হঠাৎ পাওয়া যোগাযোগের মাধ্যমে কর্ম জটিলতার অবসান ও মানসিক চিন্তামুক্তি। আয় ব্যয়ের ক্ষেত্র ঠিক থাকবে ... বিশদ
শুক্রবার সন্ধ্যায় দু’টি গাড়িতে চেপে কুম্ভের উদ্দেশে বেরিয়ে ছিল সাতবেড়িয়ার সাহা পরিবার। রাত ১টা নাগাদ ধানবাদের রাজগঞ্জ এলাকায় হাইওয়েতে একটি গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। সেই গাড়িতে স্বরূপ সাহা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন গড়বেতার বাসিন্দা স্বরূপবাবুর শ্যালিকা ও তাঁর পরিবার। এছাড়াও এক প্রতিবেশী ও এক তুতো কাকিমা মিলিয়ে ১১ জন গাড়িতে ছিলেন। স্বরূপবাবুর চাষের পাশাপাশি ট্রাক্টরের ব্যবসা রয়েছে। অন্য গাড়িতে স্বরূপবাবুর দাদা অরূপ সাহার পরিবার ছিল। অরূপবাবু পেশায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তাঁর বড় ছেলে অর্পণ এবারই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এক মাস আগে থেকে কুম্ভ যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল সাহা পরিবার। তাই অর্পণের মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হতেই শুক্রবার তাঁরা রওনা দেন। কিন্তু, মাঝপথে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটবে, তা কেউ কল্পনা করতে পারেননি।
ভোর ৪টে নাগাদ পরিবারের লোকজন দুর্ঘটনার খবর পান। শনিবার সাতবেড়িয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সাহা পরিবারে আত্মীয় পরিজনদের ভিড়। বাড়ি সামনে জটলা করে রয়েছেন পাড়াপ্রতিবেশীরা। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। সকালের দিকে গাড়ির চালক, স্বরূপবাবুর স্ত্রী, শ্যালিকা ও তাঁর স্বামীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল। দুপুরে স্বরূপবাবুর মেয়ে ও তাঁর শ্যালিকার মেয়ের মৃত্যুর খবর আসে। মৃতের সংখ্যা যত বেড়েছে স্বজনহারাদের হাহাকার ততই তীব্র হয়েছে। প্রতিবেশীরাও চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। পরিবারের সদস্য তরুণ সাহা বলেন, ভোরে তুতো ভাইদের ঘর থেকে কান্নার আওয়াজ শুনি। তারপরই দুর্ঘটনার কথা জানতে পারি। পরিবারের সদস্য সৌরনীল সাহা বলেন, কর্মসূত্রে অমি হুগলির মশাটে থাকি। দাদারা এক মাস আগে থেকে কুম্ভ যাওয়ার জন্য পরিকল্পনা করছিল। ওই রাতে মা দাদাদের সঙ্গে যায়। দুর্ঘটনায় মা সহ পাঁচজন জখম হয়েছে। বাড়িতে না থাকায় যাওয়ার সময় ওদের সঙ্গে আমার দেখা হয়নি। এদিন সকালে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বাড়ি ফিরেছি।
ঘটনার খবর পেয়ে সকাল থেকে গ্রামেই ছিলেন কামারপুকুর পঞ্চায়েতের প্রধান রাজদীপ দে। তিনি বলেন, পরিবারটি এলাকায় অত্যন্ত পরিচিত। তাঁদের কুম্ভ যাত্রার সময় এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনায় আমরা হতবাক। পরিবারের পাশে পঞ্চায়েত রয়েছে। সব রকম সহযোগিতা করা হচ্ছে। সন্ধ্যায় ঝাড়খণ্ডের হাসপাতালেই মৃতদেহগুলির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে বলে খবর পেয়েছি।
(উপরে) সাহা বাড়ির সামনে ভিড় জমিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। (নীচে) মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গোঘাটের সাতবেড়িয়ায় আরামবাগের সংসদ সদস্যা মিতালি বাগ। -নিজস্ব চিত্র