মাতৃসূত্রে বিপুল অঙ্কে বিত্তলাভ হতে পারে। কর্ম ও ব্যবসায় ক্রমোন্নতি। ঈশ্বর চিন্তায় মনে শান্তিলাভ। ... বিশদ
প্রণয়বাবুর কথায়, ‘তৃণমূলে থাকার সময় অধিকারী পরিবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় নিরঙ্কুশ ক্ষমতা ভোগ করেছে। তারাই ছিল দলের ও প্রশাসনের শেষ কথা। সেই সুযোগে যাকে পছন্দ হয়েছে ক্ষমতায় বসিয়েছে। আবার পরিবারের ক্রীতদাস না হয়ে থাকলেই দিয়েছে ঘাড়ধাক্কা। তাতে অনেকের রাজনৈতিক কেরিয়ার শেষ হয়ে গিয়েছে। অধিকারী পরিবারের বিরোধিতা করার জন্য অনেককে জেল পর্যন্ত খাটতে হয়েছে। সেই সংখ্যাটাও খুব একটা কম নয়। এবার সেই অধিকারী বাড়ির ছোট ছেলে বিজেপির প্রার্থী। তাই সুযোগ এসেছে স্বেচ্ছাচারিতার জবাব দেওয়ার। পরিবারতন্ত্রকে শিক্ষা দেওয়াটাই এবার কাঁথির শপথ।’
সন্ধ্যার আগে কীর্তনের আসনে পৌঁছতে হবে। তাই দুপুরে খেয়েদেয়েই ছেলেকে নিয়ে বালিসাই বাসস্ট্যান্ডে এসেছেন ভৈরব দাস। বয়স সত্তর। পরনে ধুতি-পাঞ্জাবি। কপালে লম্বা তিলক। কীর্তন গান করে মাসে আয় হাজার পাঁচেক। সঙ্গে শিল্পীভাতা আর স্ত্রীর বার্ধক্যভাতা। ভোটের খবর জানতে চাওয়ায় ভৈরববাবু টেনে আনলেন বাবরকে ভারতে ডেকে আনার প্রসঙ্গ। বললেন, ‘ইব্রাহিম লোদিকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য দৌলত খাঁ লোদি বাবরকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। বাবর সুযোগ বুঝে ভারতে ঢুকেও গেলেন। মুঘল সাম্রাজ্যের পত্তন হল। কিন্তু দৌলত খাঁয়ের কপালে শিকে ছিঁড়ল না। বাংলায় যারা বিজেপিকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে, তাদের অবস্থাও একদিন দৌলত খাঁয়ের মতোই হবে।’ ভৈরববাবুর ইঙ্গিত এবং আক্রমণের লক্ষ্য স্পষ্ট।
কিছুক্ষণ থেমে বৃদ্ধ বললেন, ‘দলে কিছু ভুল থাকলে সংশোধনের জন্য ভিতরে থেকে লড়াই করাই উচিত। তুমি তো বাপু কম ক্ষমতা পাওনি। দলের ত্রুটি থাকলে দূর করার দায়িত্ব তো ক্ষমতাভোগীদেরই নিতে হবে। ১০ বছর ধরে ক্ষীর খেয়ে এখন দায় ঝেড়ে ফেললে তো হবে না! মানুষকে বোকা ভাবার কোনও কারণ নেই।’
কাঁথি চৌরাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে সামনের দিকে আঙুল তুলে একজন বললেন, ‘ওই মাঠে উনিশের নির্বাচনের আগে সভা করতে এসেছিলেন অমিত শাহ। পুরসভা থেকে জেলা প্রশাসন, সবই তখন অধিকারী পরিবারের নিয়ন্ত্রণে। অমিত শাহের কাঁথি আসার আগের দিন থেকে সভাস্থলের আশপাশের সমস্ত কলে জল পড়া বন্ধ হয়ে গেল। সন্ধ্যার পর ফের সচল। শুধুই ক্ষমতার আস্ফালন। মানুষ সব বোঝে। মুখে কিছু বলে না। কিন্তু সময় এলে জবাবটা দিয়ে দেয়। অধিকারী পরিবারকে সেই জবাব দেওয়ার সময় এসেছে।’