হস্তশিল্পীদের কর্মে সাফল্য ও সুনাম। সন্তানের সঙ্গে মতবিরোধ হতে পারে। ধর্মকর্মে মনোযোগ বাড়বে। ... বিশদ
প্রসঙ্গত, কান্দি মহকুমা এলাকা নদীমাতৃক এলাকা বলেই পরিচিত। এই এলাকার উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে ময়ূরাক্ষী, কানা ময়ূরাক্ষী, কুয়ে, বাবলা, দ্বারকা, ব্রাহ্মণী ইত্যাদি বড় নদীগুলি। এছাড়াও কয়েকটি শাখানদী ও পুরনো ক্যানেল রয়েছে। ওই নদীগুলি থেকে বৈধ ও অবৈধভাবে বছর বছর বালি ও মাটি তুলে পাচার হচ্ছে। কোথাও সরকারিভাবে বালি ঘাট রয়েছে। আবার কোথাও প্রশাসনের নজর এড়িয়ে তোলা হচ্ছে বালি ও মাটি। ভরতপুর থানার ইব্রাহিমপুরের প্রবীণ বাসিন্দা আলিমুদ্দিন শেখ বলেন, কয়েকবছর আগেও ময়ূরাক্ষী নদী বালি ভর্তি ছিল। এখন সেখানে শক্ত মাটি। একসময় একটি মাত্র পাইপ বসিয়ে জলস্তর মিলত। সেখানে ১৮০ ফুট গর্ত করেও জলস্তর পাওয়া যাচ্ছে না। আর এসবের কারণ হল নদীর জল শোষণ ক্ষমতা কমে যাওয়া। নদীর বুকে থেকে বালি মাটি তুলে নেওয়ার ফলে এই বিপত্তি নেমে এসেছে বলে আমাদের অনুমান। একই পরিস্থিতি কুয়ে নদীর। ওই নদীর তালগ্রাম ঘাটে এখন আর বালি মেলে না। সেখানে রাফ বালির নাম করে নদীগর্ভের মাটি তুলে পাচার করা হচ্ছে বলে বাসিন্দাদের দাবি। যদিও ওই বালিঘাটের এক অংশীদার বলেন, সরকারি খাজনা দিয়ে বালিঘাটের ডাক নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বালি পাওয়া যাচ্ছে না। তাই টাকা তোলার জন্য বালি মিশ্রিত মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। আর এসবের ফলে নদী তার বাস্তুতন্ত্র হারাচ্ছে বলে পরিবেশবিদ ও ভূতত্ত্ববিদরা জানাচ্ছেন। তাঁদের দাবি, জলের অভাবে নদীর মাছ অনেক আগেই হারিয়ে গিয়েছে। নদীগর্ভে বালিও পাওয়া যাচ্ছে না। এখন শুধুই শক্ত মাটি মিলছে। নদীর উর্বর মাটিও কেটে নেওয়া হয়েছে। তাই নদী যেমন জলধারণ ক্ষমতা হারিয়েছে। তেমনি বাস্তুতন্ত্রও হারিয়ে গিয়েছে। নদীর অববাহিকার ক্ষেত্রেও পরিবর্তন এসেছে। কান্দির বিশিষ্ট ভূতত্ববিদ সূর্য্যেন্দু দে বলেন, নদীগর্ভ থেকে বালি ও মাটি তুলে নেওয়ার ফলে বাস্তুতন্ত্রের বদল এসেছে। এনিয়ে আমরা বড়ই চিন্তিত। এর ফলে একদিকে যেমন নদীর অস্তিত্ব হারাতে বসেছে, তেমনি ভূগর্ভের জলস্তর নেমে গিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এনিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কান্দির পরিবেশবিদ কৌশিক সেনগুপ্ত বলেন, কয়েক বছর ধরে আমরা বিভিন্ন এলাকায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি নিয়ে কাজ করে চলেছি। নদী নিয়েও আমরা চিন্তিত। নদী থেকে যেভাবে বালি মাটি তুলে নেওয়া হচ্ছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। তাই আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এলাকার প্রত্যেক নাগরিক চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।