ব্যবসায়িক কাজকর্ম ভালো হবে। ব্যবসার প্রসারযোগও বিদ্যমান। উচ্চশিক্ষায় সন্তানের বিদেশ গমনের সুযোগ আসতে পারে। গৃহশান্তি ... বিশদ
সম্প্রতি নিজের উদ্যোগে বাংলার এক হাজারটি পরিবারের উপর সমীক্ষা করে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন পরিসংখ্যানবিদ সুদীপ ঘোষ। দেখিয়েছেন, শহুরে পরিবারগুলিতে বিয়ের বাজেট গড়ে ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা। গ্রামীণ এলাকায় তা ৫ থেকে ৭ লক্ষ। মফস্সল এলাকায় ১৫ লক্ষ টাকার মধ্যে বিয়ে হচ্ছে এখন। সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, এই খরচের সিংহভাগই ক্যাটারিং বা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট খাতে। ৩০ শতাংশের বেশি ব্যয় হচ্ছে সেখানে। এরপরই গয়না। সেখানে খরচ ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ। মজার বিষয়, ফটোগ্রাফি ও অন্যান্য বিনোদন বিয়ের মোট বাজেটের প্রায় ১০ শতাংশ দখল করে রেখেছে।
সুদীপবাবুর কথায়, ‘এখন বনেদি ও রাজবাড়িগুলিতে বসছে ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের আসর। দার্জিলিং, সুন্দরবনও সেই তালিকায় আছে। দারুণভাবে জনপ্রিয় হয়েছে বলিউড ঘরানার মতো করে বিয়ে। এমনকী পরিবেশবান্ধব থিমে বর-কনের আসর সাজছে কোথাও কোথাও। স্থান, ফটোগ্রাফি থেকে শুরু করে অন্যান্য টুকিটাকিতে অনলাইন বুকিং ও কেনাকাটার চাহিদা বাড়ছে ৩৫ শতাংশ হারে।’ সামাজিক ও পারিবারিকভাবেও বিয়েতে কিছু পরিবর্তন সামনে এসেছে বলে জানিয়েছেন সুদীপবাবু। তাঁর কথায়, কোন লজ বা ব্যাঙ্কোয়েট ভাড়া নেওয়া হবে, সেই বিষয়ে কার্যত একগুঁয়েমি দেখা গিয়েছে আয়োজকদের মধ্যে। এমনকী আগে থেকে অন্যের বুকিং করা জায়গার দখল নেওয়ার জন্য বাড়তি টাকার টোপ দিচ্ছেন অনেকে। প্রিওয়েডিং, পোস্টওয়েডিং ফটোশ্যুটের প্রবণতা ঊর্ধ্বমুখী। ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে কনেচন্দন। কপালে কল্কার নকশা, মা-দিদিমার বিয়ের গয়নায় সাজতে আর পছন্দ করছেন না নতুন প্রজন্মের নারীরা। এমনকী, নিজেরা আগে থেকেই যে ডিজাইনের গয়না গড়িয়ে রেখেছিলেন, তাতেও আর মন বসছে না। সেগুলি ভেঙে নতুন গয়না গড়াচ্ছেন। পার্লার থেকে সেজে আসাও এখন একেবারে অচল। বাড়িতে এসে মেক-আপ করাচ্ছেন আর্টিস্ট। সবচেয়ে বড় বিষয়, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট বা ক্যাটারিংয়ের ক্ষেত্রে কারও পরামর্শ নিচ্ছেন না বর-কনেরা। আগে কোথাও নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গিয়ে ভালো লাগা সংস্থাকে পেতেই জেদ ধরছেন।
ব্যবসায়ীদের সর্বভারতীয় সংগঠন কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স সাম্প্রতিককালে একটি সমীক্ষায় জানিয়েছিল, দীপাবলির পর থেকে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে যে বিয়ের আসর বসতে চলেছে, তাতে সার্বিকভাবে বাণিজ্য হতে পারে ছ’লক্ষ কোটি টাকার। অর্থাৎ উৎসবের পর খুচরো ব্যবসায়ীদের কাছে এটাই অন্যতম বড় সুযোগ। সেই সুযোগের অংশীদার যে বাংলাও, এই সমীক্ষা তাতেই সিলমোহর দিচ্ছে।