চিকিৎসাশাস্ত্রের অধ্যয়নে বিশেষ উন্নতি ও সাফল্যের যোগ। কর্মস্থল পরিবর্তন ও উপার্জন বৃদ্ধির সম্ভাবনা। মনে অস্থিরতা। ... বিশদ
এবছর খাদির উপর পটের কাজ করা ওড়না, টিশার্টের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। জেলার বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি ভিনজেলা থেকেও বহু মানুষ নানা জিনিস কিনতে আসছেন। এছাড়া, পুজোর আগে রাজ্যজুড়ে একগুচ্ছ মেলা থাকায় সেখানে বিক্রি করে শিল্পীরা লাভবান হয়েছেন। অনেক শিল্পী পটের কাজ করতে ভিনরাজ্যেও গিয়েছেন।
ঘরের ভিতর একমনে পটের কাজ করছিলেন বাহার চিত্রকর। তিনি এই কাজ করতে জার্মানিতেও গিয়েছিলেন। পেয়েছেন বহু পুরস্কার। কাজের ফাঁকে বলেন, সারা বছর পুজোর জন্য অপেক্ষা করে থাকি। এবছর বিক্রি ভালোই হয়েছে। দিনরাত পরিশ্রম করে ছবি আঁকছি। প্রচুর অর্ডার আসছে।
মেদিনীপুর শহর থেকে প্রায় ২৫কিলোমিটার দূরে পিংলার নয়া গ্রাম। এই গ্রামের ভিতর বাড়ির দেওয়াল থেকে উঠোন, সর্বত্র পটের ছোঁয়া। শিল্পীরা নিজ নিজ বাড়ির সামনেই পটচিত্রের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। বাড়ির কর্তাগিন্নি থেকে শুরু করে পরিবারের খুদে সদস্যরাও পটের জিনিস বিক্রি করছে। ইদানিং মাটির সরা বা হাল ফ্যাশনের শাড়িতেও পটের ছবি জায়গা করে নিয়েছে।
পারিবারিক ধারা থেকেই এই শিল্পীরা কাজ শিখেছেন। ছবি আঁকার পাশাপাশি গানেও তাঁরা পারদর্শী। তাঁদের খোল বাজিয়ে গাওয়া পটের গানে রামায়ণ, মহাভারত সহ মঙ্গলকাব্যের নানা কাহিনি সাবলীলভাবেই ফুটে ওঠে।
এদিন ছবি আঁকার পাশাপাশি গান গাইছিল খুদে শিল্পী তথা তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী প্রিয়াঙ্কা চিত্রকর। সে বলল, অবসর সময়ে বাবা-মার সঙ্গে ছবি আঁকতে বসে যাই। তার সঙ্গে আপন মনে গান করি। মা-বাবার কাজ দেখেই আঁকা শিখছি। একদিন বড় শিল্পী হতে চাই।
এক শিল্পী জানালেন, পটশিল্পেও নতুনত্বের ছোঁয়া আনার চেষ্টা চলছে। এতে বিক্রিও বেড়েছে। পৌরাণিক কাহিনী ছাড়াও বন্যপ্রাণীদের ছবি ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে। তবে আগের চেয়ে রঙের দাম অনেকটাই বেড়েছে। তাই অনেকেই প্রাকৃতিক রঙ ব্যবহার করছেন। শিল্পীদের মধ্যে স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা থাকায় কাজ আরও ভালো হচ্ছে।
এদিন গ্রামে দেখা হল মোমিন চিত্রকরের সঙ্গে। তিনি বড় থালার উপর দেবী দুর্গার ছবি ফুটিয়ে তুলেছেন। বললেন, কাপ-প্লেটের উপর পটের কাজ করেছি। ভালো বিক্রিও হয়েছে। থালার উপর পটের কাজ নতুন বিক্রিও ভালো হচ্ছে। মানুষ সাজিয়ে রাখতে পারবে। এছাড়া, শহরে পটের কাজ করা শাড়ির চাহিদাও রয়েছে। আগে থেকেই অনেকে অর্ডার দিয়ে নিয়ে গিয়েছে।এদিন গ্রামে পটের জিনিস কিনতে এসেছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির বাসিন্দা সঞ্জয়কুমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, প্রথমবার এলাম। দারুণ অভিজ্ঞতা হল। পুজোর আগে অনেক কিছু কিনলাম। ফের একবার আসার ইচ্ছে রইল।