হস্তশিল্পীদের কর্মে সাফল্য ও সুনাম। সন্তানের সঙ্গে মতবিরোধ হতে পারে। ধর্মকর্মে মনোযোগ বাড়বে। ... বিশদ
ডায়মন্ড হারবারের দেউলার নাজদা গ্রামে এক সময় রমরমিয়ে চলত তালপাতার পাখা তৈরির কাজ। ৩০টির মতো পরিবার যুক্ত ছিল। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে পাতা কেটে রোদে ফেলে শুকিয়ে বান্ডিল করে জড়ো করে রাখতেন কারিগররা। তারপর অর্ডার অনুযায়ী পাতা জলে ভিজিয়ে আরও এক দফা শুকিয়ে পাখা তৈরি করতেন। সে কাজ একসময় রমরম করে চলত। কিন্তু এখন এই গ্রামে কমতে কমতে পরিবারের সংখ্যা মাত্র পাঁচটিতে এসে ঠেকেছে। চাহিদা না থাকায় পাখা তৈরির সংখ্যা গিয়েছে কমে। ইব্রাহিম আলি নামে এক কারিগর বলেন, ‘প্লাস্টিকের পাখা সস্তা। ২০ টাকায় তিনটে পেয়ে যান ক্রেতারা। কিন্তু একটা তালপাতার পাখার দাম ২৫ টাকা। তাই এখন আর কেউ কিনতে চায় না। কলকাতা বা গ্রামে দিনে মাত্র কয়েকটি বিক্রি হয়।’
নাজদার মতো একই হাল জয়নগর দু’নম্বর ব্লকের চণ্ডীপুর গ্রামেরও। এখানেও দীর্ঘদিন ধরে বেশ কয়েকটি পরিবার হাত পাখা বানাতেন। কিন্তু বর্তমানে চাহিদা কমে যাওয়ায় কারিগরদের কেউ অন্য কাজ নিয়ে চলে গিয়েছেন ভিন রাজ্যে। কেউ গ্রামে থেকেই অন্য পেশায় যোগ দিয়েছেন। তবে এখনও গুটিকয় মানুষ আজও এই শিল্পকে টিঁকিয়ে রেখেছেন। তাঁদের বক্তব্য, পাখা বানিয়ে লাভের লাভ কিছু হচ্ছে না। খাটনি বেড়েছে কিন্তু মজুরি কমেছে। শুধু এই কাজ করে সংসার চলবে না। তাই অনেকে পেশা বদল করে ফেলেছেন। কেউ আবার পাখা তৈরির পাশাপাশি অন্য কাজও করছেন।
গায়ে খাঁজকাটা, ঢেউ খেলানো নকশাদার তালপাতার পাখা হাতে ছবি তুলতেন এককালের মহিলারা। বাচ্চারা বলত, পাখার থেকে মিষ্টি গন্ধ বেরয়। বাঙালির বহু জিনিসের মতো সে পাখাও চলে যাচ্ছে অন্তরালে। এরপর হয়ত অ্যান্টিক হয়ে শোভা পাবে কোনও কিউরিও শপে-এক প্রবীণ আক্ষেপ করে বললেন। নিজস্ব চিত্র