নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি ও সংবাদদাতা, বোলপুর: দুবরাজপুরের মেটেলা গ্রামে ধুমধাম করে ধর্মরাজ পুজো চলছে। বীরভূম জেলার অন্যতম ধর্মরাজ পুজো হয় এই মেটেলা গ্রামে। বৃহস্পতিবার বুদ্ধপূর্ণিমার দিন উৎসবের মেজাজে গ্রামের বাগদিপাড়ার ভৈরব মন্দিরের কাছ থেকে ধর্মরাজ মন্দিরে ভাঁড়ার নিয়ে আসা হয়। কয়েকশো মহিলাকে মাথায় ঘট নিয়ে ভাঁড়ার আনতে দেখা যায়। এছাড়া, মনস্কামনা পূরণে কয়েকশো মহিলা দণ্ডী কাটতে কাটতে মন্দিরে আসেন। পুজো শেষে বলিদান প্রথাও রয়েছে। বৃহস্পতিবার মাঝরাতে জিভে বাণ ফোঁড়া হবে। পরের দিন রাতে হবে চড়ক। শতাব্দীপ্রাচীন এই ধর্মরাজ পুজো ও চড়ক দেখতে দূরদূরান্ত থেকে প্রচুর মানুষ এসেছেন। গ্রামের বাসিন্দা অরুণ দাস বলেন, মেটেলা গ্রামে সবচেয়ে বড় উৎসব এই ধর্মরাজ পুজো। এই মন্দির একসময় জীর্ণ অবস্থায় থাকলেও এখন সুন্দর করে গড়া হয়েছে। পুজো উপলক্ষে গ্রাম্য মেলাও বসেছে। বৃহস্পতিবার শান্তিনিকেতনের সেহালাই গ্রামের বাসিন্দারাও ধর্মরাজ পুজোয় মেতে ওঠেন। ধর্মরাজ এলাকায় চাঁদ রায় নামে পরিচিত। তিনদিন ধরে তাঁর পুজো চলে। সেহালাইয়ের প্রতিবেশী গ্রাম গোয়ালপাড়ায় চৈত্র মাসের পূর্ণিমায় ধর্মরাজ পুজো আয়োজন করা হয়। তার ঠিক পরেই বুদ্ধপূর্ণিমার দিন সেহালাইয়ে তিনদিন ধরে ধর্মরাজ পুজো হয়। পুজোয় প্রথমদিন ভক্তরা ক্ষৌরকর্মের মাধ্যমে নিজেদের শুদ্ধিকরণ করেন। যা ‘ভক্তকামান’ নামে পরিচিত। পরের দিন পুকুরে মুক্ত স্নান হয়। শেষদিনেই মূল পুজো হয়। বৃহস্পতিবার ছিল পুজোর শেষ দিন। সেই উপলক্ষে ধর্মরাজের মন্দির প্রাঙ্গণে ঢাকিরা সমবেত হন। দুপুরে ঢাকের তালে গ্রামবাসীরা সেহালাই সহ তালতোড় গ্রাম পরিক্রমা করেন। যা ভাড়াল নাচ বলে পরিচিত। এরপর পাঁঠা বলির মাধ্যমে পুজো সম্পন্ন হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা তথা বাঁধ নবগ্রাম গান্ধী বিদ্যাপীঠের শিক্ষক তন্ময় মুখোপাধ্যায় বলেন, এই ধর্মরাজ অত্যন্ত জাগ্রত বলে কথিত আছে। মনস্কামনা পূরণে প্রতি বছর তিনদিন ধরে তাঁর পুজো হয়।