পত্নীর স্বাস্থ্যহানিতে চিন্তা বৃদ্ধি। পারিবারিক ক্ষেত্রে আত্মীয়দের সঙ্গে সম্পর্কে শীতলতা। কাজকর্মে উন্নতি ও আয় বৃদ্ধি। ... বিশদ
চ্যাংয়ের বাড়ি চীনে। তবে দু’প্রজন্ম ধরে কলকাতায় থাকেন। বহু আগে থেকে তাঁর পরিবার বড়দিনের আগে নিউ মার্কেটের বাইরে বসে বড়দিনের উপহার বিক্রি করত। তবে সে জায়গা স্থায়ী হয়নি বলে তারা উৎসবের সামগ্রী তৈরি শুরু করে। রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডে কারখানা করে। সেখানে সান্টার সঙ্গে ক্রিসমাস ট্রি, রংবরেঙের বল, স্টার, বেল ইত্যাদি তৈরি হয়। বছরের অধিকাংশ সময়জুড়েই চলে কাজ। তবে দু’থেকে ছ’ফুট আকৃতির সান্টা তৈরি করতে অপেক্ষা করতেই হয় কার্তিক পুজো পর্যন্ত। কারণ বিসর্জনের পরই কার্তিকের কাঠামো মেলে। কুমোরটুলি ঘুরে তা আসে চ্যাংয়ের কারখানায়। কাঠামোয় খড়-কাগজ সাঁটানো হয়। তার উপর বসে স্যাটিনের কাপড়। আর প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি হয় সান্টার সৌম্যদর্শন মুখমণ্ডল। বাঙালি দম্পতিরা সন্তান কামনায় কার্তিক পুজো করে। আর বড়দিনে সব পরিবারের সব সন্তান অপেক্ষা করে মাঝরাতের। তখন সান্টা বলগা হরিণে চড়ে উপহার দিতে আসবে।
চ্যাংয়ের কারখানায় জনা সাতেক কর্মী কাজ করে। এন্টালি ও রাজাবাজার থেকে আসে আম কাঠ। সেই কাঠ মেশিনে গোল করে কেটে তৈরি হয় উপহারের সামগ্রী। সারাক্ষণ ছবিতে দেখা মানুষের মতো বসে থাকে চ্যাং। আর জগদীশ, চন্দনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে একের পর এক সান্টা তৈরি করে চলে রুকসানা, তবসুম খাতুনরা। এসব জিনিস ক্যানিং স্ট্রিটের পাইকারি বাজারে পাঠানোর কাজ করার জন্য আছে আরও দু’জন। বড়বাজার থেকে তা যায় দিল্লি, বেঙ্গালুরু পর্যন্ত। মিস্টার চ্যাং বলেন, ‘আমার ছেলে-মেয়েরা সব কানাডায় থাকে। আমি থাকি কলকাতায়। সান্টা তৈরির কাজ যেন বন্ধ না হয়। তার জন্য আমি আমার কর্মীদের কারখানার মালিকানা তুলে দিয়ে যাব।’ স্বল্পবাক চ্যাংয়ের কথা শুনে কাজ থামিয়ে তাঁর দিকে তাকায় জগদীশ, চন্দন, রুকসানা, তবসুম। ৯২ বছরের চ্যাংয়ের মুখটা তখন ছবিতে দেখা চীনে বুড়োর মতো নয়, অনেকটা যেন সান্টা ক্লজের মতোই দেখায়।