হস্তশিল্পীদের কর্মে সাফল্য ও সুনাম। সন্তানের সঙ্গে মতবিরোধ হতে পারে। ধর্মকর্মে মনোযোগ বাড়বে। ... বিশদ
শিবপুর রোডের অভিজাত বাড়ি ভট্টাচার্যদের। দেবকুমার ভট্টাচার্য ছিলেন এই পরিবারের গৃহকর্তা। নিজের বাড়িতে দুর্গাপুজোর পাশাপাশি স্থানীয় একটি রক্ষাকালী পুজোর মূল উদ্যোক্তা ছিলেন তিনি। শনিবার ক্ষেত্র ব্যানার্জি লেনে ধুমধাম করেই এই পুজোর আয়োজন হয়। সমস্যা দেখা দেয় পুজোর মাঝপথে সোনার জল করা রুপোর হারটি দেখতে না পাওয়ায়। দেবকুমারবাবু ওই হারটি মেরামতের উদ্যোগ নিলেও শেষ মুহূর্তে সেটি সারানো যায়নি। সেকারণেই ওই হারটি তিনি মায়ের গলায় পরাতে চাননি। বাকি গয়না পরানো হলেও রুপোর ওই হারটি তিনি সরিয়ে রাখেন। এ নিয়ে এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে তাঁর সামান্য তর্কাতর্কি হয়। উপস্থিত মানুষজনের সিংহভাগই সেই সময় তাঁর যুক্তি মেনে নেন। ভোররাতে জনা সাতেক বাসিন্দা আচমকা দেবকুমারবাবুর বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁকে যথেচ্ছভাবে অপমান করে। চলে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ। তাদের মধ্যে কেউ কেউ তাঁকে ‘চোর’ বলেও সম্বোধন করে। তারপর তারা ভট্টাচার্য বাড়ির সামনে থেকে চলে যায়। তাঁর বাড়ির সামনে হুজ্জুতির ছবি ধরা পড়েছে এলাকার সিসি ক্যামেরায়। এরপর দীর্ঘক্ষণ সাড়াশব্দ মেলেনি দেবকুমারবাবুর ঘর থেকে। পরে ঘরের দরজা খুলে দেখা যায়, আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। রক্ষাকালী মায়ের গলায় হার পরাতে না পারলেও অপমানের জেরে নিজের গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহননের পথ নেন তিনি।
এই ঘটনায় পরিবারের তরফের শিবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ভোররাতে বাড়িতে আসা মুষ্টিমেয় কয়েকজন এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। মৃতের ভাইপো প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, এত বছর ধরে জেঠু এই পুজোর আয়োজন করে আসছেন। এলাকায় তাঁর নাম-যশ রয়েছে। এমন একজন মানুষ ঠাকুরের হার চুরি করতে যাবেন কেন? ওই অপমান মানতে পারেননি তিনি। যারা ভোর রাতে এসে শাসিয়ে গিয়েছে, তাদের প্ররোচনার কারণেই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। দীর্ঘদিন একটি পুজোর মূল উদ্যোক্তা থাকার পর এই অপমান তিনি মানতে পারেননি।