নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: পরিকল্পনা ছাড়াই জলের পাইপ লাইন বসাচ্ছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর (পিএইচই)। ফলে, আগামীদিনে বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়া হলেও কল থেকে জল পড়বে না। এই আশঙ্কা থেকেই কাজ বন্ধ করে দেওয়া হল পঞ্চায়েত ও গ্রামবাসীদের তরফে। ঘটনাটি ঘটেছে কালীগঞ্জ ব্লকের বড় চাঁদঘর এলাকায়। তিনদিন ধরে বন্ধ রয়েছে জলস্বপ্ন প্রকল্পের পিএইচই’র পাইপ লাইন বসানোর কাজ। পঞ্চায়েত ও গ্রামবাসীদের দাবি, জলের কানেকশনের জন্য পাইপ লাইনের কাজ হোক। তবে, সেটা যেন লোক দেখানো না হয়। গ্রামের সকলেই যেন পর্যাপ্ত জল পান। কিন্তু যে পাইপ ব্যবহার করে পিএইচই এই কাজ করছে, তাতে সকল বাসিন্দাদের বাড়িতে ঠিকঠাক জল পৌঁছবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এলাকার জেলা পরিষদের সদস্য তারান্নুম সুলতানা মীর জেলা সভাধিপতি। নদীয়ার পিএইচই দপ্তরের আধিকারিক এস কে বাগচি বলেন, কালীগঞ্জের বড় চাঁদঘরে জলের পাইপলাইন বসানো নিয়ে একটা সমস্যা হয়েছে। আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করছি। আগামী সপ্তাহে জেলা পরিষদের সভাধিপতির সঙ্গেও আলোচনায় বসা হবে। বিভিন্ন জায়গায় যে পাইপ ব্যবহার করা হচ্ছে, সেই পাইপই বসানো হচ্ছিল বড় চাঁদঘরে। কিন্তু গ্রামবাসীরা যে পাইপ ব্যবহার করার কথা বলছেন, তা অত্যন্ত খরচ সাপেক্ষ। কালীগঞ্জ ব্লকে এমনিতেই জলের সমস্যা রয়েছে। এই ব্লকের পানিঘাটা, জুড়ানপুর সহ বিভিন্ন এলাকা রয়েছে যেখানে সংযোগ পৌঁছেছে ঠিকই। কিন্তু কল খুললে জল পড়ে না। সমস্যায় পড়তে হয় গ্রামের বাসিন্দাদের। জল আনতে অনেক দূরে যেতে হয়। গ্রামের একাংশ বলেন, জলস্বপ্ন প্রকল্পের আওতায় পিএইচই অপরিকল্পিতভাবে পাইপলাইন বসানোর জন্যই জলের প্রেসার পর্যাপ্ত থাকে না। কল খুললে জল পড়ে না। ২০২৪ সালের মধ্যে জেলার ১২ লক্ষ বাড়িতে জল সংযোগ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে পিএইচই দপ্তরের। অভিযোগ, লক্ষ্যমাত্রায় দ্রুত পৌঁছনোর জন্য কাজ অসম্পূর্ণ রাখা হচ্ছে। এর ফলে বাড়ি বাড়ি জল সংযোগের সংখ্যাতত্ত্ব বাড়লেও জলের পরিষেবা ঠিকমতো পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৯ লক্ষ ৮৩ হাজার বাড়িতে জলের সংযোগ দিয়েছে পিএইচই দপ্তর।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি কালীগঞ্জ ব্লকের বড় চাঁদঘর এলাকায় জলের পাইপলাইন বসানোর কাজ শুরু করে পিএইচই। প্রথম এলাকার মানুষ ও স্থানীয় প্রশাসন কাজে বাধা দেননি। কিন্তু কাজ যত এগিয়েছে স্থানীয়দের মনে সংশয় বেড়েছে। কারণ যে পাইপ ব্যবহার করা হচ্ছে তাতে বেশি দূর পর্যন্ত জলের প্রেসার থাকবে না। অন্যান্য জায়গার মতো বড় চাঁদঘর এলাকাতেও কল থেকে জল না পড়ার সমস্যা দেখা যাবে। পঞ্চায়েত প্রধান পাপিয়া মজুমদার বলেন, আমাদের এলাকায় জলের পাইপলাইন নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। আমরা কাজ বন্ধ রেখেছি। দুই থেকে তিন কিলোমিটার এলাকাতে সরু পাইপ ব্যবহার করা হচ্ছে। ওই পাইপ ব্যবহার করলে সব বাড়ি ঠিকমতো জল পাবে না।