মাতৃসূত্রে বিপুল অঙ্কে বিত্তলাভ হতে পারে। কর্ম ও ব্যবসায় ক্রমোন্নতি। ঈশ্বর চিন্তায় মনে শান্তিলাভ। ... বিশদ
ছাতনার মেটেলা গ্রাম পঞ্চায়েতটি এবার সিপিএম বিজেপি জোট দখল করেছে। তৃণমূলকে আটকাতেই এই জোট। পঞ্চায়েত প্রধান সিপিএমের, আর উপপ্রধান বিজেপির। লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়ায় সিপিএম প্রার্থী দিয়েছে। আর তাতেই তৈরি হয়েছে ভোট ভাগাভাগির আশঙ্কা। বিজেপির হয়ে সিপিএম সদস্যরা ভোট করাবেন, জিতেনবাবুর এই দাবি মানতে চাননি সিপিএম প্রধানের স্বামী ধনঞ্জয় মাল। তাঁর সাফ কথা, ‘ভোট করব সিপিএম প্রার্থীর হয়েই।’
সিপিএম দলীয় প্রার্থীর হয়ে ভোট করালে বিজেপির ক্ষতি ষোলো আনা। আর তৃণমূলের লাভ হবে, এমন কাজ সিপিএম ভুলেও করে না। কিন্তু, এবার বামপ্রার্থীর ভোট না বাড়লে ছাব্বিশে মানুষের কাছে গিয়ে দাঁড়াবে কোন মুখে? ফলে সিপিএম পড়েছে শাঁখের করাতের মুখে। তাদের উপর নির্ভর করছে বিজেপির ভাগ্য।
গতবার ছাতনা বিধানসভা থেকে প্রায় ৩১ হাজার লিড নিয়েছিল বিজেপি। একুশের নির্বাচনে তা কমে হয় সাত হাজার। এবার সেই ছাতনা থেকেই লিড নেবে তৃণমূল, দাবি ঘাসফুল শিবিরের। হাওয়া যে ঘুরেছে, সেটা বোঝা গেল হাটগ্রাম পঞ্চায়েতের পায়রাচালিতে পন্ডা ইলেকট্রিকের দোকানের আড্ডায়। একজন বললেন, ‘এখানে তৃণমূলের হাওয়া। পঞ্চায়েতও পেয়েছে তৃণমূল। বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ায় গ্রামে বহু গরিবের ভোট এবার তৃণমূলের দিকে যাবে। বিশেষ করে মহিলা ভোট।’ মুড়ি খাওয়ার জন্য শসার খোসা ছাড়াতে ছাড়াতে ঘাড় নাড়লেন দোকানের মালিকও।
হরিগ্রামের চিরঞ্জিৎ রায়ের বাইকের সামনে লাগানো রয়েছে হনুমানজির ছবি সহ গেরুয়া পতাকা। ‘বিজেপি করেন?’ প্রশ্ন শুনে হাসলেন চিরঞ্জিৎ। বললেন, ‘সরাসরি পার্টি করি না। কিন্তু সমর্থক। এখানে ভোট হয় আবেগে। কাজ খুব একটা গুরুত্ব পায় না। কাজের বিচার হলে শুভাশিস বটব্যাল এখানে হারতেন না। উনি প্রচুর কাজ করেছিলেন। কিন্তু, জিততে পারেননি। আসলে ভোট এলেই এখানে বিজেপির পক্ষে একটা হাওয়া ওঠে। সেটা কেন বলতে পারব না। তবে ওঠে।’
চিরঞ্জিৎ হক কথা বলেছেন। বাঁকুড়ায় কাজের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ‘হাওয়া’। সেই কারণেই গতবার ‘কাজের মানুষ’ সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে অনায়াসেই হারিয়ে দিয়েছিলেন সুভাষ সরকার। তখন সুভাষবাবুকে নিয়ে দলের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব ছিল না। কিন্তু, তিনি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার পর দলে তাঁর বন্ধুর চেয়ে সমালোচকের সংখ্যা কোনও অংশে কম নয়। তবে চিকিৎসক হওয়ার সুবাদে তাঁর পরিচিতি প্রচুর। এটা তাঁর সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট।
অন্যদিকে বাঁকুড়ার দাবি মেনে ভূমিপুত্রকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। দীর্ঘদিন সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় অরূপ চক্রবর্তী বাঁকুড়ার পরিচিত মুখ। আদিবাসীদের মধ্যেও তাঁর প্রভাব যথেষ্ট। একুশের ভোটের নিরিখে তৃণমূল বাঁকুড়া লোকসভা আসনে বিজেপির চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে আছে। তা সত্ত্বেও অরূপবাবু স্বস্তিতে নেই। তাঁর জয়ের পথে সবচেয়ে বড় কাঁটা দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। আর তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই বিজেপির শক্তির উৎস। জিতেন দাসরা তার জ্বলন্ত প্রমাণ।
তৃণমূলের সব গোষ্ঠীর নেতাকে এক করা কুকুরের লেজ সোজা করার চেয়েও কঠিন। তৃণমূলের অন্দরের খবর, অরূপ চক্রবর্তীর প্রচারের চেয়েও অনেক বেশি সময় গিয়েছে ‘লেজ’ সোজা করতে। তবে, শেষ পর্যন্ত সোজা করতে পেরেছেন কি না, বোঝা যাবে ৪ জুন।