সংবাদদাতা, কাটোয়া: কাটোয়ার ঝুপো মায়ের পুজোর পর মূল্যবান বেনারসি এবারও পাবেন কোনও এক দুঃস্থ কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা। ঝুপো মায়ের বেনারসি পরে দুঃস্থ পরিবারের যুবতীর বিবাহ হবে। এবারও এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুজো কমিটি। পুজোর পর কমিটির কর্মকর্তারা বিবেচনা করে নির্দিষ্ট দুঃস্থ পরিবারকে ওই মহার্ঘ্য শাড়ি তুলে দেওয়া হবে। কাটোয়ার ঝুপো মা পুজো কমিটির পক্ষে জানানো হয়েছে, ঝুপো মায়ের পুজোয় মাকে বেশ কয়েকটি দামী বেনারসি পরানো হয়। অনেকে কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার বেনারসি কেনার সামর্থ্য থাকে না। তাছাড়া মায়ের শাড়ি তো মেয়েরাই পরে। তাই আমরাও ঝুপো মায়ের বেনারসি বিবাহযোগ্য যুবতীকে দেব।
কাটোয়ার ঝুপো মা ও খেপি মায়ের পুজো ঘিরে উন্মাদনা তুঙ্গে বাসিন্দাদের মধ্যে। প্রায় চার কেজি সোনার গয়নায় সাজানো হয়েছে কাটোয়ার বিখ্যাত খেপিমাকে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ভক্তদের ঢল নামে। খেপিমার গয়না পাহারা দিতে ৩০জন পুলিস কর্মী মোতায়েন রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ঝুপোমা মন্দির চত্বরেও ১০জন পুলিস কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। দুই পুজোতেই লাইভ স্ট্রিমিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি দাঁইহাটের নলহাটি বড় ঠাকরুন, কুরচি গ্রামে মা ন’ঠাকরুন পুজোয় সকাল থেকেই ভিড় ছিল। যাঁরা বিদেশে থাকেন বা বাইরে থাকেন তাঁদের জন্য দাঁইহাটে এবার বেশ কয়েকটি জায়গায় অনলাইনে পুজো দেওয়ারও বিশেষ ব্যবস্থা ছিল। ক্যুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পুজোর প্রসাদ পাঠানোর ব্যবস্থাও ছিল।
কাটোয়া শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডেই প্রাচীন এক নিমগাছকেই কালীজ্ঞানে ঝুপো মা নামে মহাধুমধামের সঙ্গে পুজো করা হয়। নিমগাছের চারপাশে পাঁচিল দিয়ে ঘিরে মন্দিরের মতো তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া একরাতেই ঝুপো মায়ের পুজো হয় দু’বার। একবার সাড়ম্বরে পুজো করে পুজো কমিটি। তারপর তারা পুজোর জায়গা পরিষ্কার করে মন্দির ছেড়ে দেন। এরপর গভীর রাতে এক সাধিকা এসে ফের নতুন করে ঘট প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন। প্রত্যেক বছর এই নিমগাছের চারপাশে বেনারসি কাপড় পরিয়ে, সোনার গয়না দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয় বলে জানান স্থানীয়রা। এমনকী, ফুলের মালাও এই নিমগাছেই পরানো হয়। অন্যদিকে পুজোর আগেরদিন রাত থেকেই কড়া পুলিস পাহারায় ব্যাঙ্কের লকার থেকে খেপিমার গয়না নিয়ে এসে পরানো হয়। অলঙ্কার পরানোর সময় মন্দিরে পুলিস কর্মী ও মন্দির কমিটির নির্দিষ্ট কয়েকজন ছাড়া অন্য কাউকে সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না।