ব্যবসায় বেচাকেনা বেশ ভালো হবে। কাজকর্মে কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তির আনুকূল্য লাভ ও ভাগ্যোন্নতি। ... বিশদ
সময় কত সহজেই না পেরিয়ে যায়। কিলিয়ান এমবাপে নামের সেদিনের সেই কিশোর এখন যুবক। স্বপ্ন সফলও হয়েছে। নায়কের মতো তিনিও এখন বিপক্ষ রক্ষণের ত্রাস। সবচেয়ে বড় কথা, শুক্রবার তাঁর প্রতিপক্ষ সিআরসেভেন। স্লোভেনিয়ার বিরুদ্ধে জয়ের পর পর্তুগিজ মহাতারকা জানিয়েছেন, এটাই তাঁর শেষ ইউরো। শুক্রবার কি এই প্রতিযোগিতার শেষ ম্যাচ খেলে ফেলবেন রোনাল্ডো? উত্তর নির্ভর করছে তাঁরই অনুরাগী কিলিয়ান এমবাপের উপর।
২০১৬ ইউরো ফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়েছিল পর্তুগাল। আর আজ শেষ চারে ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি এই দুই দল। এখনও পর্যন্ত ফ্রান্স এবং পর্তুগালকে চেনা ছন্দে পাওয়া যায়নি। এমবাপে, গ্রিজম্যান, কন্তে সমৃদ্ধ ফরাসি ব্রিগেড গ্রুপ পর্বে জিতেছে মাত্র একটি ম্যাচে। রাউন্ড অব সিক্সটিনে বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে জয় আত্মঘাতী গোলের সৌজন্যে। তবে দেশঁর দল এখনও পর্যন্ত একটিমাত্র গোল হজম করেছে। পক্ষান্তরে, রবার্তো মার্তিনেজের পর্তুগাল সহজে শেষ আটে পৌঁছয়নি। গত ম্যাচে স্লোভেনিয়ার বিরুদ্ধে জয় টাই-ব্রেকারে। তা সত্ত্বেও ফুটবলপ্রেমীদের আশা, গতির বিস্ফোরণে দুই প্রজন্মের লড়াই তাঁদের মুগ্ধ করবে।
ফুটবল বিশ্বকে একাধিক তারকা উপহার দিয়েছে এই দুই দেশ। ফ্রান্সের তালিকায় রয়েছেন জাঁ ফঁতে, মিশেল প্লাতিনি, জিনেদিন জিদান, থিয়েরি অঁরি, কিলিয়ান এমবাপেরা। আর ইউসেবিও, লুইস ফিগো, ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোরা পর্তুগালের গর্ব। ফ্রান্সের প্রথম বিশ্বকাপ জয় ১৯৯৮ সালে। সেই বছরই পৃথিবীর আলো দেখেন এমবাপে। বছর ছয়েক পরে অর্থাৎ ২০০৪ ইউরোয় পর্তুগালের দুরন্ত পারফরম্যান্স। ফিগো, ডেকো, রুই কস্তাদের চোখ ধাঁধানো খেলা ফাইনালে থামিয়ে দেয় চ্যারিস্টিয়াসের গ্রিস। ২০১৬’য় অবশ্য সেই আক্ষেপ মেটান রোনাল্ডোরা। সেটাই পর্তুগাল এবং তাঁর প্রথম ট্রফি। পরে উয়েফা নেশনস লিগও জিতেছেন সিআরসেভেন (২০১৮-১৯)।
২০০৩ সালে জাতীয় দলে যাত্রা শুরু রোনাল্ডোর। ট্রফির স্বাদ পেতে তাঁকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৩ বছর। এমবাপে অবশ্য এক্ষেত্রে সৌভাগ্যবান। ২০১৭’য় প্রথম ম্যাচ। আর পরের বছরই বিশ্বসেরার সম্মান। কাতারে মেসির আর্জেন্তিনার কাছে না হারলে দু’টি বিশ্বকাপ এখন থাকত এমবাপের কাছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলেন, খুব তাড়াতাড়ি সাফল্যের সন্ধান পেয়ে ফোকাস হারিয়েছে দেশঁর দল। চলতি ইউরোতে তাঁদের ভুল প্রমাণে মরিয়া গ্রিজম্যানরা।
শুক্রবারের ম্যাচ শুধুই এমবাপে বনাম রোনাল্ডোর নয়। তাকিয়ে থাকতে হবে গ্রিজম্যান এবং বার্নার্ডো সিলভার দিকেও। বুদ্ধিদীপ্ত ফুটবল খেলেন দু’জনেই। তাই তাঁদের থামাতে তৈরি রবার্তো মার্তিনেজ এবং দিদিয়ের দেশঁ। এছাড়া দুই দলের উইং ব্যাক কানসেলো এবং হার্নান্ডেজকে অতি সক্রিয় থাকতে হবে।
শুক্রবার একে অপরকে টেক্কা দিতে নামবেন এমবাপে ও রোনাল্ডো। তবে কেরিয়ারের শেষ ইউরোয় জয়ের খিদে সামান্য হলেও বেশি থাকা উচিত পর্তুগিজ মহাতারকার। অনেকেই হয়তো জানেন না, এমবাপেকে সতীর্থরা ডাকেন ‘দোনাতেলো’ বলে। নিনজা টার্টল সিরিজের এই চরিত্রের সঙ্গে তাঁর নাকি যথেষ্ট মিল রয়েছে। উল্টোদিকে, রোনাল্ডো আবার পরিচিত ‘এল বিচো’ নামে। বাংলায় যার অর্থ ছারপোকা। বিপক্ষ ডিফেন্ডারদের রক্ত শুষে নেওয়াই তাঁর একমাত্র কর্তব্য। তাহলে কি শুক্রবারের মহারণে ‘এল বিচো’র থেকে ব্যাটন যাবে ‘দোনাতেলো’র কাছে? নাকি কেরিয়ারের গোধূলিতে শ্রেষ্ঠত্ব কায়েম রাখবেন এমবাপের স্বপ্নের নায়ক?