মনোরম স্থানে সপরিবারে ভ্রমণ ও আনন্দ উপভোগ। সম্পত্তি সংরক্ষণে সচেষ্ট না হলে পরে ঝামেলায় পড়তে ... বিশদ
ঘাটালের সাংসদ দীপক অধিকারী (দেব), সেচদপ্তরের প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি মনীশ জৈন, পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি, পুলিস সুপার ধৃতিমান সরকার, বিধায়ক অজিত মাইতিকে পাশে রেখে সেচমন্ত্রী বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথা দিয়েছিলেন, সেই কথাই বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর পেছনে দেবের ভূমিকা রয়েছে। মানসবাবু জানান, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে মাস্টার প্ল্যানের কাজ শুরু হবে। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়েই এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক সূচনা করাতে চান। এই কাজকে ‘ফাইট ফর ঘাটাল’ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা দরকার। মাস্টার প্ল্যান কার্যকরী করার জন্য প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিরা প্রত্যেকটি মানুষের কাছে পৌঁছবে। মাস্টার প্ল্যান কার্যকরী হলে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের দু’টি পুরসভা এবং আটটি ব্লকের মানুষ উপকৃত হবেন বলে মন্ত্রী জানান।
দেব বলেন, বর্তমানে যে সমস্ত সরকারি জায়গা রয়েছে সেখানেই পাম্প হাউস, স্লুইস গেট তৈরির মাধ্যমে ফেব্রুয়ারি থেকে মাস্টার প্ল্যানের কাজ শুরু হবে। মাস্টার প্ল্যান রূপায়ন করতে ১০ হাজার মানুষের সহযোগিতা দরকার। সমস্ত স্তরের মানুষের সহযোগিতা পেলে ২০২৮ সালের মার্চ মাসের মধ্যে মাস্টার প্ল্যানের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। দেব মনে করিয়ে দেন, এই প্রকল্প রূপায়নের জন্য জোর করে কারও জায়গা নেওয়া হবে না।
গত শতাব্দীর পাঁচের দশকে প্রথম ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কথা শোনা গিয়েছিল। সংসদে প্রথম ঘাটালের বন্যার সমস্যার প্রসঙ্গ তোলেন বাম সাংসদ নিকুঞ্জবিহারী চৌধুরী। এর পরই ঘাটালের বন্যা সমস্যা খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষ কমিটি গঠিত হয়। সেই কমিটিই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাব গৃহীতও হয়। ১৯৫৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের মানসিংহ কমিটি বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে। কিন্তু তারপর নানা কারণে থমকে যায় প্রকল্প। তার প্রায় কুড়ি বছর পর ১৯৮২ সালে ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান’ প্রকল্পের শিলান্যাস করেন রাজ্যের তৎকালীন সেচমন্ত্রী প্রভাস রায়। তবে ওই পর্যন্তই। তার আর অগ্রগতি হয়নি। ১৯৯৩ সালে ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটি’ গঠন করেন ঘাটালের বাসিন্দারা। তাতেও অবশ্য কাজের কাজ কিচ্ছু হয়নি।
এদিকে প্রত্যেক বছর বর্ষায় পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ১৩টি ব্লকের ১৬৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েই চলে। প্রায় ২০ লক্ষ মানুষকে দুভোর্গে পড়তে হয়। প্রচুর ফসলের ক্ষতি হয়। গবাদিপশু মারা যায়। সংসদে ঘাটালের মাস্টার প্ল্যান কার্যকরী করার বিষয়ে দেব বহুবার প্রশ্ন তুলেছেন। কেন্দ্রীয় সরকার কোনও গুরুত্ব দেয়নি। তিতিবিরক্ত হয়ে ১২ ফেব্রুয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুগলির এক সভা থেকে দেবকে সামনে রেখে রাজ্যের উদ্যোগেই মাস্টার প্ল্যান কার্যকরী করার কথা বলেন। সেটাই এবার বাস্তবায়িত হতে চলেছে।-নিজস্ব চিত্র