হস্তশিল্পীদের কর্মে সাফল্য ও সুনাম। সন্তানের সঙ্গে মতবিরোধ হতে পারে। ধর্মকর্মে মনোযোগ বাড়বে। ... বিশদ
কিন্তু গবেষকদের দাবি, এই তালগাছের বয়স আর রবীন্দ্রনাথের ওই কবিতার বয়সের মধ্যেও বিস্তর ফারাক। এই তথ্য সম্পূর্ণ ভুল। গাইড কিংবা টোটো চালকদের প্রকৃত প্রশিক্ষণ না দেওয়ায় এমন ভুল তথ্য জানছেন পর্যটকরা। তাই ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা পাওয়া শান্তিনিকেতনে গাইডদের প্রশিক্ষণের দাবি জানাচ্ছেন অনেকেই।
জানা যায়, ওই তালগাছটি আসলে তেজেশচন্দ্র সেনের বাড়ির তালগাছ। ওই গাছটিকে বেষ্টন করে তৈরি মাটির বাড়িটি। তেজেশচন্দ্র শান্তিনিকেতনের প্রকৃতি পাঠ বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। পরে নন্দলাল বসু ওখানে কারুসঙ্গ অফিস করেছিলেন। সেখানে মেয়েরা হাতের কাজ শিখতেন। পরে অবশ্য ওই অফিস বন্ধ হয়ে যায়। যে তালগাছটি ওই মাটির বাড়িটির সঙ্গে দেখা যায়, তা ‘তালধ্বজ’ নামে খ্যাত। কিন্তু এর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের ওই কবিতার কোনও সম্পর্ক নেই, বলছেন প্রত্যেক গবেষক, অধ্যাপকই। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা শ্রীলা বসু বলেন, ওই তালগাছটি তেজেশচন্দ্র সেনের বাড়ির ওইখানে রয়েছে। কিন্তু এর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের তালগাছ কবিতাটির কোনও সম্পর্ক আছে বলে আমার জানা নেই। এসব বলা মানে এটিকে মিথ্যা গৌরবান্বিত করার চেষ্টামাত্র।
তবে শুধু এই একটি তথ্য নয়, শান্তিনিকেতন সম্পর্কে পর্যটকদের কাছে নানা সময় নানাজন এমন ভিন্ন ধরনের ভুল তথ্য তুলে ধরেন। কয়েকজন গাইড অবশ্য যত্ন করে সঠিক তথ্য তুলে ধরেন। কিন্তু টোটোচালকদের ‘সারাদিনের প্যাকেজ’-এর ঠেলায় অনেক পর্যটকই অনেক ভুল তথ্য জেনে শান্তিনিকেতন থেকে ফেরেন। এমনই অভিজ্ঞতার কথা শোনাচ্ছিলেন কামারপুকুর থেকে আসা দূর্বা ভাণ্ডারী। তিনি বলেন, টোটোচালক তো আমাদের এটাই বললেন যে এই তালগাছটিই নাকি সেই গাছ। আশপাশে আর কোনও তালগাছও নেই। শুনেই কেমন বিভোর হয়ে গেলাম! ইন্টারনেটে অবশ্য এই তথ্য কোথাও খুঁজে পাইনি। তাই খটকা লাগল।
অন্যদিকে, বোলপুরের শিক্ষানুরাগীদের দাবি, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসন এই নিয়ে আলাদা ভাবে ওয়ার্কশপ করলে ভুলত্রুটি দূর হবে। বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবনের আধিকারিক নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এর পিছনে মূলত গাইডদের প্রশিক্ষণ না থাকাকেই দায়ী করব। যাঁরা এখন গাইডের কাজ করেন তাঁদের প্রশিক্ষণ নেই। বিশ্বভারতী ও রাজ্য সরকার যৌথভাবেও প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে। এর পাশাপাশি এই কাজে বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীদেরও যুক্ত করার দরকার আছে বলে মনে করি। তাহলে তারাও উপার্জন করতে পারেন। এখানে বিভিন্ন বিভিন্ন ভাষার লোকজন আসেন। আর এখানে পড়তেও আসেন বিভিন্ন ভাষাভাষীর পড়ুয়ারা। একটা ডাটাবেস বানানো গেলে খুব ভালো হয়। সেই সঙ্গে হেরিটেজ ওয়াক যদি শুরু করা যায় তাও ভালো হবে। বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী তথা অধ্যাপক পার্থশঙ্খ মজুমদার বলেন, দেশের সব নামী পর্যটনস্থলগুলিতেই উপযুক্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গাইডদের দেখতে পাওয়া যায়। শান্তিনিকেতনে অবশ্য অনেকেই আছেন। কিন্তু তাঁদের আরও ভালোভাবে ওয়ার্কশপের প্রয়োজন আছে বলে মনে করি। অনেক মানুষ তাহলে কাজ পাবেন। এই উদ্যোগ যৌথভাবেই নেওয়া হোক। এই প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, গাইডদের ব্যাজ, পোশাক দেওয়া হয়েছে। স্বল্প দৈর্ঘ্যের প্রশিক্ষণ শিবিরও হয়েছিল।