প্রায় সম্পূর্ণ কাজে আকস্মিক বিঘ্ন আসতে পারে। কর্মে অধিক পরিশ্রমে স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কা। ... বিশদ
জানা গিয়েছে, নদীয়া রাজ ভবানন্দ মজুমদারের পুত্র রাঘব রায়ের রাজত্বে দেওয়ান ছিলেন শ্রীবল্লভ দে বিশ্বাস। তিনি গ্রামে দুর্গাপুজোর পর পরই একই দালানে দক্ষিণারূপী কালীর পুজো শুরু করেন। সেই পুজোই গ্রামের মানুষের পুজো হয়ে ওঠে। মহারাজ রাঘব রায়ের রাজত্বে দেওয়ান শ্রীবল্লভ দে বিশ্বাসকে বার্ণপুর মাটিয়ারি ফুলবাড়ির তিনটি মৌজা দেওয়া হয়েছিল। একইসঙ্গে নদীয়া রাজ মহারাজ রাঘব রায় তাঁকে বিশ্বাস উপাধি দেন। মাটিয়ারিতে সেই বল্লভ দে বিশ্বাসের প্রতিষ্ঠিত কালীপুজোয় এপার ও ওপার বাংলার মানুষ এক হয়ে যায়। ১১ পোয়া কালীকে ডাকের সাজে সজ্জিত করা হয়। গ্রামের যাঁরা বাইরে থাকেন, এই পুজোর সময় তাঁরা বাড়ি ফিরে আসেন। দূর দূরান্ত থেকে আসা মানুষজন তাঁদের মনস্কামনা পূর্ণ হলে পুজো দেন। আগে মনস্কামনা পূর্ণ হলে ছাগ দিতেন। তখন অবশ্য ছাগ বলি হতো। এখন আর হয় না। দেবীকে রান্না ভোগও দেওয়া হয় না। তবে চাল কুমড়ো, ফল দিয়ে বলি দেওয়া হয়। ভোগে লুচি, বোদে, মিষ্টি, ফল, মিষ্টি দেওয়া হয়। এই পুজোর বৈশিষ্ট্য হল কালীপুজোর দিন অলক্ষ্মী বিদায় করা হয়। প্রদোষ লগ্নে উঠানে চালের উপর ঘট বসিয়ে এই পুজো হয়। পুজো ঘিরে রয়েছে নানা লৌকিক কাহিনি। জানা গিয়েছে, একবার বলির সময় পাঁঠা পাওয়া যাচ্ছিল না। পুজোর বলির সময় এগিয়ে এলে সকলে উদ্বেগে পড়ে যান। খোঁজ করেও পাঁঠা পাওয়া যাচ্ছিল না। পুজো করতে বসে বিশ্বাস বাড়ির লোকজন উদ্বেগে ছোটাছুটি করতে থাকেন। সেই সময় বাড়ির বাইরে একটা ছোট ছেলে খেলা করছিল। সেখানেই হাজির হয় একটি ছোট্ট মেয়ে। বিশ্বাস বাড়ির লোকজন পাঁঠা খুঁজতে ব্যস্ত দেখে ছোট্ট মেয়েটি এগিয়ে এসে গ্রামের একটি বাড়ির ঠিকানা দেয়। মেয়েটি জানায়, ‘তোমরা ওখানে যাও, তোমাদের পাঁঠা পেয়ে যাবে।’ সকলে জানায় ওই বাড়িতে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু, পাঁঠা পাওয়া যায়নি। ছোট্ট মেয়েটির বলা মতো বিশ্বাস বাড়ির লোকজন ফের ওই বাড়িতে যান। পাঁঠা দেখতে পান। সেই পাঁঠা ধরে নিয়ে এসে বলি দেওয়া হয়। পরে অবশ্য ওই মেয়েটিকে পাওয়া যায়নি। গোটা এলাকায় এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্বাস বাড়ির কর্তা দেবকুমার বিশ্বাস বলেন, আমাদের বাড়ির পুজোয় সকলে অংশ গ্রহণ করেন। এখনও নিষ্ঠা ভক্তি সহকারে পুজো হয়।