ব্যবসায়িক কাজকর্ম ভালো হবে। ব্যবসার প্রসারযোগও বিদ্যমান। উচ্চশিক্ষায় সন্তানের বিদেশ গমনের সুযোগ আসতে পারে। গৃহশান্তি ... বিশদ
কিন্তু হাতের থলিতে ফোল্ডিং ছিপটি কই? দু’-চারটি চারাপোনা বা একটা এক কিলো এক-দেড়শো কাতলাই বা কোথায়? ধীরে ধীরে খালি হাতে হেঁটে এসে বাবা একটা গুমটি থেকে সিগারেট ধরাল। এসব গুমটিতেও, এই উলুবেড়িয়ায় 555 পাওয়া যায়! সবিস্ময়ে আমি ভাবলাম।
‘তুই এখানে!’ এবার বাবার নজর পড়ল আমার উপর, ‘ও কবিসম্মেলনে এসেছিলিস বুঝি?’
ঠিক ধরেছে, বাবা বলে কথা! ‘হুঁ’, আমি বললাম।
‘তা কয়ডা কবিতা পড়লি? দিল কিছু? আরে ওই সব ফুলের তোড়া, উত্তরীয় ওই সব না, টাকাপয়সা— দিছে কিছু? খামকা আজ বাঁশবেড়িয়া, কাল বসিরহাট, পরশু মহিষাদল যাস ক্যান? ক্যান যাস?’ ধমকের সুরে বলল বাবা।
বাবার এসব কথার আমি কোনও উত্তর দিলাম না। কী আর বলা যায়!
বাবাই এরপর বলে যেতে লাগল, ‘বুঝছি! লিটিল ম্যাগাজিন! হেরাই আয়োজক তোগো কবিসম্মেলনের। হেরা টাকা দিব ক্যামনে?’ বলে বাবা হাসল।
দেখলাম পান খায়নি বোধ করি অনেক দিন। মুখ পরিষ্কার। সিগারেট খাচ্ছে ইদানীং, মনে হয় বেশি বেশি।
‘খাড়া দেহি এইবার,’ বাবা আমাকে এবার দাঁড় করিয়ে দিল উলুবেড়িয়ার হাই রোডের কিনারায়। কলকারখানার নিয়ন আলো আমাদের দু’জনের উপর পড়ছিল। পাশ দিয়ে হাঁই হাঁই করে যাতায়াত করা ট্রাক, লরির হেডলাইটও ঝলকাচ্ছিল আমাদের গায়ে।
‘দেহি দেহি তোরে একটুক,’ বলে বাবা আমার মুখে চোখে হাত বোলাতে লাগল। হাওয়ার হাত যেন, কী ঠান্ডা! মনে হল যেন হিমালয় থেকে ঘুরে এসেছে।
এর আগে গত বিশ পঁচিশ বছরে বাবার সঙ্গে আমার দেখা হয়নি, তা নয়। একবার দেখেছি আমাদের পুরনো বাড়ির বাগানের ভিতর বিকেলবেলায় ঘুরছে। ও বাবা, ও বাবা বলে আমি বার দু’য়েক ডাকতে আমাকে হাত নেড়ে টা টা জানিয়ে বাবা গলির রাস্তা পেরিয়ে বড় রাস্তায় বাঁক নিয়ে চলে গিয়েছে, তাস খেলতেই নিশ্চয়।
আর একবার আমি অটোয় উড়ালপুল দিয়ে যাচ্ছি, নীচে পোস্টাপিসে দেখলাম কীসের যেন লাইনে ছাতা মাথায় বাবা দাঁড়িয়ে আছে। আমি আমার কাজ সেরে মিনিট পনেরো পর পোস্টাপিসে বাবার খোঁজে এসে দেখি লাইন ছোট হয়ে গিয়েছে, বাবা নেই। বোধহয় কাজ মিটিয়ে চলে গিয়েছে।
সেসব খুচরো দেখা বা দেখতে পাওয়ার চেয়ে আজ উলুবেড়িয়ায় আমাদের দেখাসাক্ষাৎ ঢের ঢের বড়সড় ব্যাপার। হাই রোডে আমরা বাপ-ব্যাটায় পাশাপাশি হাঁটছি। আমাদের ভেতর কথাবার্তা হচ্ছে। ব্যাপক কথাবার্তা। তদুপরি বাবা আমার গায়ে হাত বুলিয়েছে। ঠিক কি না?
