প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, রাজ্যজুড়ে কম পক্ষে ১২টি স্কুলের স্থায়ী শিক্ষকদের সকলেই ২০১৬ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নিযুক্ত। প্রকৃত সংখ্যা তার বেশিও হতে পারে। আরও বেশকিছু স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকরাও এই অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে আছেন। ফলে, দায়িত্ব কে নেবেন, উঠে গিয়েছে সেই প্রশ্ন।
এর পাশাপাশি রয়েছে, রাজ্যের বহু স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর অবস্থানের সমস্যাও। যেমন মুর্শিদাবাদের ছাবঘাটি কে ডি বিদ্যালয় বিল্ডিং জুড়ে রয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৩০০ জন জওয়ান। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক কৌশিক দাস বলেন, ‘আমাদের ২৬ জন শিক্ষকের চাকরি আপাতত অনিশ্চিত। অর্থাৎ আমাদের শিক্ষক সংখ্যার প্রায় অর্ধেক! এর পাশাপাশি স্কুল ভবনে কেন্দ্রীয় বাহিনীও রয়েছে। তাই ফল বিতরণ কীভাবে করব জানি না।’ প্রসঙ্গত, এই স্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ৯৫৮ জন। তাদের মার্কশিট বিতরণ করা সহজ কাজ নয়। স্থানীয় দু’জন শিক্ষক কয়েকবছর যাবৎ এই ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন। তাঁরাও পড়েছেন এই রায়ের কোপে। স্কুলে আসার বিষয়টি প্রধান শিক্ষক তাঁদের বিবেচনার উপরে ছেড়ে দিয়ে অবশ্য আশাবাদী। তবে, স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকায় তিনি মার্কশিট বিতরণ করতে পারবেন না বলেই আশঙ্কা করছেন প্রধান শিক্ষক।
অন্যদিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কুমুড়ি হেরম্ব গোপালপুর এস এম বিদ্যাপীঠের (উচ্চ মাধ্যমিক) ছ’জন শিক্ষকের প্রত্যেকেই এসএলএসটি ২০১৬-এর মাধ্যমে নিযুক্ত। সেই তালিকায় রয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পল্লব দলুইও। আপাতত জনাকয়েক পার্শ্বশিক্ষকই ওই স্কুলের ভরসা! বিকাশ ভবনের এক আধিকারিক অবশ্য বলছেন, শিক্ষকরা যেভাবে ভোটের ডিউটি করছেন, সেভাবেই মার্কশিট বিতরণের কাজে অংশ নিতে পারেন তাঁরা। তবে, শিক্ষকদের অনেকেই আইনি জটিলতার চেয়েও বেশি চিন্তায় রয়েছেন মানসম্মান নিয়ে।
তথাকথিত ‘অযোগ্য’ না-হলেও চাকরি বাতিলের নির্দেশ হয়েছে বীরভূমের এক জীবনবিজ্ঞানের শিক্ষকের। তিনি বলেন, ‘আমি জানি যে আমি যোগ্য। তবে, ছাত্রছাত্রী বা অভিভাবকদের তা বোঝানো কঠিন। গ্রীষ্মের ছুটি থাকায় কিছুটা নিশ্চিন্ত। আশা করি, তার মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে কিছু একটা হয়ে যাবে। তবে, ফল প্রকাশের দিন স্কুলে যাব না। সেই দায়িত্ব পুরনো শিক্ষকরাই নিন।’ একেবারে শূন্য না-হলেও, বহু স্কুলেই ৪০-৫০ শতাংশ শিক্ষকের চাকরির ভবিষ্যৎ বিচারাধীন। বিকাশ ভবনের আধিকারিকদের একাংশের দাবি, সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তি মিলবেই। তাই খোলা মনেই স্কুলে যান ওই শিক্ষকরা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিষয়ে অবশ্য সার্বিকভাবে কোনও সমাধান এখনই মিলছে না। সেক্ষেত্রে স্কুল-প্রাঙ্গণে ত্রিপল খাটিয়ে ধাপে ধাপে পড়ুয়াদের ডেকে মার্কশিট বিতরণ করা যেতে পারে বলেও মত কিছু আধিকারিকের।