গৃহে শুভকর্মের আয়োজনে ব্যস্ততা। বন্ধুসঙ্গ ও সাহিত্যচর্চায় মানসিক প্রফুল্লতা। উপার্জন বাড়বে। ... বিশদ
প্রায় ১৬ বছর আগে শিলিগুড়ির সেভক রোডে ওই ভবন পেলেও তা নিজেদের নামে করতে পারেনি রামকৃষ্ণ মিশন। সংশ্লিষ্ট ভবনে হামলার ঘটনা নিয়ে তদন্তে নেমে এই তথ্য পেয়েছে পুলিস। শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিস কমিশনার (পূর্ব) দীপক সরকার বলেন, ওই জমি টুকরা সিং নামে এক ব্যক্তির ছিল। তিনি হরদেওয়াল সিং গিল নামে একজনকে বিক্রি করেন। ওই ব্যক্তি বিক্রি করেন এস কে রায় নামে আরএকজনের কাছে। ২০০৮ সালে এস কে রায় সংশ্লিষ্ট জমি রামকৃষ্ণ মিশনকে দান করেন। বর্তমানে সেই জমি রামকৃষ্ণ মিশনের। তাদের কাছে জমির দানপত্র রয়েছে।
কিন্তু, জমির রেকর্ড এখনও সংশোধন হয়নি। ফলে সেই জমি টুকরা সিংয়ের নামেই রয়েছে। ওই ব্যক্তি নিঃসন্তান ছিলেন। তাঁর কাছে কাজ করতেন বিদ্যেশ্বরী রায় নামে এক মহিলা। তিনি প্রদীপ রায়ের মা। এই সূত্রে প্রদীপ সেই জমি নিজের বলে দাবি করছেন। তিনি ওই জমি দখলের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ। তদন্তে স্পষ্ট, ওই জমি প্রদীপের নয়।
পুলিসের এমন রিপোর্ট ঘিরে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, রামকৃষ্ণ মিশন একাধিকবার আবেদন করেও সেই জমির রেকর্ড সংশোধন করাতে পারেনি। এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে জমি মাফিয়ারা। জলপাইগুড়ি জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) প্রিয়দর্শিনী ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, জমির রেকর্ড সংশোধন করার বেশকিছু নিয়ম রয়েছে। ইতিমধ্যে ওই জমি নিয়ে দু’বার শুনানির দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল। দু’বারই রামকৃষ্ণ মিশন হাজির থাকলেও, অন্যপক্ষ আসেনি। আগামী সপ্তাহের মধ্যে আবার ওই জমি নিয়ে শুনানি করবে রাজগঞ্জ ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর। এবার সমস্যা মিটবে বলে আশা করছি।
শিলিগুড়ি শহরের সংযোজিত এলাকা জলপাইগুড়ি জেলার অধীনে। এমন ভৌগোলিক অবস্থানের জেরে সংশ্লিষ্ট এলাকায় জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য দীর্ঘদিনের। কয়েক মাস আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হুঁশিয়ারির পর পুলিস ও প্রশাসন এ ব্যাপারে নড়েচড়ে বসে। তারা অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু জমি মাফিয়া ও বাহুবলীকে গ্রেপ্তার করে। ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিককেও বদলি করা হয়। এর জেরে বেশ কিছুদিন জমি মাফিয়া ও বাহুবলীদের দাপট কম ছিল। ফের লাগামহীনভাবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে জমি মাফিয়া সিন্ডিকেট। রামকৃষ্ণ মিশন কাণ্ড থেকেই তা স্পষ্ট। রেকর্ড সংশোধন না হওয়া সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের ও বাস্তু জমি, খাসজমিই মাফিয়াদের টার্গেট।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট চক্রের সঙ্গে ভূমিদপ্তরের একাংশের যোগসাজশ রয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত প্রশাসনের। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) অবশ্য বলেন, এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে রাজগঞ্জের বর্তমান বিএলএলআরও’র ভূমিকা যথেষ্ট প্রশংসনীয়।