প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
রবিবার মালদহের কালিয়াচক ও হবিবপুরে জোড়া সভা থেকে মুহুর্মুহু বিজেপি ও মোদি সরকারকে আক্রমণ শানিয়ে গিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। জনগণের হাততালির ফাঁকে ফাঁকে বিজেপির পতনের হিসেব জলের মতো স্পষ্ট করে বুঝিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘হাওয়া এবার উল্টো দিকে বইতে শুরু করেছে। প্রথম দফার পর সেটা টের পেয়েছিল। দ্বিতীয় দফায় হাড়ে হাড়ে বুঝতে পেরেছে বিজেপি। তাই প্রচারবাবু মোদি শুধু প্রচারেই জোর দিয়েছেন।’ মমতার কথায়, ‘আমি যা বলি জেনেশুনে, ক্যালকুলেশন করেই বলি। এখন সেই সুরে কেউ কেউ বলছেন, মনে হচ্ছে বিজেপি এবার আর আসবে না। এবার সত্যিই দিল্লিতে আমাদের সরকার হওয়ার দরকার আছে। আমি একটা ছোট কাঠবেড়ালির ভূমিকা পালন করব। সব রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে আমার খুব ভালো যোগাযোগ।’
‘স্বৈরাচারী’ বিজেপির হাতে দেশের ভবিষ্যত্ নিয়েও এদিন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মমতা। বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিজেপিকে সরালেই বিপদ পুরোপুরি কাটছে না। সাম্প্রদায়িকতার যে বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছে গেরুয়া শিবির, কয়েক প্রজন্ম হয়তো তাতে পঙ্গু হয়ে থাকবে। আর সেটাই দূর করতে মহাজোট ‘ইন্ডিয়া’ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। মমতার আশ্বাস, ‘তৃণমূল যতদিন থাকবে, সর্বধর্ম ঐক্য রেখে এগিয়ে যাবে।’ স্লোগান তুলেছেন মমতা, ‘বিজেপি চোর হ্যায়, ইস লিয়ে হটানা হ্যায়’।
মানুষখেকো, চাকরিখেকো, প্রচারবাবু সহ একাধিক শব্দবন্ধে এদিন মোদি ও বিজেপিকে তুলোধোনা করেছেন মমতা। মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধতে ফের ছড়াও কেটেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, ‘ওহে নন্দলাল, হাজার টাকার গ্যাসে ফুটছে বিনে পয়সার চাল।’
রবিবার মালদহ দক্ষিণ আসনের তৃণমূল প্রার্থী শাহনাওয়াজ আলি রায়হান ও উত্তরের প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে কালিয়াচক ও হবিবপুরে মমতার সভায় মহিলাদের উপস্থিতি ছিল দেখার মতো। সেখানে প্রদেশ কংগ্রেসকে আক্রমণ করে মমতার হুঙ্কার, ‘বাংলায় তৃণমূল একা লড়ছে। সিপিএমের জোট হচ্ছে কংগ্রেসের সঙ্গে। আপনারা কি চান আমি সিপিএমের কাছে আবার আত্মসমর্পণ করি? কংগ্রেস নেতৃত্বকে বলেছিলাম, বিধানসভায় তোমাদের একটা আসনও নেই, দু’টি আসন দিচ্ছি। তবু সিপিএমের সঙ্গে তোমরা জোট কোরো না। কিন্তু কথা শোনেনি।’
বিজেপিকে রুখতে ‘ইন্ডিয়া’ গঠনে তাঁর ভূমিকা এবং নেতৃত্ব দেওয়া প্রসঙ্গে মমতার মন্তব্য, ‘নামটাও দিয়েছি আমি, যা দেখে মোদি ভয়ে থরথর করে কাঁপে। আমাদের একটাই জায়গা, বাংলা। যখন সবাই ভয় পেয়ে পা হড়কে পালাবে, তৃণমূলই নেতৃত্ব দিয়ে ক্ষমতায় নিয়ে আসবে ইন্ডিয়াকে। এই নির্বাচন দিল্লিতে মোদিবাবুর গদি ওল্টানোর। বিজেপির দু’টি চোখ। একটা কংগ্রেস ও অন্যটি সিপিএম। ভোট কাটাকাটিতে যদি বিজেপি জিতে যায়, ক্ষতি আপনাদেরই।’
হাইকোর্টের রায়ে রাজ্যের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি যাওয়া প্রসঙ্গ টেনে দলনেত্রীর বক্তব্য, ‘মানুষখেকো বাঘ দেখেছেন তো? এরা হচ্ছে চাকরিখেকো বাঘ। যখন দেখছে আর কিচ্ছু করার নেই, তখন সব চাকরি খেয়ে নাও।’