিত মাল নিয়ে গাড়িগুলি বের হতে পারে না। অন্যদিকে, কাঁচামাল নিয়ে গাড়িগুলি কারখানায় ঢুকতে পারছিল না। বাধ্য হয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ উৎপাদনের কাজ বন্ধ করে দেয়। কারখানার উৎপাদন কাজ বন্ধ হয়ে পড়ায় শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে পড়েন। চলে দীর্ঘ আন্দোলন।
গ্রামবাসীদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, গ্রামের ভিতর দিয়ে রাস্তা। তাই সব সময় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যে কারখানার গাড়িতে চাপা পড়ে গ্রামের দু’জন যুবক মারা গিয়েছেন। তারপরেই কারখানা কর্তৃপক্ষকে বাইপাস রাস্তা করার জন্য আমরা জানিয়ে এসেছি। গত বছর একটি দুর্ঘটনা ঘটে। একজন যুবক মারা যান। তখন লিখিতভাবে রাস্তার জন্য আবেদন করা হয়। তাতে জানানো হয়েছিল, চলতি বছরে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত মধ্যে কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের যানবাহন চলাচলের জন্য বাইপাস রাস্তা করবে। দীর্ঘ এক বছর পেরিয়ে গেলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ রাস্তা না করায় আমরা যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিলাম। আপাতত কারখানা কর্তৃপক্ষকে বাইপাস করার জন্য তিন বছর সময় দেওয়া হয়েছে।
শ্রমিকদের মধ্যে সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়, জগন্নাথ বাউরি বলেন, আমরা প্রায় ৪০০ টি পরিবার কাজ হারিয়ে পথে বসতে চলেছিলাম। আগস্ট মাস কাজ করলেও বেতন পায়নি। সেপ্টেম্বর মাসে ১৩ দিন কাজ করেছিলাম। সামনে পুজো। বেতন, বোনাস কিছুই পাব না ভেবে দিশাহীন হয়ে পড়েছিলাম। কারখানা আবার পুনরায় চালু হচ্ছে। আমরা ভীষণ খুশি।
এদিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সাঁতুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি রামপ্রসাদ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, এদিন ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করা হয়েছে। গ্রামবাসীদের তরফ থেকে আপাতত কারখানা কর্তৃপক্ষকে বাইপাস করার জন্য তিন বছর সময় দেওয়া হয়েছে। যতদিন না পর্যন্ত কারখানা কর্তৃপক্ষ বাইপাস করবে, ততদিন দুই কারখানার তরফ থেকে গ্রামবাসীদের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য টাকা দিতে হবে। পুজোর আগে দুই কারখানার জট কেটে যাওয়ায় আমরাও খুশি হয়েছি। বালিতোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান প্রকাশ চক্রবর্তী বলেন, রাস্তা বন্ধের দিন থেকে আমরা বিভিন্নভাবে বৈঠক করে যান চলাচল সচল করার চেষ্টা করেছিলাম। একাধিক বৈঠকেও সমস্যার সমাধান হয়নি। এদিন সমস্যার সমাধান হওয়ায় পুজোর আগে অনেকটা স্বস্তি মিলেছে। একটি কারখানার জিএম অনিল রজক বলেন, গ্রামবাসীদের তরফ থেকে কিছু দাবি ছিল। আমরা সেই দাবি মেনে নিয়েছি। বাইপাস রাস্তার জন্য তিন বছর সময় দেওয়া হয়েছে। আমরা বাইপাস রাস্তার জন্য জমি দেখা শুরু করেছি।