১৬ মার্চ না ১৮ মার্চ তারিখ দু’টি নিয়ে আমার মাথায় গুলিয়ে গিয়েছে বলে বাবার জীবনের অনেক বড় বড় ঘটনা আমি ভুলে গিয়েছি। সত্যি, মিথ্যে আর বোধহয়— এই তিনটি বিষয় মানুষের জীবনে কখনও কখনও গোলযোগপূর্ণ হয়ে যায়। আমার অন্তত হয়েছে।
জীবনের একটি সময়ে এই বাবা আমাকে গৃহ থেকে বহিষ্কার করেছিল। অথবা আমি তাকে পরিত্যাগ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম। ওই যে বলেছি, বিষয়টি গোলমেলে, তাই আমি এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলছি না।
কিশোর বয়স থেকেই আমি কবিতা রচনার ঘোরতর কাজটিতে আত্মনিয়োগ করেছিলাম, অচিরেই আমার মনে হতে থাকে এ কাজ সেতুবন্ধনের চেয়ে শ্রমসাধ্য, পর্বতারোহণের থেকে উচ্চাকাঙ্ক্ষী। আমি সাধারণ মানের ছাত্র হলেও আমার পরের দুটি ভাই কৃতী, তারা সেই সময় যথাক্রমে ইঞ্জিনিয়ারিং ও ডাক্তারির ছাত্র ছিল। ভ্রাতৃদ্বয়ের পাশে তৎকালে গৃহে ও পাড়া-প্রতিবেশীদের কাছে আমি বিবর্ণ ও বিধ্বস্ত ছিলাম। বাবা-মা দু’জনেই আমার ওই কৈশোরকাল থেকে কেবলই আমার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশঙ্কা প্রকাশ করত। আমি বয়ে গিয়েছি, এই বিবেচনায় ক্রমে তারা হাল ছেড়ে দেয়।
সময় তখন দপদপ করছিল। বাবা তখন হরবখত গালিগালাজ করত। অপদার্থ, খটাস, হারামজাদা এসব বিশেষণের পাশাপাশি বাবা বলে চলত, চীনাগো চেয়ারম্যানরে তোরা তোগো চেয়ারম্যান কস! ক্যান রে! গান্ধী নাই, সুভাষ বোস নাই! ক্যান রে তুই মাসের পর মাস এদিক সেদিক ঘুরিস! আবলাদের সঙ্গে ঘুরিস! সারাদিন টইটই করিস। আবোলতাবোল মাইয়ারা তোর গায়ে গায়ে ঘোরে। খটাস, ছুছুন্দর। দু’-পয়সা রোজগারের মুরোদ নাই! ভাতের থালা আমার দিকে ঠেলে আমার জননী তিরস্কারের চোখে তাকিয়ে থাকত। আবার কখনও তার চোখ ছলছল করত।
সত্যি ‘আবোলতাবোল মাইয়াদের’ একজন, সুলগ্না সেসময় আমার গায়ে একেবারে লেপ্টে ছিল। সেসময় তো মোবাইল-টোবাইল ছিল না। তবে বিস্তর চিরকুট বিনিময় হয়েছে আমাদের। গল্পের বইয়ের ভিতর পারফিউম লাগানো চিরকুট দিত সুলগ্না। এই এখন যেন সেই সুগন্ধ পেলাম। খুব বই পড়ত সুলগ্না। গল্প-উপন্যাস পড়ত সে। আমার কবিতার তুমুল ভক্ত ছিল সে। বোঝো কাণ্ড, সে সময় সুলগ্না বলত, ‘শক্তি আর তুমি দু’জনেই বড় কবি।’ শুনে শিরশির করতাম আমি। বলতাম, ‘ধুস’। শুধু একবার, সন্ধ্যার গলিপথে কেবল একবার সুলগ্নাকে চুমু খেয়েছিলাম আমি। শুধু সুলগ্না এবং কতিপয় সমবয়সি কবিতাপ্রয়াসী আমাকে রঙিন মনে করত।
