প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের হার-জিতের ক্ষেত্রে বড় ফ্যাক্টর জেলার তিনটি পুরসভা। গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে তিনটি পুরসভায় পিছিয়ে ছিল রাজ্যের শাসকদল। যদিও পরবর্তীতে পুরভোটে তিনটি পুরসভার একটিতেও খাতা খুলতে পারেনি বিজেপি। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সহ সামাজিক প্রকল্পের জন্যই তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে সাধারণ মানুষ। একইসঙ্গে পুর এলাকার উন্নয়নমূলক প্রকল্প তো আছেই।
যদিও বিজেপির দাবি, গত পুরসভা ভোটে তৃণমূলের লাগামহীন সন্ত্রাস আর ছাপ্পার কারণে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারেনি। এবারের লোকসভা ভোটে মানুষ তার জবাব দিয়েছে। তিনটি পুরসভায় বড় ব্যবধানে লিড পাবেন বিজেপি প্রার্থী। রাজনৈতিক মহলের মতে, পুর এলাকার ভোটাররা যথেষ্ট সচেতন। বিজেপির বিভেদের রাজনীতি মানুষ বুঝে গিয়েছে। উনিশের লোকসভা ও একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ধর্মীয় মেরুকরণ, রাজবংশী আবেগকে পুঁজি করে ভোট বৈতরণী পার হয়েছিল বিজেপি। কোচবিহার জেলার জন্য, রাজবংশী সমাজের জন্য অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। তার কোনওটিই পূরণ করেনি। শহরের শিক্ষিত মানুষ, এসবের জবাব ইভিএমে দিয়েছে। তেমনই শহর এলাকার নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলিতে সামাজিক প্রকল্প সহ লক্ষ্মীর ভাণ্ডার যথেষ্ট সহায়ক হয়েছে মানুষের দৈনন্দিন চলার পথে। এসবের কারণেই শহর এলাকায় বিগত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের গ্লানি এবার ঘুচতে চলেছে।
গত বিধানসভা নির্বাচনে কোচবিহার শহরে প্রায় ১৫ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। দিনহাটায় পিছিয়ে ছিল প্রায় ৮ হাজার ভোটে। যদিও পরবর্তীতে বিধানসভার উপনির্বাচনে শহরে ১৬ হাজার ভোট লিড পায় তৃণমূল। মাথাভাঙা পুরসভায়ও তৃণমূল সাড়ে ৬ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিল। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে দলেরই একাংশ নিষ্ক্রিয় ছিল, অনেকেই অর্ন্তঘাত করেছিল। সেকারণে শহরে ফলাফল ভালো হয়নি। এবারে তৃণমূল নেতারা প্রথম থেকে যেমন একহয়ে লড়াইয়ের ময়দানে নেমেছিলেন, তেমনই শুরু থেকে শহরে বাড়তি প্রচারেও নজর দেওয়া হয়েছিল। দলীয় নেতৃত্বের দাবি ছিল, শহর থেকে লিড নিতেই হবে। ভোট হয়ে যাওয়ার পর তৃণমূল নেতৃত্ব হিসেব করে দেখছে তিনটি পুরসভায় আশাব্যঞ্জক ফল হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের মুখের হাসি অনেকটাই চওড়া এখন। তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, প্রথম থেকে কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের তিনটি পুরসভাকে টার্গেট করে প্রচার শুরু করি। কারণ গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে শহরগুলিতে দল পিছিয়ে ছিল। মুখ্যমন্ত্রীর সামাজিক প্রকল্পগুলিকে সামনে রেখে জোরদার প্রচার করা হয়েছে। ভোটের পরে আমরা যে হিসেব পেয়েছি তিনটি পুরসভা থেকে কম হলেও ১৫ হাজারের বেশি ভোটে লিড পাব। গ্রামীণ এলাকায় দলীয় কর্মীরা পঞ্চায়েত নির্বাচনের চেয়েও বেশি খেটেছেন। প্রত্যাশা করছি, সব মিলিয়ে লক্ষাধিক ভোটে জিতব।
যদিও বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ বর্মন বলেন, তৃণমূলের এসব হিসেব খাতায়-কলমেই থাকবে। বাস্তবটা হচ্ছে শহরের মানুষ তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তিনটি পুরসভায় বিধানসভা ভোটে যা লিড ছিল তা টপকে যাবে।