বিদ্যায় অগ্রগতি ও নামী প্রতিষ্ঠানে বিদ্যা লাভের সুযোগ পেতে পারেন। ব্যবসায় শুভ ও আয় বৃদ্ধি। ... বিশদ
পুরনো স্মৃতির ভিড়ে মন ভারাক্রান্ত। অজান্তে ঝাপসা হচ্ছে দু’চোখ। টিকে চাত্তুনি না থাকলে হয়তো খেপ খেলেই শেষ হয়ে যেত আপনাদের আদরের বিজয়ন। চরম দারিদ্র তখন নিত্যসঙ্গী। দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোটানো দায়। বাধ্য হয়ে ত্রিশূর স্টেডিয়ামে দাদার সঙ্গে সোডা বিক্রি করতাম। পাশাপাশি ফুটবল মাঠে খেপুড়ে হিসাবে বেশ নামডাক। বেতের মতো হিলহিলে চেহারা নিয়ে সিরিয়াস ফুটবল খেলব, এই স্বপ্ন দেখা নেহাতই বাতুলতা। স্থানীয় টুর্নামেন্টে আমার খেলা দেখে চাত্তুনি স্যরের কাছে নিয়ে গেলেন এক ভদ্রলোক। মূলত তাঁর পীড়াপীড়িতে আমাকে দলে নেন স্যর। পুকুর থেকে যেন মাঝ সমুদ্রে এসে পড়লাম। হাবুডুবু খেতে থাকা সেই বিজয়নের হাত ধরলেন মিস্টার টিকে চাত্তুনি। প্রথাগত ট্রেনিং, প্র্যাকটিস, শৃঙ্খলা, ফুটবলের ব্যাকরণ— পরম যত্নে চাতুনি শিখিয়েছিন সবকিছু। কেরল পুলিস তখন দুর্ধর্ষ দল। প্রথমদিনের অনুশীলনে তেমন সুবিধা করতে পারিনি। এক্ষেত্রেও মুশকিল আসান চাত্তুনি স্যর। তাঁর অনুরোধেই দ্বিতীয় দিন প্র্যাকটিসে নামার সুযোগ পাই। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। সত্যেন, পাপ্পাচানদের নিয়ে গড়া কেরল পুলিসকে সমীহ করত বাঘা বাঘা ভারতীয় দল। চাত্তুনি স্যর কিন্তু এখানেই থেমে থাকেননি। চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসতেন তিনি। তাঁর কোচিংয়ে প্রথমবার জাতীয় লিগ চ্যাম্পিয়ন হয় মোহন বাগান। ফুটবলের মক্কার দর্শকদের প্রবল চাপ সামলানোর পরীক্ষাতেও সসম্মানে উত্তীর্ণ তিনি। যুবভারতীতে প্রায় এক লাখ দর্শকের সামনে ইস্ট বেঙ্গলকে হারিয়ে ফেড কাপ ঘরে তোলে সালগাওকর। ব্রুনো কুটিনহো, ফ্র্যাঙ্কি ব্যারেটোরা ঝড় তোলে ভারতীয় ফুটবলে।
স্যর কম কথার মানুষ। জানতেন, কীভাবে ফুটবলারদের সেরাটা আদায় করে নিতে হয়। খেলোয়াড়দের মানসিকতা বুঝতে তাঁর জুড়ি নেই। বিশেষ করে জুনিয়র ফুটবলার তুলে আনার ক্ষেত্রেও খুবই সফল তিনি। না ফেরার দেশে শান্তিতে ঘুমোন আমার চাত্তুনি স্যর।