গত শতাব্দীর দাউদাউ বছরটিতে, ১৯৭১- এ আমার কারাবাস ঘটে। মহিষাদল শহরটিতে ধরা পড়ি আমি, সুশীল ধাড়া ওই শহরে আমার আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন। তবু ধরা পড়ে যাই।
বাবার দৌড়াদৌড়িতে এবং আমার জেলাশাসক মামার তৎপরতায় ১৯৭৪ সালের শীতকালে বহরমপুর জেল থেকে মুক্ত হই আমি। জরুরি অবস্থার ঠিক আগে। মুক্তিলাভের পরই আমি জানতে পারি সুলগ্নার বিয়ে হয়ে গিয়েছে, গত বছর।
আমি ঈষৎ বিমর্ষ হয়ে পড়ি এবং কিছুটা গৃহবন্দি হই। কোণঠাসা যাকে বলে। আমার ভ্রাতৃদ্বয় ইঞ্জিনিয়ার ও চিকিৎসক, তখন কর্মরত। আমাদের বাড়ি তখন ঝলমল ঝলমল করছিল। বাবা সেসময় আমার সম্পর্কে ঘোষণা করেছিল: বড় খোকা জেলখাটা দাগি আসামি, হের কোনও চাকরিবাকরি জোটবে না। আমিও সেই রকমই মনে করতাম। ছাত্র পড়াতাম, সেসব অর্থের ভিতর হাতখরচটি রেখে বাকি দু’-তিনশো টাকা বাবার হাতে তুলে দিতাম। ছাত্র পড়াতাম আর কবিতা লেখার চেষ্টা চালাতাম ঘরে কাগজপত্র ছড়িয়ে। লিটিল ম্যাগাজিনগুলিতে আমার কবিতা বের হতে লাগল। একটি কবিতার বইও বের হল।
বাবা মনে করত পুলিস আমাকে আবার যখন তখন গ্রেপ্তার করবে। এই দুর্ভাবনা আমার মায়ের ভিতরও ছড়িয়ে দিয়েছিল বাবা।
আমার বিয়ে দিয়ে দেওয়ার তৎপরতা এরপরই শুরু করে দেয় বাবা-মা। পাত্রীও ঠিক হল, বাবার এক বন্ধুর মেয়ে। বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হবে হবে সময়ে হঠাৎ করে আমার মা মারা গেল ক্যান্সারে। তারিখটা মনে আছে ১৯৮৪-র ৬ মার্চ। আমার বিয়ে হল পরের বছর।
বিয়ের দু’বছর পর আমার কন্যাটি জন্মাল। সময় গড়াতে লাগল। হল কী, আমার ইঞ্জিনিয়ার ভাইটিও ক্রমে আমাকে অপদার্থ, অকেজো, খটাস, ছুছুন্দর বলতে লাগল। আমার বউ, নববধূই বলা যায় তখনও তাকে, অশ্রুপাত করতে লাগল। কবিতা আছে কবিতা আছে আমার সেই সব সময়ের। একদিন, ওই রকম সময়ে নতমস্তকে আমি বাবার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। আমার দিকে চেয়ে বাবাও মাথা নিচু করল। পরদিনই পিতৃগৃহ ত্যাগ করলাম আমি। স্ত্রী ও শিশুকন্যা নিয়ে বেহালায় ভাড়াবাড়িতে আমার বছর তিনেক বড়ই অভাবে অনটনে কাটল। সেসব কথা থাক। একদিন আক্ষরিক অর্থে রাস্তা থেকে তুলে আমাকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল সংবাদপত্রের অফিসে। ডুবন্ত মানুষটি যেন ডাঙায় উঠলাম।
মাস কয়েক পর বাবার সঙ্গে দেখা করতে বাবা বলল, ‘খবরে নাম বাইরোয়, তাতে কী! টাহা দেয়? মায়না আছে? পি এফ কাটে?’
