মাতৃসূত্রে বিপুল অঙ্কে বিত্তলাভ হতে পারে। কর্ম ও ব্যবসায় ক্রমোন্নতি। ঈশ্বর চিন্তায় মনে শান্তিলাভ। ... বিশদ
শিবালিক রেঞ্জের পাদদেশের ছোট্ট শহর হামিরপুর। নামের সঙ্গে জড়িয়ে ইতিহাস। ১৭০০-১৭৪০ সাল। কাংড়ার কাটোচ রাজা হামিরচাঁদ ঠিক করলেন হিমাচলের অপেক্ষাকৃত নিরাপদ স্থানে একটি ফাঁড়ি তৈরি করবেন। সবুজে ঘেরা স্থানটিকে বেছে নিলেন তিনি। গড়ে তুললেন ফাঁড়ি। তাঁর নামে স্থানটির নামকরণ করা হয় হামিরপুর। পরে এলাকাটি দখল করেন মহারাজা রঞ্জিৎ সিং। ১৮৪৬ সালে শিখদেরও হাতছাড়া হয়ে যায় হামিরপুর। দখল নেয় ব্রিটিশরা। সেই থেকে হামিরপুর ছিল ব্রিটিশদের শাসনে।
স্বাধীনতা লাভের পর ভারতে প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৫১ সালের অক্টোবর থেকে ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। হামিরপুর কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেন আনন্দ চাঁদ। তিনি কাটোচ রাজবংশেরই সন্তান। জয়ীও হন। ১৯৬৭ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করেন কংগ্রেসের প্রেমচাঁদ ভার্মা। ১৯৭৭ সালে কংগ্রেসের হাত থেকে আসনটি ছিনিয়ে নেন জনতা পার্টির ঠাকুর রঞ্জিৎ সিং। তারপর দু’টি টার্মেই (১৯৮০ ও ১৯৮৪) হামিরপুরে সাংসদ ছিলেন কংগ্রেসের নারায়ণ চাঁদ। ১৯৮৯ সালে আসনটি ফের হাতছাড়া হয় কংগ্রেসের। জয়ী হন বিজেপির প্রেমকুমার ধুমল। ১৯৯১ সালেও জয়লাভ করেন তিনি। ১৯৯৬ সালে ফের কংগ্রেস। কিন্তু ১৯৯৮ সাল থেকে হামিরপুর হয়ে ওঠে গেরুয়া শিবিরের শক্তঘাঁটি। ২০০৮ সালের উপনির্বাচনে হামিরপুরে পদ্ম ফোটান ধুমল-পুত্র অনুরাগ ঠাকুর। পরের বছর অর্থাৎ ২০০৯ সাল থেকে টানা তিনবার ‘অনুরাগ’-এর গেরুয়া আঁকড়ে থেকেছেন হামিরপুরবাসী। কেন্দ্রের মন্ত্রীও করা হয় বিজেপির এই তরুণ নেতাকে। এবারের নির্বাচনেও অনুরাগেই আস্থা রেখেছেন মোদি-শাহ-নাড্ডারা।
২০১৯ সালের নির্বাচনে কংগ্রেসের রামলাল ঠাকুরকে ৩ লক্ষ ৯৯ হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত করেছিলেন অনুরাগ। এবার তাঁকে বেগ দিতে সতপাল সিং রাইজাদাকে প্রার্থী করেছে কংগ্রেস। তিনি বর্তমানে হিমাচলের উনার বিধায়ক। অনুরাগের বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি পূরণের ব্যর্থতাকে তুলে ধরে জোরদার প্রচারে নেমেছেন তিনি। বিলাসপুর বিধানসভা এলাকায় এইমস তৈরির আশ্বাস দিয়েছিলেন। পূরণ করতে পারেননি। হামিরপুর থেকে প্রতি বছর বহু যুবক ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। কিন্তু মোদি সরকার ‘অগ্নিবীর প্রকল্প’ চালু করার পর থেকে যুবকরা আশাহত। প্রচারে সেটাকে হাতিয়ার করেছেন কংগ্রেস প্রার্থী। তার উপর মোদি-ইমেজ এখন নানা কারণে ফিকে। রাম-নামেও তেমন জুতসই সাড়া পাচ্ছে না বিজেপি। অনুরাগ অবশ্য ভরসা রাখছেন ‘মোদি গ্যারান্টি’তে...রামমন্দির নির্মাণে। প্রচারে তিনি বলছেন, ‘দেশের যে প্রান্তেই যাই না কেন, মানুষ বলছেন মাই চয়েস মোদি। ফের স্থিতিশীল ও দুর্নীতিমুক্ত সরকারের পক্ষেই রায় দেবেন দেশবাসী।’