নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে এক মহিলা সাংবাদিকের শ্লীলতাহানির অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে বরানগরজুড়ে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের একাংশও নানা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। আর জি কর-কাণ্ডে পথে নামা সিপিএম নেতাদের ‘মুখ ও মুখোশ’ নিয়ে চর্চা চলছে সর্বত্র। এর মধ্যে সোমবার তন্ময়বাবুকে বরানগর থানায় ডেকে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কর্মক্ষেত্রে নারী নিগ্রহের প্রতিবাদে আজ, মঙ্গলবার বিকেলে তৃণমূলের তরফে বরানগরে দু’টি প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে। তবে তন্ময়বাবু এদিন সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। রবিবার এক মহিলা সাংবাদিক তন্ময়বাবুর বাড়িতে তাঁর স্বাক্ষাৎকার নিতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, তন্ময়বাবু ওই মহিলা সাংবাদিকের কোলে বসে পড়েন ও অশালীন আচরণ করেন। মহিলা সাংবাদিক সোশ্যাল মিডিয়ায় গোটা ঘটনা জানানোর পাশাপাশি বরানগর থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে পুলিস তন্ময়বাবুর নামে দু’টি জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। রবিবার রাতেই বাড়িতে নোটিস দিয়ে তন্ময়বাবুকে থানায় আসার কথা বলা হয়েছিল। সোমবার বেলা দেড়টা নাগাদ থানায় আসেন তিনি। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর সাড়ে ৪টা নাগাদ তিনি থানা থেকে বেরিয়ে যান। এদিন পুলিস বারাকপুর মহকুমা আদালতে সংশ্লিষ্ট মামলার যাবতীয় নথিপত্র জমা দেয়। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এদিন থানা থেকে বেরিয়ে তন্ময়বাবু বলেন, ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ। মেয়েটি আমার মেয়ের থেকেও ছোট। আমি স্তম্ভিত। আমার বাড়ি থেকে হাসতে হাসতে বেরিয়েছিল। এর পিছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে কি না, বুঝতে পারছি না।’ দল থেকে তাঁকে সাসপেন্ড করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একটি মেয়ে অভিযোগ করেছে বলে পার্টি এমন সিদ্ধান্ত নিলে পরে অন্য কারও ক্ষেত্রেও একই পদক্ষেপ করা হবে। এই রুটিনে পার্টি চলে গেলে আমার কিছু বলার নেই।’ বরানগর অঞ্চলে সিপিএমের গোষ্ঠী রাজনীতি সুবিদিত। তন্ময়বাবুকে নিয়ে জেলা সিপিএম নেতৃত্বও আড়াআড়ি বিভক্ত বলে খবর। এই আবহে তৃণমূল প্রতিবাদের স্বর আরও তীব্র করতে চাইছে। আজ উত্তর বরানগর ও দক্ষিণ বরানগরে পৃথক দু’টি প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছে তারা। দু’টি মিছিলেই স্থানীয় বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত থাকবেন। তিনি বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে নারী নিগ্রহের ঘটনায় বরানগরের মাথা হেঁট হয়ে গিয়েছে। আমরা লজ্জিত। দ্রুত ন্যায় বিচার চাই।’