আমি হ্যাঁ, হুঁ করে গেলাম। বললাম, ‘শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়, অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়, বরেন গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে চাকরি করি আমি।’
বাবা বলল,‘হ, তারা ল্যাখে, তুমিও ল্যাখো। ল্যাখাল্যাখির কি কোনও চাকরি হয়? পূজায় বোনাস দিবে তোমাগো?’ বাবা আরও বলে চলল, ‘তুই তো ছাগল, কবিতা লিখিস, লিটিল ম্যাগাজিনে লেখোস, আরে বড় বড় পত্রিকায় ল্যাখ, নভেল ল্যাখ, নাটক ল্যাখ,গল্প ল্যাখ...।’
বেহালার ছোট ভাড়াবাড়ি ছেড়ে একটা বড়সড় বাড়িতে এলাম বাঁশদ্রোণীতে। সেও অনেকদিন। কয়েক বছর হল আমরা দু’জনে আছি রাজারহাটের ফ্ল্যাটে। মেয়ের বিয়ে দিয়েছি, ওরা দু’টিতে আছে ওদের কর্মস্থল বেঙ্গালুরুতে। রাজারহাটের ফ্ল্যাটে যেবার এলাম, পাঁচ-ছ’বছর আগে টিভিতে একদিন সন্ধ্যায় আচমকা দুঃসংবাদ পেলাম। ইন্দোরে দুর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মারা গিয়েছে সুলগ্না আর তার স্বামী সুদীপ বসু। টিভিতে দেখলাম ওদের ছেলে এমন দুঃসংবাদে ইন্দোরে চলে এসেছে। পরস্ত্রী, বহুকাল যোগাযোগহীন, বিয়ের পর আর দেখা হয়নি। তবু মন বেশ কয়েক ঘণ্টা অন্ধকার হয়ে রইল। রাতে ভালো
ঘুম হল না।
সেসব অনেকদিন আগের কথা। এখন, এই এখন, আমি আর বাবা উলুবেড়িয়ার হাই রোডে পাশাপাশি হাঁটছি। আমি এসেছিলাম কবিসম্মেলনে, আর বাবা কী কর্মে কে জানে! বাবা বলছে, ‘কী করলি বড়খোকা, পয়সাকড়ি তো কিস্যুই করতে পারলি না, তোর চলত কীভাবে?’ বাবার এসব কথায় আমি বরাবর যেমনটি করেছি, এখনও এই সন্ধ্যায় তেমনই হুঁ-হ্যাঁ করছি।
যেতে যেতে পথে পড়ল মস্ত সে এক সরাইখানা। রোড সাইড হোটেল। শাল বল্লায় চাটাই দড়মা দিয়ে বিরাট ক্ষেত্র জুড়ে এই হোটেল তৈরি হয়েছে, তড়কা, তন্দুরি আর কচুরি ভাজার সুবাস ভাসছে।
‘কচুরি খাবা?’ জিজ্ঞেস করলাম আমি বাবাকে।
‘হ, চল, খাই কয়খান কচুরি।’ বাবা ঢুকে বসে পড়ল শাল তক্তার বেঞ্চে, টেবিলে রাখা বোতলের জল খেল ঢকঢক করে। আমি নিলাম দুটো কচুরি, বাবা চারটে, ছোলার ডাল আর আলুর দম দিয়ে কচুরি আমরা খেলাম তারিয়ে তারিয়ে। দ্রুত দুটো কচুরি খেয়ে আমি চা খেলাম।
