চণ্ডীগড়: কবাডি ম্যাচে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করার জন্য বিশেষ খ্যাতি রয়েছে দীপক হুডার। মাস ছ’য়েক আগে রাজনীতির ময়দানে পা রেখেছিলেন এশিয়ান গেমসে ভারতের সোনা জয়ী দলের অন্যতম সদস্য। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বক্সার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। হরিয়ানায় বিধানসভা ভোটে রোহতক জেলার মেহম আসনে ট্যাকল ও অ্যাটাকে বিশেষ পারদর্শী এই ক্রীড়াবিদের উপরই বাজি ধরেছে গেরুয়া শিবির। জাট-প্রধান এই আসনে পদ্ম ফোটানো নিয়ে আশাবাদী হুডা। তাঁর গলায় আত্মবিশ্বাসের সুর, ‘মেহম কেন্দ্রে কোনও শক্তি বিজেপিকে আটকাতে পারবে না।’ তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, হুডার কাজটা খুব একটা সহজ নয়। মেহমে লড়াই কার্যত ত্রিমুখী। একসময় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী দেবী লালের গড় হিসেবে পরিচিত ছিল মেহম। তারপর দীর্ঘদিন এই আসন ছিল কংগ্রেসের দখলে। হাতশিবিরের আনন্দ সিং দাঙ্গি এই আসন থেকে ১৯৯১, ২০০৫, ২০০৯ ও ২০১৪ সালে জয় পেয়েছেন। জয়ের ধারায় ছেদ পড়ে ২০১৯ সালে। নির্দল প্রার্থী বলরাজ কুণ্ডুর কাছে ১২ হাজারের বেশি ভোটে হেরে যান দাঙ্গি। কংগ্রেসের টিকিট পেয়েছেন তাঁর ছেলে বলরাম। কাজেই ত্রিমুখী লড়াইয়ে বিজেপির হেভিওয়েট প্রার্থীকে টক্কর দিতে হবে দাঙ্গি-পুত্র বলরাম ও বর্তমান বিধায়ক বলরাজকে। তালিকায় রয়েছেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি সামসের সিংয়ের স্ত্রী রাধাও।
প্রচারে বেরিয়ে বলরাম, বলরাজকে একই সুরে বিঁধছেন বিজেপি প্রার্থী। ভারতীয় কবাডি দলের প্রাক্তন অধিনায়ক বলছেন, ‘কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বীতশ্রদ্ধ হয়ে মানুষ বলরাজকে ভোট দিয়েছিলেন। তিনি জয়ী হলেও কোনও কাজই করেননি। রাস্তাঘাটের অবস্থা খারাপ। একটু বৃষ্টি হলেই জল জমে যায়।’ তবে মূল লড়াই যে কংগ্রেসের সঙ্গেই, তা মেনে নিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। ছেড়ে কথা বলছে না কংগ্রেসও। বিজেপির বিরুদ্ধে কৃষক ক্ষোভকেই হাতিয়ার করছে হাত শিবির। সঙ্গে রয়েছে বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, অনুন্নয়নের মতো ইস্যুও। অন্যদিকে, গত পাঁচ বছরে উন্নয়নের খতিয়ানই হাতিয়ার বলরাজের।
সবমিলিয়ে এবার জমজমাট লড়াই মেহমে। রাজনীতির অচেনা কোর্টে হুডা কি চেনা ফর্ম দেখিয়ে জয় ছিনিয়ে আনতে পারবেন? নাকি শেষ হাসি হাসবেন অন্য কেউ—তা নিয়েই চর্চা তুঙ্গে।