ব্যবসায় বেচাকেনা বেশ ভালো হবে। কাজকর্মে কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তির আনুকূল্য লাভ ও ভাগ্যোন্নতি। ... বিশদ
টিম ইন্ডিয়ার বিজয়যাত্রা শুরু হওয়ার কথা ছিল বিকেল পাঁচটায়। প্রস্তুতিও ছিল সারা। নরিম্যান পয়েন্ট থেকে মেরিনড্রাইভ হয়ে চ্যাম্পিয়নদের পৌঁছনোর কথা ছিল ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে। বিশ্বকাপ জয়ের উৎসবে যোগ দেওয়ার জন্য ক্রিকেটপ্রেমীদের আহ্বান জানিয়েছিলেন রোহিত শর্মা। তাতে সাড়া দিয়ে দূর দূরান্ত থেকে ক্রিকেটপ্রেমীরা ছুটে এসেছিলেন নায়কদের এক পলক দেখার আশায়। দীর্ঘ অপেক্ষা। তার উপর প্রবল বৃষ্টি। ধৈর্যচ্যুতি ঘটলেও জায়গা হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে কেউ নড়লেন না। অবশেষে দেখা মিলল চ্যাম্পিয়নদের। নীল রংয়ের দোতালা বাসের সামনের দিকে হার্দিক পান্ডিয়া, অক্ষর প্যাটেলরা দর্শকদের দিতে হাত নাড়লেন, চুম্বন ছুড়লেন। গায়ে তেরঙ্গা পতাকা। ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মাকে দেখা গেল বিরাট কোহলির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে উৎসবে সামিল হতে। শক্ত হাতে দু’জনে তুলে ধরলেন বহুকাঙ্খিত টি-২০ বিশ্বকাপ ট্রফি। ভিড়ের মধ্যে থেকে উঠল গর্জন, ‘মুম্বই কা রাজা রোহিত শর্মা...।’ ঐতিহাসিক মুহূর্তকে সকলেই চাইছিলেন মোবাইল ক্যামেরায় বন্দি করতে। অনেকেই নানা উপায়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করলেন স্বপ্নের নায়কদের। কেউ কেউ উঠে পড়েছিলেন গাছের মগডালে। সেখান থেকেই চলল ছবি তোলার পর্ব, যা দেখে স্থম্ভিত ক্রিকেটাররাও।
দীর্ঘ ১৩ বছরের প্রতীক্ষার অবসানেই হয়তো এমন মুহূর্ত তৈরি হয়। ভারত শেষবার বিশ্বকাপ জিতেছিল ২০১১ সালে, এই ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে। শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পর মধ্যরাতের মেরিনড্রাইভে সুর্যোদয় দেখেছিল গোটা বিশ্ব। তারপর এক দশক কেটে গেলেও ভারতের ঝুলিতে আসেনি বিশ্বসেরার ট্রফি। অবশেষে খরা কাটল দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে। তাই বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস টি-২০ চ্যাম্পিয়নদের নিয়ে। যেমনটা দেখা গিয়েছিল ২০০৭ সালে মহেন্দ্র সিং ধোনিদের ঘিরে।
বিজয়ীদের স্বাগত জানাতে কার্পণ্য করেনি বাণিজ্যনগরী। মুম্বই বিমানবন্দরে ভারতীয় দলকে দেওয়া হয় ওয়াটার ক্যানন স্যালুট। রানওয়েতে বিমানকে পথ দেখায় তিনটি গাড়ি। মাঝের গাড়িতে উড়ছিল জাতীয় পতাকা। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ছিল বেশ আঁটসাঁট। বিজয়যাত্রার শেষে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে কোহলি, রোহিতদের দেওয়া হল রাজকীয় সংবর্ধনা। ‘চাক দে ইন্ডিয়া...’ গানের তালে নাচলেন সকলে। ক্রিকেটারদের সঙ্গে জাতীয় সঙ্গীতে গলা মেলান দর্শকরাও। রোহিত বলেন, ‘এই জয় শুধু ক্রিকেটারদের নয়, দেশবাসীরও। ১৪০ কোটি ভারতবাসী চেয়েছিল আমরা এবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশে ফিরি। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আপনাদের ভালোবাসায় আমরা আপ্লুত।’ আবেগ চেপে রাখতে পারেননি কোহলিও। তিনি বলেন, ‘২০১১ সালে বিশ্বকাপ জেতার পর সিনিয়রদের কাঁদতে দেখে অবাক হয়েছিলাম। আজ আমার অবস্থা একই রকম।’ চোখ ছলছল করছিল রাহুল দ্রাবিড়েরও। তিনি বললেন, ‘এই মুহূর্ত কখনও ভোলার নয়। আমি আপ্লুত।’