বাবা বলল, ‘আরও দুইখান কচুরি খাই আমি? তুই একটু আশপাশে পাক দিয়া আয়। আমি ধীরেসুস্থে খাই,’ বলল বাবা। বুঝলাম আমাকে ধূমপানের অবকাশ দিচ্ছে। আড়ালে গিয়ে সিগারেট খেয়ে যখন ফিরলাম বাবার কাছে, মৌরি চিবতে চিবতে বাবা তখন খড়কে দিয়ে দাঁত খোঁচাচ্ছে। আমাকে দেখেই বাবা বলল, ‘ওই তোর মায় আসতাছে।’
মা! আমি প্রথমে ভড়কে গেলাম, তারপরই যেন
চটকা ভেঙে গেল আমার। মা কী করে আসবে! মা তো
কবেই মারা গিয়েছে! ভাবলাম আমি। আমার ভাবনা
তৎক্ষণাৎ অনুমান করে নিল বাবা, বাবা বলল, ‘আমিও তো আর নাই।’ আমার মনে পড়ল ১৬ মার্চ নাকি ১৮ মার্চ— এই দোটানায় বাবার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি আমার গুলিয়ে গিয়েছিল। বাবার মৃত্যুর বিষয়টিতেও আমার বিস্মরণ ঘটে গিয়েছিল। ‘ওই তোর মায় আইতাসে,’ ফের বলল বাবা। কারখানার আলো পড়েছিল সরাইয়ের পিছনের দিকে। আমি দেখলাম দু’পাশে কাশের ঝাড়, মাঝের আলপথটি ধরে হেঁটে আসছে আমার মা। দীপ জ্বেলে যাই পাড়ের নীলরঙা শাড়ি তার।
‘বড়খোকা তুই এলি!’ আমাকে দেখেই হেসে বলল মা।
বাবা বলল, ‘তুমিও আর নাই, তুমিও নাই বড়খোকা। মনে করে দেখো, কাল বাথরুমে চিত্তির হইয়া পড়লা, বউমা আওয়াজ শুইন্যা দৌড় দিয়া আইল। চিৎকারে সিকিউরিটি আইয়া দরজা ভাঙল। তখনই তো ভাসতে ভাসতে হাসতে হাসতে শরীলের বাইরে আইসা পড়লা তুমি বড়খোকা। মনে করে দেখো,’ বলল বাবা।
আমার আপন বিদায়কালটি মনে পড়ে যেতে লাগল। বুকের ভিতর কেউ যেন হাতুড়ি পেটাচ্ছিল। বরফের আঙুল দিয়ে পাঁজরাগুলি পিয়ানোর রিডের মতো টিপে টিপে হিমেশ রেশমিয়ার ‘একবার আজা আজা’ গানটি গাইছিল কোরাসে যেন হাজারজন। তারপরই ঊর্ধ্বগগনে বাজে মাদল গানটি বেজে ওঠে ঝমরঝম। এসব মনে পড়ে যায় আমার।
বাবা বলেই চলে, ‘তোমার ওই সুলতা মেয়েটির সঙ্গে কিন্তু আমাগো দু’-একবার দেখা হইছে। তুমিও হয়তো দেখা পাবা।’
মা বাবাকে শুধরে দেয়, ‘সুলতা নয়, সুলগ্না।’
কথা বলতে বাবা উলুবেড়িয়ার ক্যালকাটা ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির দেওয়াল ভেদ করে চলে যায়। মাও সেভাবে যেতে যেতে আমাকে ডাকে, ‘আয় আয়।’ দেখতে দেখতে আমিও দেওয়াল ভেদ করে যাই।