চিকিৎসাশাস্ত্রের অধ্যয়নে বিশেষ উন্নতি ও সাফল্যের যোগ। কর্মস্থল পরিবর্তন ও উপার্জন বৃদ্ধির সম্ভাবনা। মনে অস্থিরতা। ... বিশদ
জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নাবালিকা মায়েদের এবার প্রচারে নামানো হয়েছে। চেতনা গ্রুপ তৈরি করে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে গিয়ে তারা নাবালিকাদের বোঝাচ্ছে। বাল্যবিবাহের মতো সামাজিক সমস্যা নির্মূল করা এই গ্রুপের মূল লক্ষ্য। এঁরা মূলত কন্যাশ্রী ক্লাবের মেয়েদের স্কুলে সচেতনতার বার্তা দেয় ও বিভিন্ন ধরনের কাজে যুক্ত থেকে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের কাজ করে চলেছে।
বহরমপুর ব্লকের শর্মিলা বিবি বলেন, আমি ছোটবেলায় খেলাধুলায় পারদর্শী ছিলাম, স্বপ্ন ছিল দেশ-বিদেশে খেলতে যাব, কিন্তু আমার আত্মীয়ের সঙ্গে বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের পরে পড়াবে এমন প্রতিশ্রুতি দিলেও সেই মতো শ্বশুরবাড়ির লোক পড়াতে রাজি হয়নি। শেষে বাড়ির অমতে আমার স্বামী আমাকে সাহায্য করায় আমি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাটি পাশ করতে পারি। সংসারের দায়িত্ব কাঁধে আসায় পড়াশোনায় আর এগিয়ে যেতে পারিনি। আমার আর খেলতেও যাওয়া হয়নি। আমি প্রত্যেকটি কিশোরীকে গ্রামের সভায় বা স্কুলে বলি যে, আমার স্বপ্নটা পূরণ হয়নি ঠিকই, কিন্তু তোমরা স্বপ্ন দেখা ছাড়বে না।
সূতি-১ ব্লকের চেতনা সদস্য মহিমা খাতুন বলেন, বাড়ির অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় খুব কম বয়সে আমার বিয়ে দিয়ে দেয়। আমার খুব ইচ্ছা ছিল আমি বড় হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াব। আমি পড়াশোনাতেও খুব যে খারাপ ছিলাম তা নয়। কিন্তু সংসারের চাপে পড়ে আমাকে বিয়ে করতে হয়। বিয়ের পরে আমার প্রথম বাচ্চাটি নষ্ট হয়ে যায়। এরপর আমার নানা রকম অসুবিধা দেখা যায়। তাই আমি সকলকে এখন বলি, যে অল্প বয়সে বিয়ে করা যাবে না।
জলঙ্গি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা বন্দনা সাঁতরা বলেন, বাল্যবিবাহ একটি বয়সন্ধিকালীন সমস্যা। এর প্রতিরোধের জন্য চেতনার সদস্যাদের দ্বারা কন্যাশ্রী ক্লাবের মাধ্যমে সচেতনতা বার্তা দেওয়া হচ্ছে। অবশ্যই এই উদ্যোগ খুব প্রয়োজনীয় ও পরবর্তীতে আরও বেশি করে কিশোরীদের বোঝানো উচিত।
বহরমপুরের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার জয়ন্ত চৌধুরী বলেন, এই চেতনা গ্রুপের মেয়েরা গোটা জেলাজুড়ে অসময়ে মেয়েদের বিসর্জনের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য কাজ করছে। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষক শিক্ষিকা এবং প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গরাও চেতনার কাজে এগিয়ে আসছে।